সাতক্ষীরা উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ২৮ সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। শুক্রবার (২৪ মে) সকালে উপজেলার কলারোয়া থানার নিকটবর্তী সোনালী সুপার মার্কেটের “কিডস ক্লাব” নামের কোচিং সেন্টারে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। সাতক্ষীরা র্যাবের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মাহমুদুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতদের মধ্যে কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রার্থী রয়েছেন। আটককৃতরা হলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের হোতা কিডস ক্লাব কোচিং সেন্টারের পরিচালক এবং জনতা ব্যাংক সেনেরগাতি (পাটকেলঘাটা) শাখার ম্যানেজার আফতাব আহম্মেদ, সোনালী ব্যাংক কলারোয়া শাখার অফিসার সোহাগ হোসেন, কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম, রামকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিরুল ইসলাম, ঢাকা থেকে আগত চক্রের দুই সদস্য আব্দুল হালিম, তরিকুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রামকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ঈমামুল রহমানসহ জড়িত কয়েকজন পলাতক রয়েছেন।
সাতক্ষীরা র্যাব-৬–এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মাহমুদুর রহমান জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন, একটি প্রতারক চক্র প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র দেওয়ার নামে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। এর ভিত্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কলারোয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় র্যাব। কলারোয়া থানা থেকে ৫০-৬০ গজ দূরে সিঙ্গার ভবনের তিনতলায় ওই প্রতারক চক্রের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন তারা। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে ২৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন প্রশ্ন ও উত্তরপত্র দেওয়ার নামে টাকা আদায়কারী প্রতারক চক্রের সদস্য।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা জানান, প্রশ্নপত্র দেওয়ার নামে টাকা আদায়কারী প্রতারক চক্রের সন্ধান পান তারা। ভোরে কলারোয়া সিঙ্গার ভবনের অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, একজন ব্ল্যাকবোর্ডে প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিচ্ছেন। তবে ওই প্রশ্ন-উত্তরের সঙ্গে আজ অনুষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মিল রয়েছে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারক চক্র ১২ লাখ টাকা করে চুক্তি করেছে। পরীক্ষার আগে পাঁচ লাখ টাকা জমা দিতে হয়েছে। ফলাফলের পর বাকি সাত লাখ টাকা দেওয়ার কথা। আটক ২৮ জনের মধ্যে ১৮ জন শিক্ষার্থী, দুজন প্রতারক চক্রের সদস্য ও অন্যরা শিক্ষার্থীদের অভিভাবক বলে জানিয়েছে র্যাব। তাঁদের সাতক্ষীরা শহরের র্যাব ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছে।
আটক ২৮ জনের মধ্যে ১৮ জন পরীক্ষার্থী, দুজন প্রতারক চক্রের সদস্য ও অন্যরা পরীক্ষার্থীদের অভিভাবক বলে জানিয়েছে র্যাব। আটকৃতদের সাতক্ষীরা শহরের র্যাব ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছে।