বঙ্গবন্ধুর পাঞ্জাবি-টোব্যাকো পাইপ কোট জাতীয় জাদুঘরে - দৈনিকশিক্ষা

বঙ্গবন্ধুর পাঞ্জাবি-টোব্যাকো পাইপ কোট জাতীয় জাদুঘরে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতীয় জাদুঘরের দীর্ঘদিনের চাওয়া পূরণ হলো। দেশের প্রধান জাদুঘরের সংগ্রহে এলো বাঙালীর অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের বিখ্যাত মুজিব কোট, সফেদ পাঞ্জাবি, পাজামা ও একটি টোব্যাকো পাইপ।

শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনক্রমে বৃহস্পতিবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জাতীয় জাদুঘরকে স্থায়ীভাবে এসব অমূল্য স্মারক প্রদান করেন। স্মৃতি জাদুঘর থেকে জাতীয় জাদুঘরে স্থায়ীভাবে কোন নিদর্শন দান করার ঘটনা এটিই প্রথম।

জানা যায়, সরকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বেশ কিছু স্মৃতি নিদর্শন রয়েছে। তবে মুজিব কোট, সফেদ পাঞ্জাবি, পাজামা ও পাইপ  দিয়েই মহান নেতাকে বিশেষভাবে চেনা যেত। এগুলোর কোনটিই জাতীয় জাদুঘরে ছিল না। ঘাটতি পূরণে গত জুলাই মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের সহায়তা চায় জাতীয় জাদুঘর।

২৬ জুলাই জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান ম্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম বরাবর একটি চিঠি  লেখেন। তাতে জাতির পিতার পাঞ্জাবি, পাজামা, মুজিব কোট, চশমা ও টোব্যাকো পাইপ স্থায়ী নিদর্শন হিসেবে পাওয়ার আবেদন জানানো হয়।

সূত্র জানায়, এর পর গত বুধবার গণভবনে স্মৃতি জাদুঘরের ট্রাস্টিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকের এক পর্যায়ে কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান জাতীয় জাদুঘরের আবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করে এ ব্যাপারে তাঁর সিদ্ধান্ত চান। জাতীয় জাদুঘরের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেন। এর প্রেক্ষিতে জাতীয় জাদুঘরের প্রতিনিধিদের হাতে চারটি নিদর্শন তুলে দেয়া হয়।    

তবে হস্তান্তর উপলক্ষে এদিন কোন আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের একজন কীপারসহ তিন কর্মকর্তা যান ধানম-ির স্মৃতি জাদুঘরে। ঘরোয়া পরিবেশে জাতীয় জাদুঘরের কীপার সাইফুজ্জামানের হাতে চারটি নিদর্শন তুলে দেন স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান।

এদিন নিদর্শনগুলো খুব কাছ থেকে খুঁটিয়ে দেখার সুযোগ পান এই প্রতিবেদক। কালো রঙের মুজিব কোটটি বহু বছরের পুরনো হলেও তাতে কোন খুঁত বা ক্ষত ছিল না। রঙটাও তেমন ফিকে হয়নি। গুনে দেখা যায়, মুজিব কোটে রয়েছে ছয়টি বড় বোতাম। বোতামের রঙও কালো। সাদা পাঞ্জাবিটি  হালকা ও আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি। পুরনো কাটিং। সে সময়কার গোল গলা।

বুকের অংশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দাগ পড়েছে। তবে কোন ছেড়াফাঁড়া নেই। পাজামার লক্ষ্যণীয় দিক- এর আকার। আকারে এটি অনেক বেশি ঢোলা। টোব্যাকো পাইপটি পিতলের। আকর্ষণীয় টেক্সচার। সেখানে ফুল ও লতাপাতার চমৎকার ডিজাইন দৃশ্যমান হয়। 

জানা যায়, নিদর্শনগুলো এতদিন বিশেষ যত্নে স্মৃতি জাদুঘরের স্টোর রুমে সংরক্ষিত হচ্ছিল। সেখান থেকে বের করে জাতীয় জাদুঘরে দান করা হয়।

এ প্রসঙ্গে স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান বলেন, জাতির জনকের যে কোন নিদর্শন আমাদের কাছে মহামূল্যবান। আমরা চাই, এসব নিদর্শনের মাধ্যমে বাঙালীর নেতাকে মানুষ আরও জানুক। তাঁকে নিয়ে গবেষণা হোক। জাতীয় জাদুঘর এসব কাজ এগিয়ে নিতে ভালভাবে কাজ করতে পারে। নিদর্শন সংরক্ষণে তাদের বিশেষ সক্ষমতা আছে। অসংখ্য দর্শনার্থী নিয়মিত এ জাদুঘর পরিদর্শন করে। এসব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিদর্শনগুলো জাতীয় জাদুঘরে স্থায়ীভাবে দান করেছেন বলে জানান তিনি।

একই ধরনের আরও নিদর্শন স্মৃতি জাদুঘরে আছে। আছে নিশ্চিত হয়েই কিছু নিদর্শন জাতীয় জাদুঘরে দেয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানা যায়। 

জাতীয় জাদুঘরের পক্ষে নিদর্শন সংগ্রহ করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কীপার সাইফুজ্জামান বলেন, আমরা অনেকদিন ধরে একটা ঘাটতি অনুভব করছিলাম। এসব নিদর্শন সে ঘাটতি পূরণ করেছে। আমরা ভাবতেই পারিনি যে, এত অল্প সময়ের মধ্যে, এত সহজে অমূল্য দান জাদুঘরের জন্য পাব। এ জন্য জাতীয় জাদুঘরের পক্ষ থেকে স্মৃতি জাদুঘরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, নিদর্শনগুলো পেয়ে জাতীয় জাদুঘর দারুণভাবে সমৃদ্ধ হলো। প্রতিটি নিদর্শন যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হবে। আপাত বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে সেখানে এগুলো দেখার সুযোগ করে দেয়া হতে পারে। পরবর্তীতে এগুলো স্থায়ী গ্যালারিতে প্রদর্শন করা হবে বলে জানান তিনি।   

এদিকে, জাতীয় জাদুঘরকে সমৃদ্ধ করতে সরাসরি ভূমিকা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু নিজেও।  জানা যায়, ১৯৭২ সালের জুন মাসে নেতা নিজেই বেশ কিছু স্মৃতি নিদর্শন জাতীয় জাদুঘরে দান করেছিলেন। সে সময় জাদুঘরের দায়িত্বে থাকা ড. ফিরোজ মাহমুদ গণভবনে গিয়ে এগুলো গ্রহণ করেন। এ তালিকায় ছিল বঙ্গবন্ধুকে লেখা সাধারণ মানুষের চিঠি, মানপত্র, কাঁসার থালা, কলম ইত্যাদি। নিদর্শনগুলো এখন নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছে।

একই সময় জাতীয় জাদুঘরের স্থায়ী গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহার করা টেবিল, রিভলবিং চেয়ার, শীতল পাঠি বিছানো পালঙ্ক। এসবের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো মুজিব কোট, পাঞ্জাবি, পাজামা ও পাইপ।

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036091804504395