বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন ঘুষ দিয়েও পেনশন না পাওয়া শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন ঘুষ দিয়েও পেনশন না পাওয়া শিক্ষক

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি |

৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়েও পাননি পেনশনের টাকা। টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন কিশোরগঞ্জের কালটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সানাউল করীম। এক বছর অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) কাটার পর ৬ মাস অতিবাহিত হলেও ফাইলটি তৈরি হয়নি। পরে শিক্ষকের মৃত্যুর খবরে তড়িঘড়ি করে ফাইল পাঠানো হয়েছে জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসারের কার্যালয়ে।

ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও কন্যার দাবি, পেনশনের টাকা না পাওয়ায়  হৃদরোগে আক্রান্ত শিক্ষক মো. সানাউল করীম উপযুক্ত চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে পারেননি। এ কারণে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে বাড়িতে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন।

সহকারী শিক্ষক মো. সানাউল করীম। ছবি : কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

গত ১২ নভেম্বর রাতে তাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ভোর ৪টার দিকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে ভর্তির পর ভোর ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়। 

অভিযোগে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের চিলাকারা গ্রামের মো. সানাউল করীম পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কালটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অবসরে যান।

চলতি বছরের ২০ মে তার অবসরোত্তর ছুটিও (পিআরএল) শেষ হয়। নিয়মানুযায়ী পিআরএল শুরু থেকেই পেনশন ফাইল প্রস্তুতির কাজ শুরু করার কথা। কিন্তু পিআরএল শেষ হওয়ার পরও পেনশন ফাইল প্রস্তুতির কাজ শুরু না হওয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত শিক্ষক দিশেহারা হয়ে পড়েন।

তার চিকিৎসাসেবার জন্য বিপুল অঙ্কের টাকার প্রয়োজনে দ্রুত পেনশন ফাইল নিষ্পত্তির ব্যবস্থার জন্য কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী কামরুল হাসানের কথামতো ধারদেনা করে তার হাতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ তুলে দেন তিনি। এরপর আরও টাকার জন্য টালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করে ফাইলটি আটকে রাখেন।

এ পরিস্থিতিতে হৃদরোগে আক্রান্ত শিক্ষক সানাউল করীম গুরুতর অসুস্থ হয়ে বাড়িতে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। গত বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাতে তাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় নিয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে ভর্তির পর শুক্রবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। 

তার মৃত্যুর খবরে দীর্ঘদিন পর তড়িঘড়ি করে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ফিক্সেশন রিভাইজের জন্য জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসারের কার্যালয়ে পেনশন ফাইল পাঠান ওই অফিস সহকারী কামরুল হাসান। 

কামরুল হাসান দাবি করেন, নানা জটিলতার কারণে ফাইলটি চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করা যাচ্ছিল না। এসব শেষ করে চলতি সপ্তাহে ফাইলটি জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ সময় ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। 

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এনামূল হক খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তিনি সময়মতো ওই পেনশন ফাইলে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। এতদিন আটকে রাখার এবং ঘুষ নেয়ার বিষয়টি তিনি অবগত ছিলেন না।

এদিকে শিক্ষক মো. সানাউল করীমের কলেজপড়ুয়া মেয়ে স্মৃতি আক্তার জানান, কেন জানি কামরুল হাসান ঘুষের ওই ৫০ হাজার টাকা থেকে আজ (বৃহস্পতিবার) ২০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে গেছেন। আগামী রোববার আবার অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে বলেছেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক জানান, এ ঘটনা নজিরবিহীন। আজকাল কয়েক দিনের মধ্যেই পেনশন কেস নিষ্পত্তি করা হয়। এ সময় ৫০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ এবং দীর্ঘদিন ফাইল আটকে রাখার বিষয়ে তদন্ত করে জড়িত অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পেনশন ফাইল নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবেন বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক।

কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034000873565674