পাঁচ মাস ধরে বেতন বন্ধ, বিপাকে ৫৫১ শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

পাঁচ মাস ধরে বেতন বন্ধ, বিপাকে ৫৫১ শিক্ষক

যশোর প্রতিনিধি |

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের ৫৫১ জন শিক্ষক ও সুপারভাইজার পাঁচ মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। বেতন–ভাতা না পেয়ে অনেক শিক্ষক বিদ্যালয়ে না যাওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এই ঝরে পড়া শিশুদের শিক্ষার মূলধারায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য ভেস্তে যাচ্ছে।

এদিকে পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে শিক্ষকেরা দ্বিতীয় দফায় যশোরের জেলা প্রশাসকের কাছে ২২ মে দুপুরে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

প্রথম দফায় ঈদের আগে বেতন–ভাতাবঞ্চিত শিক্ষকেরা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো যশোরের সহকারী পরিচালক (এডি) রজলুর রশীদ ও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের কাছে স্মারকলিপি দেন। তখন এডি বজলুর রশীদ তাঁদের আশ্বস্ত করেছিলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর প্রধান কার্যালয় থেকে এই প্রকল্পে কোনো টাকা ছাড় করা হয়নি। ঈদের আগে তাঁদের বেতন-ভাতা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু ঈদের পর আরও এক মাস হতে চলেছে। অথচ তাঁদের বেতন–ভাতা দেওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অনেকটা উদাসীন। 

জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া প্রকল্পের যশোর সদর উপজেলার ১৫ জন শিক্ষক স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া ৮–১৪ বছর বয়সী শিশুদের শিক্ষামুখী করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মাধ্যমে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৪) আওতায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন প্রোগ্রাম চালু করা হয়। প্রকল্পের অধীনে যশোরের আটটি উপজেলা ও পৌর এলাকায় ৫৯৬টি বিদ্যালয় চালু করা হয়। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ ডিসেম্বর থেকে প্রকল্প শুরু হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা দিশা সমাজকল্যাণ সংস্থা কর্তৃক ৫৫১ জন শিক্ষক ও ৪২ জন সুপারভাইজার নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী গত পাঁচ মাসে তাঁদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়নি। এর আগে তাঁদের দিয়ে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর থেকে দুই বছরব্যাপী বিভিন্ন পাড়া–মহল্লায় গিয়ে শিশু জরিপের কাজ করানো হয়েছে। জরিপকাজের সম্মানী ভাতাও তাঁদের দেওয়া হয়নি।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্পের বিদ্যালয়ে আসা ঝরে পড়া শিশুদের প্রতি মাসে ১২০–৩০০ টাকা পর্যন্ত বৃত্তির টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সেই বৃত্তির টাকাও শিশুদের দেওয়া হয়নি। এতে শিশুদের মধ্যে বিদ্যালয়ে আসায় অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। যে ঘর ভাড়া নিয়ে শিখনকেন্দ্র পরিচালনা করা হচ্ছে, সেই ঘরের ভাড়া পর্যন্ত পরিশোধ করতে হচ্ছে শিক্ষকদের নিজেদের টাকা থেকে। এ অবস্থায় তাঁরা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘শিক্ষকদের একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। সেটা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) কাছে পাঠানো হবে।’

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো, যশোর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক বিদ্যালয়ে একজন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পৌর এলাকার স্কুলশিক্ষকের বেতন ১০ হাজার ও উপজেলার অন্যান্য স্কুলের শিক্ষকদের বেতন ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা আছে। প্রকল্পের কাজ তদারকের জন্য ৪২ জন সুপারভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। পৌর এলাকার সুপারভাইজারদের বেতন ২০ হাজার ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বেতন ১৫ হাজার টাকা।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো যশোরের সহকারী পরিচালক বজলুর রশীদ বলেন, ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. আতাউর রহমান ২১ মে যশোরে এসে প্রকল্পের শিক্ষক–সুপারভাইজারদের ১২ দিনব্যাপী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করে গেছেন। তখন শিক্ষকদের বকেয়া বেতন–ভাতার বিষয়ে তিনি বলেন, “তাড়াতাড়িই আপনারা বেতন-ভাতা পাবেন।” কবে নাগাদ শিক্ষকেরা তাঁদের বেতন ভাতা পাবেন, তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।’

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান দিশা সমাজকল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাহিমা সুলতানা বলেন, শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের বেতন–ভাতার টাকা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো থেকে পাওয়া যায়নি। যে কারণে আমরা তাঁদের বেতন–ভাতা পরিশোধ করতে পারছি না। টাকা বরাদ্দ ছাড়া প্রকল্প চলমান রয়েছে কীভাবে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রকল্প চালিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত ব্যয়ের টাকা পাওয়া গেছে। ওই টাকা দিয়ে আটটি উপজেলার অফিস ও কর্মকর্তাদের বেতন দেওয়া হয়েছে।’

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048930644989014