ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ না হলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। কারণ শিক্ষার্থীরা তখন পড়াশোনায় মন দেবে না। তারা জানবে, পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন পেয়ে যাবে। যোগ্যতা ছাড়াই, পড়াশোনা ছাড়াই ভালো রেজাল্ট করবে। ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। চলমান এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দফায় দফায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ পাওয়ার পর এই প্রসঙ্গে গতকাল (২২শে ফেব্রুয়ারি) তিনি এসব কথা বলেন।
কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রভাব ভবিষ্যৎ নাগরিকদের ওপর প্রকট। তবে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করতে সরকারের সদিচ্ছার কোনো অভাব আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ প্রশ্ন ফাঁস হলে এর দায় সরকারের ওপর পড়ে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হবে, প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে সেখানে ঘাটতি রয়ে গেছে। কী কী কারণে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে সেটি খুঁজে বের করতে হবে। কোথা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে সেটি তদন্ত করে খুঁজে বের করতে হবে। এর প্রতিকারে ব্যবস্থা নিতে হবে। জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যদি অপরাধীদের খুঁজে বের করা না হয় তবে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হবে না। ’
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে বর্তমানে যে হারে ছাত্র-ছাত্রীরা জিপিএ-৫ পাচ্ছে, তারা সবাই যোগ্যতা অর্জন করে পাচ্ছে না। এমন ফলের সঙ্গে কিছুটা হলেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্পর্ক রয়েছে। ’ তিনি বলেন, বিজি প্রেস থেকে এখন প্রশ্ন ছাপা হয়ে সারা দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যদি এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ, প্রযুক্তিবিদদের মতামত নিয়ে ডিজিটাল ব্যবস্থায় প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা যায়, তবে এর সুফল পাওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে তার বক্তব্য, একটি গোপন কোড থাকবে। এ কোডটি প্রতিটি কেন্দ্রে পরীক্ষার আগে জানিয়ে দেওয়া হবে। পরে কোডটি দিয়ে অনলাইন থেকে সুনির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র ডাউনলোড দিয়ে চাহিদামাফিক প্রশ্নপত্র ফটোকপি করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হওয়াসহ খরচও কমে আসবে বলে মত দেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষাব্যবস্থায়ও গলদ রয়েছে। এগুলো তদন্ত করে বের করে শোধরাতে হবে। ’