২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কততম জন্মদিবস, তা জানে না শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা অধিদপ্তর।
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে যে কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে, শিক্ষা অধিদপ্তরের সে সম্পর্কিত এক নোটিসের শুরুতে লেখা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ‘৯৮তম’ জন্মদিবস। ওদিকে শিক্ষামন্ত্রণালয় তাদের নোটিসে ঠিকভাবে লিখলেও পরে কি মনে করে নোটিসের শুরুতে বিষয়ের ঘরে ‘৯৯’ কেটে হাতে লিখে ‘৯৮’ করেছে [ছবিতে গোল চিহ্নিত]। অবশ্য প্রথমটা ‘ঠিক’ করা হলেও ভেতরে ’৯৯তম’ই রয়ে গেছে।
জন্মদিবস ও জন্মবার্ষিকী আসলে এক কথা নয়। বাংলা একাডেমির ব্যবহারিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী জন্মদিন মানে ‘জন্মের দিন’। বার্ষিকী হলো নির্দিষ্ট সংখ্যক বর্ষ পূর্ণ হওয়া। সে অর্থে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মার্চ হবে বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিবস এবং ৯৮তম জন্মবার্ষিকী। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এই সহজ বিষয়টাতেই বিভ্রান্তির কবলে পড়েছেন। ওয়েবসাইটে এই নোটিস পেয়ে শত শত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার প্রধানরা দৈনিকশিক্ষার কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য শেষ মুহূর্তে তাদের ‘ভুল’ শোধরানোর চেষ্টা করেছে। তবে তাতে সেটা শুদ্ধ না হয়ে পুরো ব্যাপারটাই তালগোল পাকিয়ে গেছে। টাইপ করা কপিতে হাতে কেটে ’৯৯’ কে ‘৯৮’ করা হয়েছে। কিন্তু ভেতরে ’৯৯’ই রয়ে গেছে। অর্থাৎ শুদ্ধ তথ্যটাকে হাতে কেটে ভুল করা হলো। আবার ভেতরের সংখ্যাটাকে আগেরটাই রেখে দেয়া হলো। এতে দুটো জিনিস বোঝা গেছে। প্রথমটা হলো, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধুর কততম জন্মদিবস তা নিয়ে সন্দিহান ছিল। আর দ্বিতীয়টা হলো অফিসিয়াল নিয়ম বা শৃঙ্খলাবোধ সম্পর্কে তাদের উদাসীনতা। তাই সচিব মো: সোহরাব হোসাইন এবং উপসচিব মো: সারওয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই নোটিসের হাতে কাটা সংশোধনী কপি চলে গেছে বিতরণযোগ্য অফিসগুলোতে।
তবে শিক্ষা অধিদপ্তর ভদ্রলোকের এক কথার মতো বঙ্গবন্ধুর ‘৯৮তম জন্মদিবস’ নিয়েই বসে আছে।
শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন সহকারি পরিচালক দৈনিকশিক্ষাকে টেলিফোনে বলেন, ‘দৈনিকশিক্ষার প্রতিবেদন প্রকাশের পর মন্ত্রণালয়ের একজন উধ্বর্তন কর্মকর্তা বিষয়টি দেখতে বলেছেন।’
মহাপরিচালক অধ্যাপক মো: মাহাবুবুর রহমান সিঙ্গাপুর সফরে রয়েছেন।
দৈনিকশিক্ষাকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষক নেতা মো: নজরুল ইসলাম রনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে কিছু অযোগ্য ও অদক্ষ লোকবল ঘাপটি মেরে বসে আছে যাদের ধান্দাই সরকারকে বিপদে ফেলা। অবিলম্বে শিক্ষা প্রশাসন থেকে এসব অদক্ষ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীদের বের করতে না পারলে এমনসব আনাড়িপনা চলতেই থাকবে।