পুকুরে ডুবতে বসেছে স্কুল - দৈনিকশিক্ষা

পুকুরে ডুবতে বসেছে স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদক |

স্কুলের পাশেই জমিদাতা পরিবারের সদস্যরা থাকেন। বাড়ির পাশের একটি ছোট্ট পুকুর ভাঙতে ভাঙতে গ্রাস করতে বসেছে স্কুলের দুটি ভবন। দেবে গেছে স্কুলের মেঝে; সরে গেছে নিচের মাটি। যেন পুকুরেই ডুবতে বসেছে স্কুলটি। ওই অবস্থায় আতঙ্কের মধ্যে চলছে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম। ময়মনসিংহের নান্দাইলের রাজগাতী ইউনিয়নের দক্ষিণ কয়রাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ অবস্থা। 

১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে ওই গ্রামের আবদুর রহমান মুন্সি ৫০ শতক জমি দান করেন বিদ্যালয়ের জন্য। তার দান করা বাড়ির পাশের সে জমিতেই নির্মিত হয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি এখন সরকারি। বহুদিন আগেই মারা গেছেন জমিদাতা আবদুর রহমান মুন্সি। তবে স্কুলের পাশেই বসবাস করেন জমিদাতার নাতিরা। বাড়ির পাশের ছোট্ট একটি পুকুর ছিল জমিদাতার। পুকুরটির পাড় সংস্কার না করায় ধীরে ধীরে ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙতে থাকে চারপাশের মাটি। ভাঙতে শুরু করে স্কুলের জমিও। বিদ্যালয়টির ৫০ শতক জমির মধ্যে প্রায় ২১ শতক গ্রাস করেছে ওই পুকুর।

জমিদাতা পরিবারের সদস্যরা খুব 'গরিব' হওয়ায় পুকুরটিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না। তাই ভাঙনের মাত্রা বেড়ে বিদ্যালয়টির দুটি ভবন ছুঁয়েছে। দুটি ভবনের নিচের মাটি সরে গেছে। পুকুরের পানিতে ভবনের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় দেবে গেছে ভেতরের মেঝেও। বিদ্যালয়ের মূল ভবনের পশ্চিম অংশের এক-তৃতীয়াংশ পানির ওপর দণ্ডায়মান। ফলে যে কোনো সময় ভবন ধসে যেতে পারে এমন শঙ্কা শিক্ষকদের

দক্ষিণ কয়রাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে একটি পুরনো ভবন থাকলেও শিক্ষার্থীদের সংকুলান না হওয়ায় ২০০৯-১০ অর্থবছরে নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। পুরনো ও নতুন দুটি ভবনই এখন ঝুঁকির মুখে। এ ছাড়া বিদ্যালয়টির আরও কিছু সমস্যা রয়েছে। বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে মুশুলী-তাড়াইল সড়কে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় এবং খেলাধুলার জায়গা কমে যাওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় চলে যায়।

এতে শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনার কবলে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে নেই কোনো টিউবঅয়েল। সম্প্রতি একটি পাম্প স্থাপন করা হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সেটিও চালু করা যাচ্ছে না। ফলে আশপাশের বাড়িতে যেতে হয় পানির জন্য। 

কয়েক শিক্ষার্থী জানায়, তাদের বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ খুবই ছোট হয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের জমি পুকুরে ভেঙে যাচ্ছে। শ্রেণিকক্ষের ভেতরটাও দেবে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতির উত্তরণ চায় তারা।

জমিদাতার নাতি দিনমজুর ইদ্রিস মিয়া  বলেন, তার দাদা বিদ্যালয়টির জমি দান করে গেছেন। তাদের সামর্থ্য নেই পুকুরের পাড়টি ঠিক করার। সে কারণেই দীর্ঘদিন ধরে পুকুরের পাড় ভাঙতে ভাঙতে বিদ্যালয় ভবন পর্যন্ত চলে গেছে। সরকার উদ্যোগ নিয়ে এটি ভরাট করে দিলে স্কুলটি রক্ষা করা যাবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবিএম আনোয়ারুল হক বলেন, তিনি সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে যোগদানের পরই সমস্যাটি চোখে পড়ে। জমিদাতা পরিবারের একটি পুকুর ভাঙতে ভাঙতে বিদ্যালয়ের প্রায় ২১ শতক জমি বিলীন হয়েছে। দুটি ভবনের নিচের মাটি সরে গেছে। দেবে গেছে ভেতরের মেঝেও। এ অবস্থায় তারা সর্বদা শঙ্কায় রয়েছেন। এ ছাড়া পুকুরটি বড় হতে থাকায় শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তিনি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

নান্দাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিক বলেন, বিদ্যালয়টির দুরবস্থার বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দ্রুত বিদ্যালয়ের ভবনগুলো রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035719871520996