প্রাথমিকের উপবৃত্তি বিতরণের দায়িত্ব পেল ডাক বিভাগের নগদ। নগদকে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রদান (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের সার্ভিস প্রোভাইডার নিয়োগের চিঠি দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও উপবৃত্তি প্রকল্প পরিচালক এ চিঠি পেয়েছেন। একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে প্রাথমিকের উপবৃত্তি বিতরণের দায়িত্ব ছিলো বেসরকারি মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান শিওরক্যাশ। অদক্ষতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ ছিল শিওরক্যাশের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সরকারকে মোটা অংকের টাকা গুণতে হতো শিওরক্যাশের এই সেবা নিতে।
জানা যায়, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে এবং শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যতগুলো উপবৃত্তি প্রকল্প পরিচালনা করা হয়, প্রাথমিক স্তরের উপবৃত্তি তার মধ্যে সবচেয়ে বড়। সারাদেশের প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থী তাদের অভিভাবকের মোবাইলের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা পান। বর্তমানে মাসিক ৭৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত উপবৃত্তি শিক্ষার্থীর মায়ের নামে খোলা অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্পের পরিচালক মো. ইউসুফ আলী বলেন, প্রাথমিকের উপবৃত্তি বিতরণের জন্য ডাক বিভাগের নগদ-কে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস প্রোভাইডার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত মে মাসে প্রকল্পটি নতুন করে অনুমোদন পেয়েছে। গত জুলাই মাসের শুরুতে এক কোটিরও বেশি শিক্ষার্থীর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত উপবৃত্তির ৪৩৯ কোটি টাকা শিওর ক্যাশের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। সেখানে বিস্তর অভিযোগ ছিলো।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, “আগে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে উপবৃত্তি বিতরণে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ছিলো। দুর্নীতিরোধে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিতরণ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় শেখ হাসিনার সরকার। গত তিন বছরেও বেশি সময় ধরে এই প্রকল্পের অধীনে মোবাইলে অর্থ বিতরণ নিয়ে নানান অনিয়মের তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ভুয়া শিক্ষার্থীর তথ্য দিয়ে অর্থ উত্তোলন, উপবৃত্তির টাকা মেরে শিওরক্যাশের এজেন্টদের পলায়ন, শিওর ক্যাশের কমস্ংখ্যক এজেন্ট থাকা, প্রাথমিক শিক্ষকদের দিয়ে শিওরকাশের কাজ করানো, সার্ভিস চার্জ বাড়িয়ে বাড়তি অর্থ আদায় ও প্রশিক্ষণের টাকা ব্যয়সহ নানা অভিযোগ ছিল।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ডাক বিভাগের নগদ-কে এই দায়িত্ব দেয়াটা খুবই ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:
শিওরক্যাশের ব্যর্থতায় করোনায় উপবৃত্তির টাকা পেতে স্কুলে শিক্ষার্থীদের জমায়েত
রকেট ও শিওরক্যাশ এজেন্টদের টাকা না দিলে উপবৃত্তি মেলেনা ঝালকাঠীতে
শিওরক্যাশের অক্ষমতায় উপবৃত্তির টাকা পেতে ভোগান্তি
জটিলতায় শিওরক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণ
টিউশন ফি’র ১০ লাখ টাকা শিওরক্যাশের পকেটে!
উপবৃত্তি নগদায়নে অতিরিক্ত টাকা আদায়: শিওরক্যাশের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের ক্ষোভ