প্রাইমারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেসরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে ইনস্টিটিউট করতে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই নীতিমালার আলোকে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) প্রাইমারি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন ও পরিচালনার নীতিমালা প্রণয়ন করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশে বেসরকারিভাবে তিনটি প্রাইমারি টিসার্চ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) স্থাপন করা হয়। তবে প্রশিক্ষণার্থী না পাওয়ায় পরবর্তী সময়ে দুটি পিটিআই বন্ধ হয়ে যায়।
জাতীয় সংসদের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির গতকাল অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে উপস্থাপিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, যে তিনটি পিটিআইয়ের অনুমোদন দেয়া হয় সেগুলো হলো— নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিরিশিরি বেসরকারি পিটিআই, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় হাজী কাশেম আলী বেসরকারি পিটিআই, কুষ্টিয়ার শিলাইদহের রবীন্দ্র ইনস্টিটিউট। বর্তমাসে হাজী কাশেম আলী বেসরকারি পিটিআইয়ে সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন (সিইনএড) কার্যক্রম চালু আছে। অন্য দুটি পিটিআই প্রশিক্ষণার্থী না পাওয়ায় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কবে থেকে পিটিআই দুটি বন্ধ রয়েছে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাওয়া হলেও তারাও কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি পিটিআইগুলোর কোর্স কারিকুলাম সরকারি পিটিআইগুলোর কোর্স কারিকুলামের অনুরূপ। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) আওতায় বেসরকারি পিটিআইয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী গঠিত পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক বেসরকারি পিটিআই পরিচালিত হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বণিক বার্তাকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে সরকারিভাবে ৬৭টি পিটিআই রয়েছে। শিক্ষক প্রশিক্ষণে তা যথেষ্ট বলে মনে হয়। সেই হিসেবে বেসরকারিভাবে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রশিক্ষণার্থী পাবে না সেটি তো স্বাভাবিক। আর প্রশিক্ষণার্থী না থাকলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক মো. শাহ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বেসরকারি পিটিআই স্থাপন, কারিকুলাম ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে যেসব পিটিআইয়ের কার্যক্রম প্রশিক্ষণার্থী না থাকায় বন্ধ হয়ে আছে তা চালুর সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে বেসরকারি পিটিআইতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ সহজীকরণের জন্যও কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে। বৈঠকে কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, আলী আজম, বেগম শিরীন আখতার, বেগম ফেরদৌসী ইসলাম ও কাজী মনিরুল ইসলাম।