পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসায় জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ বলা হয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড জেডিসি পরীক্ষার ফি এবং কেন্দ্র ফিসহ ২৫০ টাকা ধার্য করলেও নানা অজুহাতে তার চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি আদায় করা হচ্ছে। চলতি বছরের ৯ জুলাই মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম মোর্শেদ বিপুলের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, ৩০ জুলাই থেকে জেডিসি পরীক্ষার ফরম পূরণের কাজ শুরু হয়।
আর আগামী ১১ আগস্ট বিলম্ব ফিসহ ফরম পূরণের শেষ দিন। জনপ্রতি ওই পরীক্ষার ফি ১০০ টাকা এবং কেন্দ্র ফি ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার জেডিসি পরীক্ষায় এ উপজেলার ১১টি মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করবে। রাঙ্গাবালী উপজেলার উত্তর কাজির হাওলা মোহসেনিয়া দাখিল মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষার্থী জানান, জেডিসির ফরম পূরণে তাদের মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী প্রতি ১০০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। মাদ্রাসার সুপার আবদুল বারেকের ধার্যকৃত এই ফি দিয়েই তাদের ফরম পূরণ করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে টাকার কোন রসিদ দেয়া হচ্ছে না। জানতে চাইলে ওই মাদ্রাসার সুপার আবদুল বারেক জানান, রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী তার মাদ্রাসায় ৪৫ জন ছাত্রছাত্রী কিংবা তার কিছু কম কিংবা সবাই ফরম পূরণ করতে পারে। ফরম পূরণের ফির সঙ্গে পেছনের বকেয়া বেতন, সেশন, স্কাউট ফিসহ ৭০০-৮০০ টাকা নেয়া হচ্ছে।
কারণ অনলাইন-কম্পিউটার, ফাইনাল লিস্ট, টট লিস্ট বের করা ও সাবমিশনে খরচ লাগে। এগুলো পোষানো লাগে সেশন ফি দিয়ে। তাই পুরো ফি সরকারী রসিদ দিয়ে নেয়া হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফি ২৫০ টাকা হলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলার আমলিবাড়িয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, উত্তর কাজিরহাওলা মোহসেনিয়া দাখিল মাদ্রাসা, সাজির হাওলা আকবারিয়া দাখিল মাদ্রাসা, চরমোন্তাজ সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ উপজেলার ১১টি মাদ্রাসাতেই জেডিসির ফরম পূরণে শিক্ষার্থী প্রতি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্টরা এসব জেনেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, কেবল ফরম পূরণের সময় এলেই বেতন, সেশন, খেলাধুলাসহ ইত্যাদি ফির অজুহাত দেখিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বাড়তি টাকা আদায় করে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের রসিদ দেয়া হচ্ছে না।
এসব কারণে দুস্থ-অসহায় পরিবারের শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকের মধ্যে রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত টাকা যারা দেয়, তারা যদি অভিযোগ না করে তবে কি করার আছে। আমাদের বলতে হবে তো। তা না হলে কিছু করার নেই।