পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি বাতিলে ১২২ নাগরিকের নিন্দা | বিবিধ নিউজ

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি বাতিলে ১২২ নাগরিকের নিন্দা

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি বাতিলের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১২২ জন নাগরিক। সোমবার এক বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো প্রকার ‘সমন্বয়হীন’ ‘অদূরদর্শীতার ফলস্বরূপ’ পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের লক্ষ্যে গঠিত সমন্বয় কমিটিকে বাতি

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি বাতিলের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১২২ জন নাগরিক।

সোমবার এক বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো প্রকার ‘সমন্বয়হীন’ ‘অদূরদর্শীতার ফলস্বরূপ’ পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের লক্ষ্যে গঠিত সমন্বয় কমিটিকে বাতিল ঘোষণা করে। 

পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি বাতিলে ১২২ নাগরিকের নিন্দা

এর আগে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের লক্ষে সরকার গঠিত সমন্বয় কমিটির সদস্য এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের অংশীজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনের বিরুদ্ধে ‘ইসলাম-বিদ্বেষের’ সম্পূর্ণ অভিযোগ তোলেন ধর্মীয় দাতব্য প্রতিষ্ঠান আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শায়খ আহমাদুল্লাহ এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মামুনুল হক।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেন, গণঅভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে ধর্মের নামে একটি বিশেষ গোষ্ঠী আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জায়গা দখল করছে। ধর্মের একপক্ষীয় ও অভিসন্ধিমূলক ব্যাখ্যার মধ্য দিয়ে সমাজের বহুত্ববাদী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ঘৃণা, অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা ও গণতান্ত্রিক আবহকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। 

ভিন্নচিন্তা-মত, ভাষা-ধর্ম-জাতি, লিঙ্গগত পরিচয় এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় ও ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে জন-উষ্মা উসকে দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা নস্যাতের পাঁয়তারা চালাচ্ছে এবং মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছে। পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষকে ধর্মের নামে অপমান করছে যা একইসাথে ধর্মের পবিত্রতা ও সম্মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, যেভাবে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের ভিত্তিতে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগঠিত গণ-উষ্মাকে আমলে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার পাঠ্যপুস্তক সংশোধনে গঠিত সমন্বয় কমিটি বাতিল ঘোষণা করেছে, তার মধ্য দিয়ে সরকার মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সরকারের এই নতজানু নীতি গণআন্দোলনের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি।

সরকারের সমালোচনা করে ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “কমিটি প্রণয়ণের সরকারি প্রজ্ঞাপন থাকার পরেও বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টা এই কমিটি বাতিলের ব্যখ্যা দিতে গিয়ে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ কথাটিকে উল্লেখ করছে। এই ধরনের আচরণের মধ্য দিয়ে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের মূল সমস্যাকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতাই পরিলক্ষিত হয়।

সমাজের সকল ভিন্ন পথ-মত ও চিন্তার অধিকার, চর্চার অধিকারকে সমুন্নত রাখার দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে, সেই প্রত্যাশার কথাও বিবৃতিতে বলা হয়।

বিবৃতিদাতারা হলেন- আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, আবু সাঈদ খান, মাহা মির্জা, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, কামার আহমাদ সাইমন, জোবাইদা নাসরীন, সুমন রহমান, ওমর তারেক চৌধুরী, মোশাহিদা সুলতানা, শাহমান মৈশান, কাজী মারুফ, নাসরিন খন্দকার, ইলিরা দেওয়ান, মানজুর আল মতিন, তানিয়াহ্ মাহমুদা তিন্নী, সাদিয়া আফরিন, জাকির তালুকদার, শর্মী হোসেন, বর্ণালী সাহা, বীথি ঘোষ, বাকী বিল্লাহ, অমল আকাশ, সীমা দত্ত, জামসেদ আনোয়ার তপন, রহমান মুফিজ, ফেরদৌস আরা রুমী, রাফসান আহমেদ, হারুন-উর-রশীদ, আফজালুল বাসার।

আরিফ রহমান, মোহাম্মদ আলী হায়দার, এম এইচ চৌধুরী লেলিন, সৈকত আমীন, সালমান সিদ্দিকী, নাশাদ ময়ুখ, মাসুদ রানা, মফিজুর রহমান লালটু, মারজিয়া প্রভা, পূরবী তালুকদার, জেসমীন দিনা রায়, সারা আহমেদ, মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, মানস নন্দী, শাহীনূর আক্তার, মাহির আহনাফ হোসেনও আছেন বিবৃতিদাতাদের মধ্যে।

মোশফেক আরা শিমুল, মিতা নাহার, অনিক রায়, মাহতাব উদ্দীন আহমেদ, কামরুজ্জামান রিপন, ইমেল হক, ইসহাক সরকার, লাবণী মণ্ডল, মাসুদ রেজা, সেতু আরিফ, সুস্মিতা রায়, রাশেদ শাহরিয়ার, আমিরুন নূজহাত মনীষা, দিলীপ রায়, কৌশিক আহমেদ, সিমু নাসের, সাদিক আলম, মঈন জালাল চৌধুরী বিবৃতিতে সই করেছেন।

বাধন অধিকারী, হামিম কামাল, পারভেজ মাহমুদ, আফজাল হোসেন, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, মীর সাখাওয়াত, সাদরুল হাসান রিপন, মজিবুল হক আরজু, রজত হুদা, এহসান মাহমুদ, মৃদুল মাহবুব, কাজী আবদুর রহমান, শামীম আরা নীপা, শবনম হাফিজ, আয়েন উদ্দীন, শাহেরীন আরাফাত, রাগীব নাঈম, হেমন্ত হিম, জাফর হোসেন, তাওফিকা প্রিয়া, তানভীর তিয়াস, ইকবাল খান, রাফিকুজ্জামান ফরিদও আছেন ১২২ জন নাগরিকের মধ্যে।

বিবৃতিতে লাবনী আশরাফী, হুমায়ুন আজম রেওয়াজ, সৈয়দ আবুল কালাম, সৈয়দা পারভীন আক্তার, শামীম ইমাম, অরুণাভ আশরাফ, জাকিয়া শিশির, বিপ্লব ভট্টাচার্য্য, আরিফ নুর, সজীব তানভীর, মারুফ হাসান ভূঞা, আফরিন শরীফ বিথী, রবিউল করিম ভূঁইয়া, সৈয়দ ফরহাদ, দীপ্তি দত্ত, অভিন্যু কিবরিয়া ইসলামও সই করেছেন।

এছাড়া মাসুদ খান, নিঘাত রৌদ্র, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, শ্যামলী শীল, নওশাদ এহ্সানুল হক, আব্দুল্লাহ কাফী রতন, তাসলিমা মিজি, আসমা বেগম, তাহমিনা ইয়াসমিন, কল্লোল মোস্তফা, আহমাদ মোস্তফা কামাল, কামাল হোসেন বাদল, অনুপম সৈকত শান্ত, দীপক সুমন, ফারহানা শারমীন ইমু, ফাহমিদুল হক, মুতাসিম আলী, বখতিয়ার আহমেদ, রেজওয়ান ইসলাম রয়েছে বিবৃতিদাতাদের মধ্যে।