বিল গেটস গরিবের করোনা টিকার ভরসা - দৈনিকশিক্ষা

বিল গেটস গরিবের করোনা টিকার ভরসা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কখন কী বলছেন, সেদিকে সবার নজর এখন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই এ নিয়ে তাঁকে নিয়ে নানা রকম কথাবার্তাও রটেছে। তবে সবকিছু উড়িয়ে দিয়ে বিল গেটস তাঁর অর্থসম্পদ খরচ করে চলেছেন করোনার টিকা উদ্ভাবনের পেছনে। গরিব দেশগুলো যাতে কম খরচে টিকা পেতে পারে, সে জন্য নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গেটস।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট রিকোডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিল গেটসের কথাবার্তার ওপর যতটা আলোকপাত করা হচ্ছে, ততটা তাঁর প্রচেষ্টার ওপর করা হচ্ছে না। গত শুক্রবার বিল গেটস বলেছেন, যদি কার্যকর টিকা পাওয়া যায়, তবে বিশ্বের দরিদ্র মানুষগুলোকে তা সরবরাহের জন্য তিনি ও তাঁর দাতব্য সংস্থা ১৫ কোটি ডলার দান করবেন।

করোনাভাইরাসের প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধনী বিল গেটসের অন্যতম বৃহৎ প্রতিশ্রুতি এটি। দ্য গেটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এ অর্থ বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটকে দেওয়া হচ্ছে। এ অর্থে ১০ কোটি ডোজ টিকা তৈরি করা হবে। প্রতি ডোজ টিকার দাম ধরা হতে পারে মাত্র ৩ মার্কিন ডলার।

গত দুই দশকে টিকা তৈরির ক্ষেত্রে শীর্ষ নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে এগিয়ে আছেন বিল গেটস। ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে ৪০০ কোটি ডলার খরচ করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বিল গেটস উদ্বেগ জানিয়ে বলছেন, ধনী দেশগুলো যদি অতিরিক্ত খরচ করে চিকিৎসাব্যবস্থা নিজেরা হস্তগত করে, তবে গরিব দেশগুলো চিকিৎসার অভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।

বিল গেটস চলতি সপ্তাহে ব্লুমবার্গকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘টিকার বিষয়টি কেবল যাতে ধনী দেশগুলোর হাতে না যায়, তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

গেটস বলেছেন, যেসব টিকা উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য সাশ্রয়ী দামে তৈরি করা যাবে, তিনি সেগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও নোভাভ্যাক্সের টিকা। এ টিকা দুটি কম খরচে সহজে উৎপাদন করা যায়।

রিকোড জানিয়েছে, বিল গেটস তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ খরচ করে টিকার সর্বনিম্ন দামের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এসব টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করবে এবং ৯১টি স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশে দেওয়া হবে।

দ্য গেটস ফাউন্ডেশন করোনাভাইরাস মহামারিতে এখন পর্যন্ত মোট ৫০ কোটি মার্কিন ডলার দান করেছে। এর মধ্যে গত শুক্রবার যে ১৫ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এসেছে, তা মূলত সুদহীন ঋণ। ৫০ কোটি ডলারের অধিকাংশই ব্যয় হবে টিকা তৈরির বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজে।

করোনাভাইরাসের কোন টিকাটি কার্যকর ও সফল হবে, তার ওপর নির্ভর করছে বিল গেসটের সংস্থাটির পরিকল্পনা। এখন পর্যন্ত ২৮টি সম্ভাব্য টিকা মানবপরীক্ষার পর্যায়ে পৌঁছেছে। একেকটি টিকা একেক রকম ও ভিন্ন উপাদানে তৈরি হচ্ছে। মডার্না ও ফাইজারের মতো শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকটি টিকা বেশি খরুচে। কারণ, এগুলো আরএনএ টিকা, যা তৈরিতে খরচ বেশি। এনপিআরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মডার্নার টিকার দাম হতে পারে ৩২ থেকে ৩৭ মার্কিন ডলার আর ফাইজারের টিকার দাম পড়তে পারে প্রায় ২০ মার্কিন ডলার।

বিল গেটস বলেন, টিকা যে উপায়ে তৈরি হয় এবং তার উন্নয়নে যে কঠিন ধাপ পেরোতে হয়, তাতে এ টিকা কেবল ধনী দেশগুলোকে সাহায্য করতে পারবে। এই টিকা কম দামে সারা বিশ্বের উপযোগী হতে পারবে না।

টিকা তৈরিতে সফল হলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফার কথাও আসে। তবে টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কোনো মুনাফা না রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলছে, যতটা সম্ভব টিকার দাম কম রাখা হবে। কম খরচে টিকা পেতে তাই বিল গেটসের প্রভাব জরুরি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তিনি এ খাতে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ শুরু করেছেন। তিনি অক্সফোর্ড ও নোভাভ্যাক্সের টিকার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের জনসন অ্যান্ড জনসনের সঙ্গেও কম খরচে টিকা তৈরির বিষয়ে আলোচনা করছেন।

বিল গেটস শুধু টিকা তৈরিতে অর্থ সাহায্যই করছেন না, তিনি টিকা তৈরিতে বৈষম্য না করার জন্য আওয়াজও তুলেছেন। তিনি মার্কিন সরকারকে বার্তা দিয়ে বলেছেন, মার্কিন সরকারের শুধু তাদের নাগরিকদের নিয়ে ভাবলেই চলবে না। টিকার জাতীয়তাবাদ বাদ দিয়ে আরও দাতব্যকাজে এগিয়ে আসতে আইনপ্রণেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে - dainik shiksha তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির বেশি হলে স্থানীয়ভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে পারে বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত - dainik shiksha বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044782161712646