প্রতিদিন লাখ টাকায় নকলে সহযোগিতা! - দৈনিকশিক্ষা

প্রতিদিন লাখ টাকায় নকলে সহযোগিতা!

গাজীপুর প্রতিনিধি |

গাজীপুরের কালীগঞ্জের একটি দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলে সহযোগিতার মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর  অবাধে নকল করার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন হারে প্রতিদিন নেয়া হচ্ছে লক্ষাধিক টাকা।  রোববার দুপুরে পরীক্ষার্থী এবং ওই কেন্দ্রের আশপাশের গ্রামের লোকজন সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, উপজেলার ২৯টি মাদরাসার ৬৫৯ জন দাখিল পরীক্ষার্থী দুর্বাটি এম ইউ কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। আর ওই কেন্দ্রের অনিয়মের চিত্রের কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ এলাকার নানা বয়সী মানুষের মোবাইলে ভাইরাল হয়ে গেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, প্রতিদিন লাখ টাকার বিনিময়ে নকলযুক্ত পরিবেশে দাখিল পরীক্ষার উপজেলার একমাত্র কেন্দ্র দুবার্টি এম ইউ কামিল মাদরাসায় চলছে দাখিল পরীক্ষা। এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুবার্টি এম ইউ কামিল মাদরাসার লাইবেরিয়ান ও কেন্দ্র পার্শ্ববর্তী দুবার্টি দারুচ্ছুন্নাৎ এতিমখানার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. নজরুল ইসলাম এবং ওই কেন্দ্রের হল সুপার ও উপজেলার মূলগাঁও দাখিল মাদরাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. রফিকুল ইসলাম। তাদের সঙ্গে রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন মাদরাসা থেকে কেন্দ্রে পরীক্ষক হিসেবে আসা শিক্ষকদের একটি চক্র।

তবে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন হারে টাকা আদায় করেন জাঙ্গালীয়া সিদ্দিক মিয়া ফাজিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. জাকির হোসেন। আর হল থেকে প্রশ্নপত্র মোবাইলে ছবি তুলে কেন্দ্র পার্শ্ববর্তী দুবার্টি দারুচ্ছুন্নাৎ এতিমখানার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কক্ষে বসে উত্তরপত্র তৈরির কাজ করেন যথাক্রমে মূলগাঁও দাখিল মাদরাসার মো. বেলায়েত হোসেন, ফুলদী মাদরাসার মো. বিল্লাল হোসেন, চুপাইর মাদরাসার মো. সালাউদ্দিন, সোলাইমান হোসেন, আইয়ুবুর রহমান, কামরুন নাহার, সারোয়ার হোসেন, জামালপুর মাদরাসার আব্দুল করিম, আরিফ হোসেন, বাঘুন মাদরাসার আতাউর রহমান, সাইলদিয়া মাদরাসার ছিদ্দিকুর রহমান, সাওরাইদ মাদরাসার হারুন-অর-রশিদ, জাঙ্গালীয়া সিদ্দিক মিয়া ফাজিল মাদরাসার মো. আব্দুল জলিল, দুবার্টি এম ইউ কামিল মাদরাসার মো. ইসমাইল হোসেন, ছাতিয়ানী মাদরাসার নূর মোহাম্মদ। এরা সবাই ওই সব মাদরাসার সুপার, সহকারী শিক্ষক ও দুবার্টি এম ইউ আলীয়া (কামিল) মাদরাসা কেন্দ্রের পরীক্ষক।

সূত্র আরো জানান, বিষয়টি কেন্দ্রের আশপাশের গ্রামের জনসাধারণের মধ্যে জানাজানি হলে ওই চক্রের মো. সালাউদ্দিন নিজেকে সরকার দলীয় ও মো. আব্দুল জলিল নিজেকে পুলিশের সোর্স পরিচয়ে সব কিছু সামাল দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন চক্রের অন্য সদস্যদের।

ভিডিও ফুটেছে দেখা গেছে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আরবি ২য় পত্র পরীক্ষা চলাকালে বেলা ১১টার দিকে ওই চক্রের কয়েকজন শিক্ষক দুবার্টি দারুচ্ছুন্নাৎ সুন্নাত এতিমখানার বিভিন্ন কক্ষে বসে মোবাইল থেকে প্রশ্ন দেখে শিক্ষার্থীদের জন্য উত্তরপত্র তৈরি করছেন। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ওই এতিমখানায় হানা দিলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ভাঙ্গা জানালা দিয়ে ওই চক্রের সালাউদ্দিন এবং জাকির পালিয়ে যাওয়ার পথে আহত হন। পরে তারা স্থানীয়দের কাছে সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করে মুক্তি পান।

রোববার দুপুরে ওই ভিডিও ফুটেজের সূত্র ধরে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান দুবার্টি দারুচ্ছুন্নাৎ এতিমখানায় অভিযান চালান। ওই সময় কাউকে না পেলেও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে ওই এতিমখানার কক্ষগুলো সনাক্ত করেন। পরে তিনি তাৎক্ষনিকভাবে ওই কেন্দ্রের হল সুপার মো. রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং এতিমখানার  সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. নজরুল ইসলামকে বহিষ্কারের ব্যাপারে পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে সুপারিশ করেন। এছাড়া ওই কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাত ভিডিও ফুটেজের সকল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

দুবার্টি দারুচ্ছুন্নাৎ এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওই এতিমখানায় বহিরাগত কেউ প্রবেশের অনুমতি নেই। কিন্তু তারপরও পরীক্ষা চলাকালীন সময় কেন এতগুলো শিক্ষক প্রবেশ করলো এ ব্যাপারে এতিমখানার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাত জানান, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেয়েছি। সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003040075302124