প্রকৃতিতে এখন শীত। বাংলার এই ঋতুকে উদ্যাপনের জন্য আগামীকাল শনিবার থেকে বাংলা একাডেমিতে শুরু হতে যাচ্ছে তিন দিনের পৌষমেলা বাংলা একাডেমির মাঠে পৌষমেলা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত মেলা শেষ হবে সোমবার। সকাল ৮টায় শুরু হয়ে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে মেলা। রকমারি পিঠা-পুলির স্বাদ উপভোগের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য একাডেমির নজরুল মঞ্চে থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। লোকায়ত জীবননির্ভর সংযাত্রা, যাত্রাপালা এবং নৃত্য-গীত ও কবিতার পরিবেশনায় সজ্জিত থাকবে সে আয়োজন।
বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমিতে নজরুল মেলা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। পরিষদের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। উপস্থিত ছিলেন পরিষদের অনুষ্ঠান সমন্বয়ক মানজার চৌধুরী সুইট ও পরিষদ সদস্য ফয়জুল আলম পাপ্পু।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মূলত কৃষিনির্ভর জীবনের প্রতিচ্ছবি এই পৌষমেলা। কৃষিভিত্তিক সমাজে সবাই মিলে পিঠা-পুলি খাওয়ার মাধ্যমেও সামাজিক বন্ধনের প্রকাশ ঘটে। সম্প্রীতির সেই দৃশ্যকল্প বলে যায় আমাদের শেকড়ের কথা। নতুন প্রজন্মের সঙ্গে সেই শেকড়ের পরিচয় ঘটানোই এই মেলার লক্ষ্য।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শনিবার সকাল ৮টায় আইলা জ্বালিয়ে মেলার উদ্বোধন। এরপর থাকবে যন্ত্রসংগীত বাদন। সকালে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ মেলার উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিষদের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে পৌষকথন পর্বে আলোচনা করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, দশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর, পরিষদের সহসভাপতি ঝুনা চৌধুরী ও আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ।
এছাড়া সকাল ১১টা পর্যন্ত উদ্বোধনী দিনের সাংস্কৃতিক আয়োজনে থাকবে একক ও দলীয় সংগীত, দলীয় নৃত্য এবং একক ও দলীয় আবৃত্তিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উপস্থাপিত হবে শিশু সংগঠনের পরিবেশনা। বিকাল ৩টায় থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে গাইবান্ধার চিন্তক পরিবেশিত বেহুলা-লখিন্দর নৃত্যনাট্যের উপস্থাপনা। মেলার দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে বিকাল ৩টা থেকে শুরু হবে নৃত্য-গীত ও কবিতায় সাজানো সাংস্কৃতিক আয়োজন। রবিবার দ্বিতীয় দিনের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে টাঙ্গাইলের মহাদেব ঘোষের দলের সংযাত্রা। সোমবার সমাপনী দিনের বিশেষ আকর্ষণ হবে বাংলার বাণী অপেরা নিবেদিত যাত্রাপালা ‘আলোমতি প্রেম কুমার’। ৫৪টি স্টলে সাজানো মেলা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা পিঠা-পুলির সঙ্গে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর পিঠার স্বাদও মিলবে এই মেলায়।