ফরম পূরণের টাকা নিয়ে প্রধান শিক্ষক উধাও - Dainikshiksha

ফরম পূরণের টাকা নিয়ে প্রধান শিক্ষক উধাও

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি |

আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ন্যাশনাল পাবলিক স্কুলের পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণ করার জন্য শনিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্ণা দিয়েও রফিকুল ইসলাম নামে ওই অধ্যক্ষের দেখা পায়নি। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ।

জানা যায়, উপজেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাশে দু’চালা টিনের তৈরি মার্কেট ভাড়া নিয়ে ২০১২ খ্রিস্টাব্দে সরকারি অনুমোদপ্রাপ্ত প্রচারণা দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে ন্যাশনাল পাবলিক হাই স্কুল। জেএসসি ও পিএসসি পরীক্ষাই দেয়নি এমন শত শত শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার নামে কয়েক’শ শিক্ষার্থীকে শুরুতেই ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে ওই স্কুলে ভর্তি করা হয়। ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা পাঠদান করার প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞান, মানবিক শাখায় ভর্তি করা হয় ওইসব শিক্ষার্থীদের।

এর পর হাইব্রিড পদ্ধতিতে রেজিষ্টেশন ও ফরম পূরণের কথা বলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেয়ার নামে প্রতিমাসে ৩’শ টাকা হারে বেতন, ফরম ফিলাপের কথা বলে কারো কারো নিকট থেকে ৭ হাজার টাকা আবার কারো কারো নিকট থেকে অতিরক্তি আরও ২৬’শ করে টাকা নেয়া হয়। নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফাঁদে ফেলে ওই প্রধান শিক্ষক ফরম ফিলাপের সুযোগ দেয়ার নামে ১৭ থেকে সর্ব্বোচ ২০ হাজার টাকা করে জনপ্রতি হাতিয়ে নেন। এদিকে ১০ শিক্ষার্থীরা উপজেলার জনতা উচ্চ বিদ্যালয় ও বালিজুরী হাজি এলাহীবক্স উচ্চ বিদ্যালয়ের কোটায় ফরম ফিলাপের সুযোগ পেলেও ওই ৬ শিক্ষার্থী পড়ে যায় অনেকটা বিপাকে।

এ নিয়ে শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্কুলের প্রবেশদ্বার তালাবদ্ধ দেখতে পায় শিক্ষার্থীরা। উদ্বিগ্ন অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা শরনাপন্ন হন এলাকার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট। এ নিয়ে বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে এক বৈঠক হলেও বৈঠকে হাজির হননি ওই প্রধান শিক্ষক, অবশ্য মুঠোফোনে প্রধান শিক্ষক টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করলেও এর দায় চাপিয়েছেন অন্য এক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ওপর।

ছাত্রী অবিভাবক বাদাঘাট ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য রাশেদা আক্তার শনিবার গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আমার মেয়ে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে জেএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়ে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে পাস করে, ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে তার নবম শ্রেণিতে থাকার কথা কিন্তু আমার মেয়েকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার কথা বলে কয়েকদিন আগে এককালীন ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। এখন ফরম ফিলাপের সময় উনি উধাও হয়ে গেছেন। ছাত্র অভিভাবক তোতা মিয়া বলেন, আমার ছেলে এক বিষয়ে নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয় কিন্তু গত বুধবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ ও ফরম ফিলাপের কথা বলে ওই প্রধান শিক্ষক ১৭ হাজার টাকা এককালীন নিয়েছেন শনিবার এসে দেখি স্কুল তালাবদ্ধ।

ফরম ফিলাপ থেকে বঞ্চিত হওয়া শিক্ষার্থী মোবারক, বায়জিদ, আনোয়ার, লিমন, শারমিন আক্তার রুপা, নুরেছা বেগম জানায়, একই কায়দায় আমাদের প্রত্যেকের নিকট থেকে ফরম ফিলাপের কথা বলে ১৭ থেকে ২০ হাজার টাকা করে নেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু কয়েকদিন ধরেই তিনি আজ-কাল-পরশু বলে সময় ক্ষেপন করে শনিবার স্কুল তালা দিয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন।’

এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি প্রতারণামুলক অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শ্রী রমা কান্ত দেবনাথ বলেন, ‘বাদাঘাটে ন্যাশনাল পাবলিক স্কুল নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই স্কুলের কোন রকম সরকারি অনুমোদন নেই। এ ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে কেউ প্রতারিত হলে বা প্রতারণা করলে তার খোঁজ-খবর নেয়ার দায়-দায়িত্ব মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নয়।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030491352081299