৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী - দৈনিকশিক্ষা

৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আদালতের সিদ্ধান্তে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের আদেশ অগ্রাহ্য করে ভিন্নতর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, এটা করা হলে তা আদালত অবমাননার শামিল হবে।

বুধবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে চাকুরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কার্যক্রম বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে যারা উদ্বিগ্ন, তাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এ সরকার যেহেতু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় হস্তক্ষেপ করা হবে না এবং মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে করি না।
 
হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশনের (নং-২৩৫/২০১২) রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা সিভিল পিটিশনের আদেশে আপিল বিভাগের আদেশ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা কোটা থেকে পূরণ করার সুযোগ থাকলেও ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
 
‘তাই এ আদেশ অগ্রাহ্য করে বা পাস কাটিয়ে বা উপেক্ষা করে ভিন্নতর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা করা হলে তা আদালত অবমাননার শামিল হবে বলে আমি মনে করি। সরকার এ ব্যাপারে সচেতনতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমরা আশা করি।’
 
এ বিষয়ে আদালতের রায়ের কপি সকালে কোটা সংষ্কারে গঠিত সরকারের কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। 
 
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে, আদালতের নির্দেশ যতক্ষণ পরিবর্তন না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ব্যত্যয় ঘটার কোনো সুযোগ নেই।
 
মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংষ্কারের বাধা আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে আদালতে ভ্যাকেট করাতে হবে। সরকারের আপিল বিভাগে আবার রিভিউ পিটিশন করে যদি আদালত ভিন্নতর কোনো নির্দেশ দেন তাহলে শুধু পারবেন। বিদ্যমান এই আদেশ বহাল থাকা পর্যন্ত কোনো সুযোগ নেই। …এই সরকার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাই সরকারের কোনো সুযোগ নেই। তবে সরকার চাইলে আইনের বাইরে অন্যান্য কোটা যেমন জেলা কোটা, মহিলা কোটা, প্রতিবন্ধী কোটায় সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
 
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা এবং সরকারের উদ্যোগের পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে অবস্থান জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। 
 
তিনি বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, প্রতিনিয়তই মুক্তিযোদ্ধা-তাদের সন্তানদের টেলিফোন পাচ্ছি যে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা কী বা তাদের কোটা; মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। সেজন্য তাদের প্রশ্নের এক এক করে জবাব দিয়ে যাচ্ছি, এখন যেহেতু কমিটি গঠন হয়েছে, কমিটির কাছে আমার বক্তব্য উনাদের দৃষ্টি গোচর করার জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি।
 
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা দীর্ঘ দিনের। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ৫ নভেম্বর এক নির্বাহী আদেশে সরকারি, আধাসরকারি, প্রতিরক্ষা এবং জাতীয়করণকরা প্রতিষ্ঠানে জেলা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়।
 
পরে বিভিন্ন সময়ে এ কোটা পদ্ধতির সংস্কার, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করেছে সরকার।
 
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি ৩০ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, পশ্চাদপদ জেলাগুলোর জন্য কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ৫ শতাংশ কোটা পদ্ধতি সংরক্ষিত চালু আছে। সব মিলিয়ে শতকরা ৫৬ ভাগ কোটা পদ্ধতি রয়েছে।
 
সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা/বাতিল অথবা সংস্কারের লক্ষ্যে গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। গত ৮ জুলাই প্রথম বৈঠকে বসে দেশে-বিদেশে কোটার তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
 

কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048248767852783