প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পিএফের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ভবিষ্য তহবিলের (প্রভিডেন্ট ফান্ড-পিএফ) টাকা জমা দেওয়া হবে ব্যাংকে। এমন তালিকায় প্রতি মাসেই সই নেওয়া হতো শিক্ষক ও কর্মচারীদের। তবে ওই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি।

ব্যাংকে জমা দেওয়ার নামে নিয়ে শিক্ষকদের পিএফের ১৫ লাখের বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর তুরাগের বাউনিয়া আবদুল জলিল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদের বিরুদ্ধে।

শুধু পিএফের টাকা নয়, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের প্রায় ৫০ লাখ টাকাও পরিশোধ করা হয়নি। ওই সময় করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ঠিকই বেতনের টাকা নিয়মিত আদায় করা হয়েছে। বেতন না দিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের নামে এই টাকাও প্রধান শিক্ষক আত্মসাতের পাঁয়তারা করছেন বলে শিক্ষকদের অভিযোগ। এ ঘটনায় এক শিক্ষক মামলা করেছেন।

বাউনিয়া আবদুল জলিল উচ্চবিদ্যালয়টি ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ২৯ শিক্ষক ও ১০ কর্মচারী রয়েছেন। প্লে থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়টিতে আট শতাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে অবসরে যান বিদ্যালয়ের ধর্ম শিক্ষক মাওলানা আমিনুর রহমান। এরপর পিএফের টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন, ওই বাবদ টাকা জমা হয়নি। বিষয়টি তিনি বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক আবদুর রহমানকে জানান। পরে অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীরাও বিষয়টি জানতে পেরে ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের বিবরণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট) তুলে যাচাই করেন।

শিক্ষক তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘ব্যাংক গিয়ে জানতে পারি, আমার পিএফের ৫৪ মাসের ৫৯ হাজার ৪০০ টাকা বকেয়া। অথচ প্রতি মাসেই বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।’

শিক্ষকদের দেওয়া ব্যাংক লেনদেনের বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৪ সালে এক মাসের পিএফের টাকা জমা হয়নি। পরের বছর জমা হয়নি ৭ মাসের টাকা। ২০১৭ সালে জমা হয়নি ১১ মাসের টাকা। ২০১৮ সালে ২ মাস, ২০১৯ সালে ৫ মাস ও ২০২০ সালে ১১ মাসের টাকা জমা হয়নি। ২০২১ সালের এক মাসেরও টাকা জমা হয়নি। চলতি বছরের মে পর্যন্ত ৫ মাসের টাকা ব্যাংকে জমা পড়েনি। 

পিএফের টাকা জমা দেওয়ার তালিকায় প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদের নাম নেই। প্রতিষ্ঠান থেকে ২৬ হাজার ৫০০ টাকা পান। এর পুরোটাই প্রতি মাসে তুলে নেন। ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি।

একাধিক শিক্ষক জানান, ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের ১২ থেকে ২০ মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। ৩৯ শিক্ষক ও কর্মচারীর বকেয়া বেতনের পরিমাণ প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

শিক্ষকদের দাবি, স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রতি মাসের বেতন আদায় বন্ধ ছিল না। উন্নয়নকাজের অজুহাত দিয়ে অর্থ আত্মসাতের পাঁয়তারা করছেন।

বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষক জিয়াসমিন ফারজানা ১২ মাসের বেতন পাননি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেতন সীমিত। এর মধ্যে বেতন দিচ্ছে না। অনেক কষ্ট হচ্ছে।’

তবে প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদ দাবি করেন, আর্থিক সংকটের কারণেই পিএফের টাকা জমা দেওয়া হয়নি। এখন পরিশোধের চেষ্টা চলছে। করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটের কারণে বেতন দেওয়া যায়নি।

শান্তি ও নিরাপত্তায় বাংলাদেশ একটি নির্ভরযোগ্য নাম : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha শান্তি ও নিরাপত্তায় বাংলাদেশ একটি নির্ভরযোগ্য নাম : প্রধানমন্ত্রী ঢাবির বাংলা বিভাগের পরীক্ষায় কান-মুখ খোলা রাখতে হবে - dainik shiksha ঢাবির বাংলা বিভাগের পরীক্ষায় কান-মুখ খোলা রাখতে হবে বারবার রক্ষা পাচ্ছে সামসুল হক খান স্কুল - dainik shiksha বারবার রক্ষা পাচ্ছে সামসুল হক খান স্কুল চাকরি হারাচ্ছেন পিরোজপুরের ১৪ শিক্ষক, ৯৭ লাখ টাকা ফেরতের নির্দেশ - dainik shiksha চাকরি হারাচ্ছেন পিরোজপুরের ১৪ শিক্ষক, ৯৭ লাখ টাকা ফেরতের নির্দেশ ‘শিক্ষকদের অবজ্ঞা করবেন না’ - dainik shiksha ‘শিক্ষকদের অবজ্ঞা করবেন না’ নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১ জুন - dainik shiksha নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১ জুন পরীক্ষামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন শুরু জুলাইয়ে - dainik shiksha পরীক্ষামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন শুরু জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037200450897217