রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বাঘাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢুকে চার শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করেছেন সদ্য নির্বাচিত ইউপি সদস্য সিহাব উদ্দিন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলে গত রোববার দুপুরে প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেনের কক্ষে ঢুকে তাঁকেসহ চার শিক্ষকে মারধর করেন তিনি। এ ঘটনায় প্রতিবাদ করলে উপস্থিত এক যুবককেও মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারও ভাঙচুর করেন ইউপি সদস্যের লোকজন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, গোদাগাড়ী থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্থানীয় দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
আহত অন্য চারজন হলেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল্লাহ ইবনে ওবাইদুল রাশেল, কামাল হোসেন, সরাইয়া খাতুন, রুনা লাইলা ও সাবেক শিক্ষার্থী নাসিম উদ্দিন সোহাগ। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদিকে গতকাল হামলার একটি ভিডিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক বাঘাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে প্রথমে কথা-কাটাকাটি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাঁরা শিক্ষকদের মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষকরা জানান, ওই দিন দুপুরে ইউপি সদস্য সিহাব উদ্দিন কয়েকজন যুবককে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি বর্তমান সভাপতি সাইদুর রহমানকে বাদ দিয়ে তাঁকে সভাপতি করার দাবি জানান। কিন্তু প্রধান শিক্ষক দাবি না মানায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সিহাব উদ্দিন।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, সিহাব এলাকায় বখাটে বলে পরিচিত। এ কারণে এলাকাবাসী বা অভিভাবকরা তাঁকে চান না। তবে বিষয়টি জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সিহাব উদ্দিন বলেন, ‘সেখানে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। হালকা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে মাত্র। এর বাইরে কিছু ঘটেনি।’
প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত সিহাবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
জানতে চাইলে গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এ নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি।’ এ ব্যাপারে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানে আলম বলেন, ‘পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কিন্তু স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ আমাকে জানিয়েছে।’