পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় প্রতারণার দায়ে ভারতের এক শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ১৭ বছর বয়সী রুবি রায় নামের ওই শিক্ষার্থী দ্বাদশ শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষায় বিহার রাজ্যের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ‘প্রথম’ হন। পরে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবি বলে, তার মূল বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান। আর রাষ্ট্রবিজ্ঞান হলো রান্নার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়।
রুবির ওই সাক্ষাৎকারের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়লে তাকে পুনরায় পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল। এতে ব্যর্থ হওয়ায় তার আগের ফলাফল বাতিল করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত রোববার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে ৮ জুলাই পর্যন্ত কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে রুবি তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, ‘আমি দ্বিতীয় বিভাগে পাস করতে চেয়েছিলাম। প্রথম হব কখনো ভাবিনি।’
তার কারাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সে প্রাপ্তবয়স্ক নয় বলে তাকে কারাগারে না পাঠিয়ে শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো উচিত—এমন দাবিও করেছেন কেউ কেউ।
পুলিশের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট মনু মহারাজকে উদ্ধৃত করে ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য হিন্দু জানিয়েছে, রুবি রায়কেই প্রমাণ করতে হবে যে সে নাবালক। কিন্তু কীভাবে সেটি তিনি উল্লেখ করেননি। একজন প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষার্থীদের শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে কর্তৃপক্ষের উচিত পুরো সিস্টেমকেই দায়ী করা।
এদিকে, পানির রাসায়নিক সংকেত দেখে তা বলতে না পারায় বিজ্ঞান বিভাগে শীর্ষস্থান অধিকার করা সৌরভ শ্রেষ্ঠাসহ আরও কয়েকজনের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পুলিশের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে এ ঘটনায় আরও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যাঁরা রুবি রায়ের পুনঃপরীক্ষায় পরীক্ষক হিসেবে ছিলেন, তাঁরা তার পড়ালেখার মান দেখে রীতিমতো মর্মাহত হয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। ভারতীয় কবি তুলসী দাস সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ লিখতে বলা হলে রুবি শুধু লেখে, ‘তুলসী দাসজি প্রণাম।
গত বছর বিহার রাজ্যের পরীক্ষা কেন্দ্রে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা দেয়াল টপকে পরীক্ষার হলে নকল সরবরাহ করছেন—এই ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছাপা হয়। বিব্রত রাজ্য সরকার এমন প্রতারণা দমন করার উদ্দেশ্যে জরিমানা ও কারাদণ্ডের মতো শক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। গত মাসে ঘোষণা করা ফলাফলে পাসের হার লক্ষণীয়ভাবে কম দেখা গেছে