বাদীর পরিচয় নিশ্চিত হতে হাইকোর্টের ৫ নির্দেশনা - দৈনিকশিক্ষা

বাদীর পরিচয় নিশ্চিত হতে হাইকোর্টের ৫ নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

থানা, আদালত বা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের সময় অভিযোগকারীর পরিচয় যথাযথভাবে নিশ্চিত হতে ৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় অস্তিত্বহীন বাদী খুঁজে বের করার নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৪ জুন হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বুধবার পূর্ণাঙ্গ আদেশটি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

বাদীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার বিষয়ে যে পাঁচ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে:


১. অভিযোগ/এজাহারে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, ক্ষেত্রমতে পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে হবে।

২. এজাহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে সে ক্ষেত্রে এজাহারকারীকে শনাক্তকারী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করতে হবে।

৩. বিশেষ বাস্তব পরিস্থিতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট নম্বর লভ্য (অ্যাভেইলেবল) না হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা এজাহারকারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্বীয় বিবেচনায় অন্যান্য যথাযথ পদ্ধতি গ্রহণ করবেন।

৪. আদালত কিংবা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট না থাকলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী অভিযোগকারীকে শনাক্ত করবেন।

৫. অভিযোগকারী প্রবাসী কিংবা বিদেশি নাগরিক হলে সংশ্লিষ্ট দেশের পাসপোর্ট নম্বর উল্লেখ করতে হবে।

ধর্ষণ, মারধর, চুরি, মানবপাচার- এমন সব অভিযোগে দেশের ১৩টি জেলায় করা ২০টি মামলার চক্করে রাজধানীর শান্তিবাগের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী একরামুল আহসানকে ২ হাজার ৪৬৫ দিন কারাভোগ করতে হয়। এ অবস্থায় ওই সব মামলা ‘মিথ্যা’ উল্লেখ করে মামলা দায়েরে সম্পৃক্ত বা বাদীকে খুঁজে বের করতে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট করেন ৫৫ বছর বয়সী একরামুল আহসান কাঞ্চন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৪ জুন হাইকোর্ট রুল জারিসহ আদেশ দেন।

রিট আবেদনকারীর (একরামুল) বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ওই সব মামলা দায়ের জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেয়া হয়। সেই সঙ্গে মামলা বা অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে বাদীর পরিচয় নিশ্চিতে কয়েক দফা নির্দেশনা দেন আদালত।

আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী এমাদুল হক বশির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় ও বিপুল বাগমার। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সিরাজুল ইসলাম ও মো. সোলায়মান।

মারধর, প্রতারণা, চুরি, এসিড নিক্ষেপ, মানবপাচার, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে ১৩টি জেলায় একরামুলের বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা হয় বলে জানান তার আইনজীবী এমাদুল হক বশির। 

তিনি বলেন, এসব মামলার মধ্যে কোনোটিতে বাদীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার কোনোটিতে সাক্ষী আসেননি। এদিক বিবেচনায় ৩৬টি মামলায় ইতিমধ্যে একরামুল নিম্ন আদালত থেকে খালাস পেয়েছেন। বাকি ১৩টি মামলা বিচারাধীন।

তার বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলার মধ্যে ২০টি মামলায় ২ হাজার ৪৬৫ দিন কারাভোগ করেছেন একরামুল। হয়রানির উদ্দেশে ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে রাখা তার ব্যক্তিস্বাধীনতার লঙ্ঘন উল্লেখ করে রিটটি করা হয়।

আইনজীবীর দেয়া তথ্যমতে, ঘটনার শুরু ২০১১ সালে। মারধরের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের এক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসূত্রে ওই বছরের ১৭ নভেম্বর কারাগারে যান একরামুল। একে একে তার সামনে আসতে থাকে মামলা। পরোয়ানাসূত্রে ১৩টি জেলায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। একবার জামিনে বের হন, পরে আবার অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সূত্রে তাকে আবার কারাগারে যেতে হয়। আবার কোনো মামলাসূত্রে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এর মধ্যে মানবপাচারের অভিযোগে চাঁদপুরের এক মামলায় গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি পান একরামুল। মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে একরামুল রিট করেন। নারায়ণগঞ্জের কুতুবপুরে অবস্থিত আনোয়ার ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিংয়ের মালিক তিনি।

সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040819644927979