বিমানবন্দরে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের নিয়ম - দৈনিকশিক্ষা

বিমানবন্দরে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের নিয়ম

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্প্রতি অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৭ মার্চ)  বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদটি লিখেছেন সায়েদুল ইসলাম। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন প্রথম ধাপের নিরাপত্তা পার হয়ে দ্বিতীয় ধাপের আগে অস্ত্র থাকার ঘোষণা দেন। শনিবার শর্টগানসহ এক ব্যক্তিতে বিমানবন্দরে আটকের পর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে গত ১১ই মার্চ ঘোষণা ছাড়াই অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশের অভিযোগে যশোরের একজন নেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

কিন্তু বিমানে অস্ত্র পরিবহনের নিয়ম কী?


হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক, গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবদুল্লাহ আল ফারুক বলছেন, যেকোনো বিমানে অস্ত্র পরিবহনের কিছু নিয়মনীতি রয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী:

- প্রথমেই যাত্রীকে বিমানবন্দরের প্রবেশ মুখেই ঘোষণা দিতে হবে যে, তার কাছে অস্ত্র রয়েছে।

- তিনি যে বিমানের যাত্রী, সেই বিমান সংস্থার কাছে অস্ত্র, লাইসেন্স, গুলি সবকিছু জমা দিতে হবে।

- বিমান সংস্থা থেকে তাকে একটি রসিদ সংগ্রহ করতে হবে।

- এই অস্ত্র এবং গুলি বিশেষ বক্সে করে বিমানের পাইলটের তত্ত্বাবধানে গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হবে।

- সেখানে বিমানবন্দর থেকে বের হবার সময় তিনি বোর্ডিং পয়েন্ট থেকে নিজের অস্ত্রটি আবার বুঝে নেবেন।

উল্লেখ্য যে, কিন্তু বিমান চলার সময় তিনি সঙ্গে অস্ত্র রাখতে পারবেন না।


গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবদুল্লাহ আল ফারুক বলছেন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের ক্ষেত্রে যাত্রীর আরো কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

"যেমন যে দেশে তিনি যাচ্ছেন, সেখানে এই অস্ত্র বহনের অনুমতি তার রয়েছে, এরকম প্রমাণ লাগবে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র দরকার হবে যে, তিনি বিদেশে অস্ত্রটি নিয়ে যেতে পারবেন।''

তিনি জানান, যেকোনো ব্যক্তি বিমানবন্দরে প্রবেশে করার সময় বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা ধাপ পার হয়ে যেতে হয়। যেখানে ব্যক্তির শরীরে তল্লাশির পাশাপাশি তার সঙ্গে থাকা মালামালও স্ক্যানিং করা হয়। কোন অস্ত্র থাকলে এসব নিরাপত্তা ধাপে অবশ্যই ধরা পড়বে।

মি. ফারুক বলছেন, যদি কোন যাত্রী এরকম ঘোষণা না দিয়ে বৈধ অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করেন, তাহলে সেটি একটি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে। তখন প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।


অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশের প্রবণতা কি বাড়ছে?


বিমানে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে যখন ১৪ই ফেব্রুয়ারি একজন ব্যক্তি "নকল পিস্তল" ঠেকিয়ে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। তার ওই "নকল" পিস্তলটি বহনের বিষয়টি ধরতে পারেনি ঢাকার বিমান কর্তৃপক্ষ। ওই ঘটনায় কয়েকজন বিমান কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

পাঁচই মার্চ নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন এবং আটই মার্চ মামুন আলী নামের আরেকজন যাত্রী নিজের অস্ত্র নিয়ে প্রথম চেকিং পার হয়ে যান। পরবর্তীতে তারা অবশ্য অস্ত্রের বিষয়টি ঘোষণা দিয়ে গন্তব্যে নিয়ে যান। কিন্তু মার্চ মাসের প্রথম অর্ধেকে বিমানবন্দরে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের তিনটি ঘটনা কি প্রমাণ করে যে, বিমানে অস্ত্র নিয়ে চলাচলের প্রবণতা বাড়ছে? নাকি এই প্রবণতা আগেও ছিল, কিন্তু এখন সতর্কতা বৃদ্ধির কারণে সেটি সহজে ধরা পড়ছে?

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এম মহিবুল হক বলেছেন, "এক শ্রেণীর মানুষ মিডিয়া কাভারেজ পেতে অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে যাতায়াত শুরু করেছেন।'' তবে গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবদুল্লাহ আল ফারুক বলছেন, ''আমরা সবসময়েই এ বিষয়ে সতর্ক থাকি। সেই সতর্কতার কারণেই কেউ অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করলে ধরা পড়ছে।''


শাহজালাল বিমানবন্দরের সাবেক পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব) জাকির হাসান বলছেন, ''অস্ত্র নিয়ে বিমানে চলাচল সবসময়েই ছিল। দেখা যায় মন্ত্রী, এমপি বা প্রভাবশালী লোকজনের দেহরক্ষীরা অস্ত্র বহন করেন। তবে তারা সবসময়েই নিয়ম মেনে অস্ত্র জমা দিয়ে ভ্রমণ করতেন।''

''বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে ঘটতো। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও অস্ত্র বহনের ঘটনা দেখা যেতো, যেমন বিভিন্ন শুটিং টিম বহন করতেন। তবে সেজন্য তারা নিয়মকানুন অনুমতি নিয়েই করতেন।''

তিনি বলছেন, ''ঘোষণা না দিয়ে প্রবেশের ঘটনা আমার সময়ে একবারই ঘটেছিল। তবে দ্বিতীয় চেকিংয়ের সময় সেটি ধরা পড়ে। কিন্তু এরকম প্রবণতা খুব বেশি দেখিনি।''

সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, বিমানবন্দরে অস্ত্র জমা দেয়ার বিধানের কথা পরিষ্কারভাবে লেখা রয়েছে। বিশেষ করে ফেব্রুয়ারিতে বিমানের ছিনতাই চেষ্টার ঘটনার পরেও কেন মানুষজন অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন - সেটা একটা অবাক করার মতো ব্যাপার।

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030980110168457