ফারদিন হত্যা : রাত ২টা ৪০ মিনিটের পর সবই অজানা - দৈনিকশিক্ষা

ফারদিন হত্যা : রাত ২টা ৪০ মিনিটের পর সবই অজানা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে ৫ নভেম্বর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূরের (পরশ) সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করেছে মামলার তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও ছায়া তদন্তের সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব। ডিবি বলছে, ওই দিন রাত ২টা ৪০ মিনিটে ফারদিনের মুঠোফোনের সর্বশেষ অবস্থান ছিল নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের বরপা এলাকা। অপর দিকে র‍্যাব বলছে, ২টা ৩৪ মিনিটে ফারদিন ছিলেন রূপগঞ্জের চনপাড়ায়।

তবে প্রযুক্তিগত তদন্তের বাইরে ঘটনার দিন রাত ২টা ৩৪ ও ৪০ মিনিটের পর কী হয়েছে, ফারদিন খুনের ২০ দিন পরও সেই তথ্য বের করতে পারেনি ডিবি ও র‍্যাব। জানা যায়নি হত্যার কারণ। মামলার ছায়া তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাব বলছে, খুনিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তবে হত্যার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে তারা।

ফারদিনের সর্বশেষ অবস্থান নিয়ে দুই সংস্থার দুই রকম তথ্য হওয়ার সম্ভাব্য কারণও পেয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাঁরা বলেন, রাতের ওই সময়টাতে ফারদিনকে বরপা ও চনপাড়ার উভয় মুঠোফোন টাওয়ারের অধীনে পাওয়া গেছে। একই ব্যক্তিকে অনেক সময় সীমান্তবর্তী দুই এলাকার টাওয়ারের অধীনে দেখা যায়।

মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তির তথ্য–উপাত্ত ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন, ফারদিনের সর্বশেষ অবস্থান ছিল রূপগঞ্জের তারাব এলাকার বরপায়। সেখানকার একটি সূত্র ধরে এই হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে কাজ করছেন তাঁরা। কর্মকর্তারা বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে যে লেগুনায় ফারদিন উঠেছিলেন, সেটি সুলতানা কামাল সেতুর ওপর দিয়ে তারাব বিশ্বরোড হয়ে বরপা যায়। আর সেতুর নিচ দিয়ে যে রাস্তা রয়েছে, সেটি ধরে চনপাড়ায় যায় লেগুনা।

তবে ছায়া তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাব বলছে, চনপাড়ার অপরাধী চক্র হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বুয়েট ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা বলে ৪ নভেম্বর ডেমরার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বের হন ফারদিন। ওই দিনই তিনি নিখোঁজ হন। পরদিন ৫ নভেম্বর রামপুরা থানায় জিডি করেন তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের তিন দিন পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। এ ঘটনায় ফারদিনের বাবা ছেলের বন্ধু আয়াতুল্লাহ বুশরাকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার বুশরা পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন।

ডিবির ভাষ্য, যে লেগুনায় চড়ে ফারদিন যাত্রাবাড়ী থেকে তারাব হয়ে বরপা যান, ওই লেগুনার চালক ও তাঁর সহযোগীকে শনাক্ত করে কথা বলেছেন তাঁরা। ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) সঞ্জিত কুমার রায় গতকাল বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে লেগুনাচালক স্বপন ও তাঁর সহকারী জনির কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্তে নতুন করে কোনো অগ্রগতি নেই।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, বন্ধু বুশরার সঙ্গে রিকশায় করে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ফারদিন রামপুরা সেতু এলাকায় যান। সেখান থেকে কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় যান ১০টা ৫৩ মিনিটে। এরপর রাত ১১টা ৯ মিনিটে পুরান ঢাকার জনসন রোডে যান। রাত ১২টা ৫০ মিনিটে ফারদিনের অবস্থান ছিল গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায়। পরে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে রাত ১টা ৫৯ মিনিটে আরেক বন্ধুর সঙ্গে কথাবার্তার তথ্য পাওয়া যায়। রাত ২টা ৩ মিনিটে যাত্রাবাড়ী থেকে লেগুনায় উঠে তারাব হয়ে বরপা যান ফারদিন।

তবে র‍্যাবের মতে, রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি বুশরাকে রামপুরায় নামিয়ে দেন। মুঠোফোনের প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি কেরানীগঞ্জে, রাত ১০টা ৫৩ মিনিটে বাবুবাজার ব্রিজ এলাকায়, রাত ১১টা ৯ মিনিটে জনসন রোড এলাকায় এবং দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় ছিলেন। পরে রাত ২টা ১ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা এলাকায় তাঁর অবস্থান ছিল।

একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি বলছে, রাত ২টা ৩ মিনিটে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে চারজনের সঙ্গে লেগুনায় ওঠেন ফারদিন। রাত ২টা ১৩ মিনিটে তিনি ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার মোড়ে নেমে ওই চারজনের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। রাত ২টা ২৩ মিনিটে চনপাড়ায় যান। রাত ২টা ৩৪ মিনিটে সেখানেই তাঁর মুঠোফোন বন্ধ হয়ে যায়।

২০ দিনেও হত্যার কারণ ও জড়িত ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন। গতকাল বুধবার রাতে তিনি বলেন, কী কারণে তাঁর ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, সেটা তিনি জানতে চান। তিনি বলেন, ‘এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, খুনিরা খুব সতর্কতার সঙ্গে কাজটি করেছে। যে কারণে এর রহস্য উদ্‌ঘাটনে সময় লাগছে। তারপরও আমি তদন্ত সংস্থার প্রতি আস্থা রাখতে চাই।’

সরকারি স্কুলে শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পেলেন ১ হাজার ১১৬ প্রার্থী - dainik shiksha সরকারি স্কুলে শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পেলেন ১ হাজার ১১৬ প্রার্থী প্রশ্নকর্তা অজ্ঞাতে, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কাল - dainik shiksha প্রশ্নকর্তা অজ্ঞাতে, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কাল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে ইসিতে চিঠি - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে ইসিতে চিঠি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় সাড়ে ১৮ লাখ আবেদন - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় সাড়ে ১৮ লাখ আবেদন যা আছে শিক্ষামন্ত্রীর হলফনামায় - dainik shiksha যা আছে শিক্ষামন্ত্রীর হলফনামায় নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণ স্থগিত - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণ স্থগিত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অবৈধ হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অবৈধ হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064389705657959