২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আমেনা আখতার জুথি নগর পুলিশের (আরএমপি) ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের তত্ত্বাবধানে একটি নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার সেফ হোমে থাকতো। প্রায় পাঁচ বছর পর জুথিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার (২৮ আগস্ট) আদালতের মাধ্যমে জুথির মা সালমা বেগমের কাছে তার মেয়েকে হস্তান্তর করা হয়।
জুথিকে তার পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে দিতে মূল ভূমিকা পালন করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। নগর পুলিশের (আরএমপি) ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উদ্যোগে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে জুথি ফিরে পেল তার পরিবারকে।
আরএমপি সূত্রে জানা গেছে, আমেনা খাতুন জুথি নামের ৮ বছরের মেয়েটিকে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারির ভোরে রাজশাহী রেলস্টেশনে কান্নারত দেখতে পান ফেরদৌস হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি শাহ মখদুম থানায় শিশুটিকে হস্তান্তর করেন। পরবর্তী সময়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে আমেনা খাতুন জুথিকে প্রেরণ করা হয় এবং পাশাপাশি তার পরিবারকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়।
জুথি জানায়, তার বাবা বাহরাইন প্রবাসী এবং বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে। সে ঢাকায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো। সেখানে সে মারধরের শিকার হতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একদিন সে বাসা থেকে বের হয়ে ট্রেনে করে রাজশাহী চলে আসে।
আরএমপি জানায়, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে থাকাকালে পরিবারকে খুঁজে না পাওয়ায় আমেনা খাতুন জুথিকে দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের জন্য ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টে (এসিডি) দেয়া করা হয়। এসিডির তত্ত্বাবধানে জুথি বেড়ে উঠতে থাকে। বর্তমানে তার বয়স ১৩ বছর।
সম্প্রতি ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পুলিশ পরিদর্শক পলি দাস জুথির পরিবারকে খুঁজে বের করার পুনরায় চেষ্টা করেন। তিনি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তী সময়ে নাঙ্গলকোটের ওসির নির্দেশে এসআই দিবাকর রায় তার নিজস্ব ফেসবুক টাইম লাইনে জুথির সব বিবরণ শেয়ার করেন। জুথির চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন পোস্টটি দেখার পর থানাতে যোগাযোগ করেন। পরে জুথির পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে নগর ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার। গতকাল বুধবার জুথির পরিবার মহানগর ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যান।
নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আরএমপি কমিশনার হুমায়ুন কবিরের নির্দেশে এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুজায়েত ইসলামের সরাসরি তত্ত্বাবধানে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জুথিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।