বাঁশের চাটাইয়ে ডাক্তার হবার স্বপ্ন বুনে গাইবান্ধার মিশু - দৈনিকশিক্ষা

বাঁশের চাটাইয়ে ডাক্তার হবার স্বপ্ন বুনে গাইবান্ধার মিশু

মশিউর রহমান, গাইবান্ধা : |

বাড়ির উঠোনে বাশের চাটাই বুনছে মিশু আক্তার। বাঁশ দিয়ে বেড়াসহ ঘর তৈরির নানা উপকরণ এবং অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরিতে দিনমজুর বাবা মিনু মন্ডলকে সাহায্য করে সে। যেন বাবা একটু বাড়তি আয় করতে পারে এবং তার পড়ালেখার খরচ জোগাতে পারে। 

গাইবান্ধা সরকারি মহিলা কলেজে এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্রী মিশু আক্তার। স্বপ্ন তার ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু পরিবারের অর্থের অভাব তার স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। গাইবান্ধার সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম বিষ্ণুপুর দিনমজুর বাবা-মা’র সংসারের একমাত্র মেয়ে মিশু । টাকার অভাবে শেষ পর্যন্ত উচ্চ শিক্ষার দারপ্রান্ত থেকেই তাকে ফিরে আসতে হয় কি না সেই শঙ্কা জেকে বসেছে মিশুর মনে।

বুধবার (২ জানুয়ারি) সকালে দৈনিকশিক্ষা ডটকমের সাথে আলাপকালে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে সেই শঙ্কার কথা জানাচ্ছিলেন মিশুর মা রাশেদা বেগম । তিনি বলেন, ৬ শতক বাস্তুভিটে ছাড়া আমার কোনও সম্পত্তি নেই। কষ্টের সংসারে বহুবার তার পড়াশোনা বন্ধ করে বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্ত এসএসসি  পাসের পর মেয়ের কান্নাকাটির কারণে বাধ্য হয়ে এখনো তার পড়াশোনা চালু রেখেছি। অভাবের সংসারে তার ইচ্ছা পুরণ করতে গিয়ে এবার মা'র  সাথে সাথে সকাল বিকাল বাঁশের তৈরি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকে মিশু। সংসার চালান ও প্রতি মাসে তার পেছনে ৫ হাজার টাকা খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারকে কখন যে কলেজ যাওয়াই বন্ধ হয়ে যায় মিশুর। 

মিশু আক্তার বলেন, ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পৃথিবীতে জন্মেছি। তাই পড়াশুনার পাশাপাশি বাঁশের তৈরি ছাদ, বেড়া, বিছানার পাটি, ধান রাখার বেড়, টেপা, পোলহি, খোলহি, পাখা, দরজা ও বাঁশের চাটাই তৈরি করে বাবাকে দেই। এগুলো বাজারে বিক্রি করে সংসার চালানোই কষ্টকর। তাই নিয়মিত কলেজ যাওয়া হয় না।

মিশুর বাবা মিনু মন্ডল দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, তার মেয়ে ডাক্তার হতে চায়। কিন্তু মেয়েকে পড়ানোর সামর্থ্য নেই। এনিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় আছি। মেয়ের পোশাক ও লেখাপড়ার খরচ চালাতে যখন টাকা চায় তখন বুক ফেটে কান্না চলে আসে। মেয়ে জন্ম দিয়ে তার পড়াশুনার খরচ চালাতে পারছি না। এক হতভাগা বাবা আমি।

মিশু ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনায় খুব মনোযোগী। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে বিষ্ণুপুর এসএনবি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৩ পেয়ে পাস করে।

গাইবান্ধা সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আব্দুল কাদের দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, মিশু একজন মেধাবী ছাত্রী। বলা যায় নিজের চেষ্টায় সে এতো দুর এসেছে। মিশুর মত অনেক মেধাবী ছাত্রীরকে কলেজের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করা হয়, যেন তারা লেখা পড়া চালাতে পারে। সবার সহযোগিতা পেলে মিশু নিশ্চয়ই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030529499053955