বিদ্যালয়ে না গিয়েও বেতন তোলেন প্রধান শিক্ষক, হাজিরা খাতা জব্দ - দৈনিকশিক্ষা

বিদ্যালয়ে না গিয়েও বেতন তোলেন প্রধান শিক্ষক, হাজিরা খাতা জব্দ

মো. মিজানুর রহমান, বরগুনা থেকে : |

বরগুনার বেতাগী উপজেলার ফুলতলা নুরুনেছা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মজিবুর রহমান নানা অজুহাতে প্রায় আট মাস বিদ্যালয়ে যাননি। তবে  সরকারি বেতন-ভাতা তুলছেন নিয়মিত। এমন অভিযোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা। তবে চাকরির ভয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না সহকারী শিক্ষকরা।

অভিযোগ পাওয়া গেছে,  চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ তিনি বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। ওই মাসে ২৩ কার্যদিবসের মধ্যে মাত্র ৫ দিন তিনি বিদ্যালয়ে যান। এরপর থেকে আর বিদ্যালয়ে যাননি। বিদ্যালয়ে না গিয়েও তিনি ৪র্থ শ্রেণির দুই কর্মচারীর মাধ্যমে শিক্ষক হাজিরা খাতা বাড়িতে নিয়ে স্বাক্ষর করছেন। একইভাবে মাসিক বেতন-ভাতার সরকারি অংশ তোলার প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর করেছেন বাড়িতে বসে। এরপর টাকা উত্তোলন করছেন।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমানের মাসিক বেতন ২৪ হাজার টাকা। সেই হিসাবে বিদ্যালয়ে না গিয়েও গত আটমাসে ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা উত্তোলন করছেন তিনি। অন্যদিকে একটি বিদ্যালয়ে কর্মরত থেকেও ওই প্রধান শিক্ষক বাকেরগঞ্জ উপজেলার চামটা কৃষ্ণ নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একইপদে যোগদানের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রধান শিক্ষকের এসব কর্মকা-ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয়টি ভালোভাবে পরিচালনা করার জন্য এ ধরণের ফাঁকিবাজ প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়ে দক্ষ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নওয়াব হোসেন নয়ন বলেন, চাকরি বিধি অনুযায়ী একনাগারে ১ মাস উল্লেখযোগ্য কারণ ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তিনি বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন না। অথচ মাসের পর মাস কি করে বিদ্যালয়ে না গিয়ে বাড়িতে বসেই বেতন ভোগ করে আসছেন ওই প্রধান শিক্ষক? এর আইনগত একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, এই বিদ্যালয় থেকে অব্যাহতির জন্য সভাপতির বরাবর আবেদন জমা দিয়েছি। তাছাড়া কম্পিউটার বাড়িতে থাকার কারণে অফিসের সকল কাজ বাড়িতে বসেই করছি।

প্রধান শিক্ষকের এমন কাজে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। তবে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সৈয়দ গোলাম মাসুদ বলেন, প্রধান শিক্ষককে মানবিক কারণে অনেক সুযোগ দিয়েছি। এখন আর সেই সময় নেই। দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকায় বিধিমোতাবেক তার বেতন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বেতাগী উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার এসএম মাসুদুর রহমান বলেন, সর্বশেষ ৭ নভেম্বর বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়েও প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। এর আগেও একাধিকবার তাকে না পাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে শিক্ষক হাজিরা খাতাটি জব্দ করে নিয়ে আসা হয়। অন্য শিক্ষকদের জন্য নতুন হাজিরা খাতা খুলে দেওয়া হয়। এরপরেও  তিনি কাউকে না জানিয়ে অদ্যাবধি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। অথচ গত (অক্টোবর) মাসের সরকারি বেতন-ভাতা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেছেন।

এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহীদুর রহমান বলেন, নতুন আসায় বিষয়টি সম্পর্কে এখনও অবহিত নই। তবে জেনে সত্যতা থাকলে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজীব আহসান বলেন, নতুন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।

স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ - dainik shiksha ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত - dainik shiksha টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059900283813477