প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছে আতঙ্ক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল - দৈনিকশিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছে আতঙ্ক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

তাঁর নাম নাজমুল হুদা। উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। বর্তমানে কর্মস্থল ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা। এই নাজমুল হুদা এখন এক আতঙ্কের নাম গফরগাঁও উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছে। সম্প্রতি দুটি অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে সেই তদন্তও তিনি দমিয়ে রেখেছেন বলে জানা গেছে। আর যাঁরা অভিযোগকারী তাঁদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। শনিবার (৪ মে) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন  নিয়ামুল কবীর সজল।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গফরগাঁও উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে পদায়ন বাণিজ্য, মৌখিক নির্দেশে ডেপুটেশন প্রদান, সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণে স্বজনপ্রীতি, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ভাতার টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ, অসুস্থ শিক্ষককে ছুটি না দেওয়া, চাকরি খাওয়ার ভয় দেখিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করানো, অফিসের তথ্য পাচার ইত্যাদি নানা অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। তবে সেই তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই। তিনি তদন্ত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তদন্ত থামিয়ে রেখেছেন বলে জানা গেছে।  

সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে নাজমুল হুদা ২০১৪ সালে গফরগাঁওয়ে যোগদান করেন। শুরু থেকেই তিনি বিতর্কের জন্ম দেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তিনি বিভিন্ন পত্রিকার শিরোনাম হন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত মার্চ মাসে উপজেলার চরমছলন্দ পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফকরুল ইসলাম লিখিত আবেদন করে চার দিন ছুটি কাটান। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হুদা প্রধান শিক্ষকের হাজিরা খাতায় ‘অনুপস্থিত’ লিখে স্বাক্ষর করেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কথা বলতে গেলে তাঁর সঙ্গে নাজমুল হুদা অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। গত ১৩ মার্চ প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। জানা যায়, পরবর্তী সময়ে চাপ দিয়ে এ অভিযোগ প্রত্যাহার করান নাজমুল হুদা।

উপজেলার বাগবাড়ী-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গুরুতর অসুস্থ সহকারী শিক্ষক আয়েশা সুলতানা চিকিৎসার জন্য লিখিত আবেদন করে পৃথকভাবে ১১ দিন ছুটি কাটান। কিন্তু নাজমুল হুদা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় আয়েশা সুলতানার নামের পাশে ছুটির দিনগুলোতে অনুপস্থিত লিখে রাখেন। পরে ওই শিক্ষক কারণ দর্শানোর নোটিশেরও শিকার হন। এ দুটি বিষয়েই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিদের্েশ এ দুটি বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।

জানা গেছে, গফরগাঁও উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ শংকর কুণ্ডু ২০১৬ সালে নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ‘অফিসের গোপন তথ্য পাচার ও অনুগত শিক্ষকদের অফিসে এনে পরিবেশ নষ্ট করা’র অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবর তাঁকে প্রশাসনিক বদলির জন্য চিঠি পাঠান। ওই সময়ে নাজমুল হুদাকে স্ট্যান্ড রিলিজ এবং ফুলপুর উপজেলায় শাস্তিমূলক বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ উপেক্ষা করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন এবং এ কারণে তাঁর ৯ দিনের বেতন কাটে কর্তৃপক্ষ। পরে তিনি নান্দাইল উপজেলায় যোগদান করে এক বছরের মাথায় পুনরায় গফরগাঁওয়ে বদলি হয়ে আসেন।

গত বছরের ২৮ জুন ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম অন্যত্র বদলি হলে নাজমুল হুদা জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ‘ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা’র পদ দখল করেন। প্রায় এক মাস তিনি পদটি অন্যায়ভাবে দখল করে রাখেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে দায়িত্ব অর্পণের জন্য চিঠি দিলেও তিনি প্রথমে তা উপেক্ষা করেন। শেষে দায়িত্ব অর্পণে বাধ্য হন।

বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুব উর রহমান বলেন, তিনি নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ওঠা দুটি অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত হলে সেটি প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেবেন।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুটি অভিযোগেরই তদন্তকারী কর্মকর্তা রহস্যময় নীরবতা পালন করছেন। একটি অভিযোগের তদন্ত করছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা  জহিরুল ইসলাম আকন্দ। আরেকটি তদন্ত করছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন। উভয়

কর্মকর্তাই জানিয়েছেন, তাঁরা তদন্ত শুরু করেননি। কবে রিপোর্ট দেবেন তা-ও তাঁরা বলতে পারেননি। কানাঘুষা শোনা যাচ্ছে, নাজমুল হুদা এ দুই তদন্ত কর্মকর্তাকেই ম্যানেজ করে ফেলেছেন।

নাজমুল হুদার কাছে এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত হচ্ছে কি না, সেটা আমার জানা নেই। আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই।’ একই বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি খোঁজখবর নেব। অভিযোগ সত্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036931037902832