জাল শিক্ষক তালিকা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে শিক্ষা পরিমণ্ডলে। সম্প্রতি দৈনিক আমাদের বার্তায় তালিকা এই প্রকাশ শুরুর পর আরও বিস্তৃত তালিকা প্রকাশের দাবি উঠেছে বিভিন্ন স্তরের সৎ শিক্ষকসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সব মহলে। দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকম অফিসে ফোন করে অনেকেই বলছেন, প্রাথমিকে জাল সনদধারী শিক্ষকদের তালিকাও যেনো প্রকাশ করা হয়। কেউ কেউ ইমেইলে এবং ডাকযোগেও জাল সনদধারী শিক্ষকদের তথ্য পাঠাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত ছয়টি পর্বে মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাল সনদ নিয়ে কর্মরত পাঁচ শতাধিক জাল শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করেছে আমাদের বার্তা। আরও বেশ কটি পর্ব ধারাবাহিক প্রকাশের অপেক্ষায়। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান, এমনকি শিক্ষক সংগঠনগুলোও চাইছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে জাল সনদ নিয়ে কর্মরতদের তালিকাও যেনো প্রকাশ করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষক নিবন্ধন, স্নাতক, কম্পিউটার সনদ ইত্যাদি জাল করার প্রবণতা থাকলেও প্রাইমারি স্কুলগুলোতে মূলত জাল করা হয়েছে একাডেমিক সনদ। যার সিংহভাগই ঘটেছে দেশের কমিউনিটি স্কুল ও রেজিস্টার্ড স্কুলগুলো স্থাপন, এমপিওভুক্তি ও সরকারিকরণের সময়ে। সে সময়ে ২৬ হাজারের বেশি স্কুলকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রাতরাতি নিয়োগ দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠাতাদের আত্মীয়-স্বজনকে।
এভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের অনেকেরই প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিলো না। তাই এমপিওভুক্তি এবং সরকারিকরণের পর তাদের প্রয়োজনীয় ডিগ্রি অর্জন করে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, সরকারিকরণের সুযোগ নিয়ে অনেকেই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ডিগ্রি অর্জন করলেও অনেকেই ডিগ্রি, অনার্স, উচ্চ মাধ্যমিক ইত্যাদি সনদ জাল করে জমা দেন। সরকারিকৃত অনেক শিক্ষক তাদের নিজের নামই ঠিকমতো লিখতে পারেন না। ছাত্র পড়ানোর সক্ষমতা না থাকায় এসব শিক্ষকের ছাত্ররাও প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো শিখতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যথাযথ অনুসন্ধান হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের চেয়ে প্রাথমিকে অনেক বেশি জাল শিক্ষকের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জাল শিক্ষকদের নেওয়া বেতন ভাতার টাকা ফেরত দেয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সুশীল জনদের দাবি, প্রাথমিকেও এভাবে জাল শিক্ষকদের তালিকা করে অবৈধভাবে নেওয়া বেতন-ভাতার টাকা ফেরত নেওয়া হোক। একই সঙ্গে জালিয়াতির দায়ে তাদের বিচার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।