বাধা ডিঙিয়ে পরীক্ষায় তারা - দৈনিকশিক্ষা

বাধা ডিঙিয়ে পরীক্ষায় তারা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আনমনে লিখে যাচ্ছে সাদমান তাসনিম। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন একজন শিক্ষক। মাঝেমধ্যে এদিক–সেদিক তাকালে সাদমানকে দ্রুত লেখার তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক লাকি আকতার। রয়েছেন পরীক্ষা হলের দায়িত্বে নিয়োজিত একজন শিক্ষকও। বুধবার (২০ নভেম্বর) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।  প্রতিবেদনটি লিখেছেন প্রণব বল। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার নগরের মিউনিসিপ্যাল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রের দোতলায় এভাবে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছিল সাদমান। সে একজন অটিজমে আক্রান্ত (বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু)।

সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সে প্রমাণ করেছে সাদমানও পিছিয়ে নেই। নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশনের সাদমানের মতো আরও তিন শিশু পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।

সুজয় মজুমদারও সমাপনী পরীক্ষায় বসেছে ড্রিম স্টারস স্কুল থেকে। তার পরীক্ষাকেন্দ্র পড়েছে ষোলশহর এম এ জলিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে। মো. সিরাজুন মুশওয়ারি চৌধুরী ইলহাম পরীক্ষা দিচ্ছে ভাটিয়ারী টিএসসি বিদ্যালয় থেকে।

সে পড়ে বিএমএ গ্রিন হিল ইংলিশ স্কুলে। কাব্য চৌধুরী পরীক্ষা দিচ্ছে প্রবর্তক বিদ্যাপীঠ থেকে। সে মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। 

এম এ জলিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইকরা বিনতে জাহাঙ্গীর নামে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধীও পরীক্ষা দিচ্ছে। 

শেষ দুজন স্বাভাবিক পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তাদের ছায়া শিক্ষকও লাগছে না। দুই ভাইয়ের মধ্যে কাব্য চৌধুরী বড়। সে এখন অনেক সুস্থ। কাব্য চৌধুরীর মা চম্পা ঘোষ বলেন, নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশনে ছিল সে। এখন অনেক সুস্থ। স্বাভাবিকদের মতো পরীক্ষা দিচ্ছে। পড়লে সব পারে সে।

সাদমানের মতো সুজয় মজুমদারের জন্যও ছায়া শিক্ষক দেওয়া হয়েছে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের জন্য ৩০ মিনিট বেশি সময় দেওয়া হয়েছে। সুজয়ের স্কুলশিক্ষক মনীষা সেনগুপ্তা বলেন, তারা স্বাভাবিকের মতো নয়। তাই তাদের জন্য ৩০ মিনিট সময় বেশি দেওয়া হয়।

অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের পরীক্ষায় বসাতে অনেক খুশি তাদের অভিভাবকেরা। তাঁদের মতে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের অবহেলা নয়। যদি সুযোগ–সুবিধা পায় তাহলে তারাও পারবে। 

সাদমানের গৃহশিক্ষক সোনিয়া আকতার বলেন, সাদমান রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। সপ্তাহে তিন দিন নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশনে যায়। দিন দিন তার উন্নতি হচ্ছে। সাদমান পরীক্ষা দিতে পারায় তার মা-বাবাও খুশি।

সাদমানেরা দুই বোন এক ভাই। ইলহাম বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। ইলহামের বাবা ইউসুফ উদ্দিন খালেদ বলেন, ছেলে পরীক্ষা দিতে পারছে সেটা অনেক আনন্দের। সে অন্যান্য স্বাভাবিক ছেলের সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। ছায়া শিক্ষকও লাগেনি। ৩০ মিনিট বাড়তি সময় দিলেও নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শেষ করেছে সে।

তিনি বলেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটা বৃত্তি চালু করলে ভালো হয়। 

অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের মূলধারায় আনার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন নিষ্পাপ অটিজম ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি সংগঠন। নিষ্পাপের নির্বাহী সভাপতি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বাসনা মুহুরী বলেন, অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের লুকিয়ে না রেখে তাদের মূলধারায় আনার চেষ্টা চালাতে হবে। সুস্থ করতে হবে। চেষ্টা করলে সুস্থ হবেই।

নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035851001739502