বিশ্বকাপে বাংলাদেশের টপ স্কোরার সেই রিয়াদই - দৈনিকশিক্ষা

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের টপ স্কোরার সেই রিয়াদই

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ভাল করার তীব্র ইচ্ছে, প্রচন্ড আকাঙ্খা আর দৃঢ় সংকল্প থাকলে অনেক অসাধ্যও সাধন করা যায়। সব প্রতিকুলতা আর ঘাটতি পুষিয়ে সফল হওয়া যে সম্ভব- তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

মাঝে কোথাও ছিলেন না এ ৩৭ বছর বয়সী ক্রিকেটার। বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দলের আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের সিরিজ এবং এশিয়া কাপে দলের বাইরে ছিলেন।

কি করে থাকবেন? তিনিতো হিসেবের মধ্যেই ছিলেন না। বিসিবি, টিম ম্যানেজমেন্ট, কোচ ও নির্বাচক- কারো বিশ্বকাপ চিন্তা-ভাবনা, লক্ষ্য ও পরিকল্পনার মধ্যেই ছিলেন না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

তাকে বাইরে রেখেই বিশ্বকাপ স্কোয়াড সাজানোর চিন্তা ভাবনা চূড়ান্ত করা ছিল। ভাবা হয়েছিল রিয়াদের বয়স হয়েছে, ফিটনেসে ঘাটতি। ক্ষিপ্রতা, চপলতা কমে গেছে। ব্যাটের জোরও নিশ্চয়ই কমেছে। হয়তো তরুণদের সাথে কুলিয়ে উঠতে পারবেন না।

তাই রিয়াদকে রেখে মিডল অর্ডারের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে ভাবা হয়েছিল আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং শামীম পাটোয়ারীকে; কিন্তু তারা ক্রমাগত ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অনেকটা বাধ্য হয়েই রিয়াদকে ১৫ জনের বিশ্বকাপ দলে নিতে বাধ্য হন নির্বাচকরা।

মোটকথা, বেশ কিছুদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থেকে বিশ্বকাপ খেলতে যান রিয়াদ। তার মানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলাকে মানদণ্ড ধরলে বিশ্বকাপের মত বিশাল মঞ্চে ওঠার আগে সেভাবে প্রস্তুতও ছিলেন না তিনি।

বোঝাই যাচ্ছিলো, হেড কোচ ও নির্বাচকদের সুনজরে ছিলেন না। আর বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে রীতিমত বিমাতাসুলভ আচরণেরও শিকার হন। প্রথম ম্যাচে একাদশে জায়গা পেলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরের ম্যাচে ড্রপ বাদ দেয়া হয়। অবশেষে ব্যাট করার সুযোগ পান তৃতীয় ম্যাচে গিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। চেন্নাইয়ের ওই ম্যাচে রিয়াদকে খেলানো হয় ৮ নম্বর ব্যাটার হিসেবে।

অথচ, এত নিচে নেমেও রান করার তীব্র আকাঙ্খা ফুটে ওঠে তার ব্যাটে। কিউই বোলারদের বিপক্ষে ৮ নম্বরে নেমেও রান করার অদম্য স্পৃহা বুকে ৪৯ বলে ৪১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে ফেলেন তিনি। দেখিয়ে দেন, জানিয়ে দেন এবং বুঝিয়ে দেন- যেখানেই খেলানো হোক না কেন, আমার রান ক্ষুধা আছে। আমি রান করতে চাই। নিজেকে মেলে ধরতেও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আমি।

এ কারণে আট নম্বরে নেমে বোলারদের সাথে নিয়েও রান করে গেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর পর্যায়ক্রমে ৭ নম্বর থেকে ৬-এ প্রমোশন পান। এরপর ভারতের শক্তিশালী বোলিংয়ের বিপক্ষে সমান তিনটি করে ছক্কা ও বাউন্ডারিতে ৩৬ বলে ৪৬, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১১১ বলে ৪ ছক্কা ও ১১ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১১১, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২০, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭০ বলে ৫৬, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ২২ আর সর্বশেষ শনিবার পুনেতে শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ২৮ বলে তিন ছক্কায় ৩২ রানের এক আক্রমণাত্মক ইনিংস উপহার দেন রিয়াদ।

সবচেয়ে বড় কথা, যেদিন যেখানে তাকে খেলানো হয়, প্রতিটি পজিসনে ভাল খেলে রান করেন রিয়াদ। এর মধ্যে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ৬ নম্বরে নেমে শতরান করে রীতিমত সবাইকে লজ্জায় ফেলে দেন।

রিয়াদ উপাখ্যানের সেটাই শেষ নয়। শেষ পর্যন্ত সবাইকে ভুল প্রমাণ করে বর্ষিয়ান রিয়াদই এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে টপ স্কোরারও হয়েছেন। ব্যাটে মোটামুটি ধারাবাহিকভাবে ছিল। তার ব্যাট থেকে ৮ ম্যাচের ৭ ইনিংসে একটি শতক ও অর্ধশতকসহ এসেছে মোট ৩২৮ রান।

শুধু রান করায়ই নয়, ব্যাটিং গড় (৫৪.৬৬) ও ছক্কা (১৪ টি) হাঁকানোয়ও ব্যাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সবার ওপরে রিয়াদ। তরুণ বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (স্ট্রাইকরেট ৯৫.৩৯) ছাড়া বাকি ব্যাটারদের চেয়ে স্ট্রাইকরেটটাও রিয়াদেরই (৯১.৬২) বেশি। রান তোলায় রিয়াদের পরে দ্বিতীয় স্থানটি লিটন দাসের (২৮৪)। তৃতীয় স্থানে নাজমুল হোসেন শান্ত (২২২)। এরপর মুশফিকুর রহিম (২০২) ও মেহেদি হাসান মিরাজ (২০১)।

আগের বিশ্বকাপে ৬০৬ রান করা সাকিব আল হাসান এবার সুপার ফ্লপ। ৭ ম্যাচে অধিনায়ক সাকিবের সংগ্রহ ১৮৪ রান। এছাড়া দুই তরুণ উইলোবাজ বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ তামিম (৯ ম্যাচে ১৪৫) ও তাওহিদ হৃদয়ও (৭ খেলায় ১৬৪) সুবিধা করতে পারেননি।

এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে - dainik shiksha একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে ভর্তি পরামর্শ: কলেজ পছন্দ জরুরি - dainik shiksha ভর্তি পরামর্শ: কলেজ পছন্দ জরুরি শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচনী হাটে এমপিও শিক্ষকের কপাল ফাটে অন্ত*র্বাসে লুকানো ডিভাইস, ১০ মিনিটেই শেষ পরীক্ষা - dainik shiksha অন্ত*র্বাসে লুকানো ডিভাইস, ১০ মিনিটেই শেষ পরীক্ষা ১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থী, সবাই ফেল - dainik shiksha ১৩ শিক্ষকের ১৪ শিক্ষার্থী, সবাই ফেল সনদ জালিয়াতিতে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর - dainik shiksha এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065431594848633