ফেরত যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দের ১০ কোটি টাকা - দৈনিকশিক্ষা

ফেরত যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দের ১০ কোটি টাকা

রাবি প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ হওয়া অন্তত ১০ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) ফেরত যাচ্ছে। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল সংস্কারের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ৫ কোটি এবং সংস্কার কাজের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেটের উদ্বৃত্ত ছিল ৫ কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যসহ একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

তবে অভিযোগ উঠেছে, রাবি প্রশাসনের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার অসযোগিতা ও অনভিজ্ঞতাসহ কতিপয় শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতাদের পাল্টাপাল্টি বাধায় অর্থকমিটি দু’দফায় এবং সিণ্ডিকেটের সভা একবার স্থগিত হয়েছে। সেজন্যই এ টাকা ফেরত যাচ্ছে ইউজিসিতে।

সূত্র জানায়, অভিন্ন প্রধান আলোচ্য সূচিতে (এজেন্ডায়) রাবি অর্থকমিটি এবং সিণ্ডিকেটের এসব সভা যথাক্রমে গত ২ ও ৪ মে প্রথম আহবান করেছিলেন সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এ সভা তার মেয়াদের শেষ সভাও ছিল। শিক্ষকদের অভিযোগ, সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের বিরোধী হিসেবে পরিচিত ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষকদের একাংশের বাঁধা এবং প্রশাসনের তিন শীর্ষ কর্মকর্তার (দুই উপ-উপাচার্য ও চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার) অসহযোগিতায় এসব সভা স্থগিত হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, প্রথম আহবানের ৪৮ ও ৪৯ দিন পর একই অর্থকমিটি ও সিন্ডিকেটের সভা অভিন্ন প্রধান আলোচ্য সূচিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অনুমতি নিয়ে পুনরায় ১৯ ও ২২ জুন আহবান করেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা। কিন্তু অর্থকমিটির ১৯ জুনের সভাটি এবার বিদায়ী উপাচার্যের হাতে ‘এডহক’ নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের বাধায় স্থগিত হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক মো. লিয়াকত আলী ওই দিনই বলেছিলেন, প্রধান এজেন্ডাভুক্ত এফসির সভা স্থগিত হওয়ার পর আগামী ২২ জুনের সিণ্ডিকেটের সভাটি আর অনুষ্ঠানের আবশ্যকতা নেই।

অভিযোগ উঠেছে, অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বিদায় নেয়ার পরও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য উদ্বৃত্ত বাজেট ও ইউজিসির অনুদানের টাকা ব্যয়ের প্রশ্নে প্রায় একমাস নিরব ছিলেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য উক্ত টাকা ব্যয়ের জন্য তৎপর হন। কিন্তু এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় অর্থকমিটি ও সিণ্ডিকেটের সভা করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু দুইমাস আগে অসহযোগিতা করে অসময়ে (এক সপ্তাহ আগে) ১০ কোটি টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্তের জন্য অর্থকমিটি ও সিণ্ডিকেটের সভা আহবান ‘দূরভিসন্ধিমূলক’।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাবি অর্থকমিটির একাধিক সাবেক সদস্য বলেন, বিদায়ী উপাচার্যের অর্থকমিটি ও সিণ্ডিকেটের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হলে ওই টাকার উন্নয়ন কাজ এতদিন শেষ হয়ে যেত অথবা চলমান থাকতো। ফলে এসব কাজ তদারকির সুযোগ পেতেন এখনো স্বপদে থাকা বিদায়ী উপাচার্যের দুই উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারই। কিন্তু তাদের অনভিজ্ঞতা বা কথিত অসহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিশ্চিত উন্নয়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

রাবির কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক জানান, ১৯ জুনের এফসিতে পাস করিয়ে ২২ জুনের সিণ্ডিকেটে অনুমোদন করে ৩০ জুনের ১০ কোটি টাকার কাজ করা সম্ভব নয়। এমনটা হলে এখানে স্বচ্ছতার বিষয়টিও তো পরিস্কার করতে হবে। অথচ বিদায়ী উপাচার্যের এফসি ও সিন্ডিকেটে সহযোগিতা করে দুই উপ-উপাচার্য তার অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করতে পারতেন। এটি আল্টিমেটলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো সংস্কারের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ৫ কোটিরও কিছু বেশি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। আগামী ৩০ জুন চলতি অর্থবছর শেষ হবে। টাকাগুলো ব্যবহার করার জন্য এই সময়ের মধ্যে ফাইন্যান্স কমিটির সিদ্ধান্ত সিণ্ডিকেটের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। ফাইন্যান্স কমিটির সভা না হলে সেই টাকাগুলো ফেরত চলে যাবে। এছাড়া বিভিন্ন সংস্কার কাজের জন্য আরও প্রায় ৫ কোটি টাকার মতো ফাইন্যান্স কমিটির সিদ্ধান্ত সিণ্ডিকেটে অনুমোদন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত শনিবার অনিয়মতান্ত্রিক এক বাধার কারণে সেই সভা করা সম্ভব হলো না।

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039231777191162