বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই দেড় বছরের সেশনজট - দৈনিকশিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই দেড় বছরের সেশনজট

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

সাধারণত প্রতিবছর ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বর্ষের ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু করোনার কারণে গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাদের ‘অটোপাস’ দেওয়া হয়েছে। এরপর এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ওই শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারেনি। বর্তমানে করোনা সংক্রমণের যে পরিস্থিতি, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপ্রক্রিয়া আরো বেশি অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। রোববার (৪ জুলাই) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন শরীফুল আলম সুমন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, শিক্ষাবর্ষের হিসাবে জুলাই থেকে শিক্ষার্থীদের সেশন শুরু হওয়ার কথা। গত বছরের শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে এক বছর পার করে ফেলেছে। এ অবস্থায় আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারলেও ডিসেম্বর-জানুয়ারির আগে ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে না। সে হিসাবে ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রায় ১৭ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তির আগেই দেড় বছরের সেশনজটে পড়ে গেছে।

আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে ভর্তির আবেদন গ্রহণ করেছে। বড় কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তিনটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করলেও করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তারিখ পিছিয়েছে। আবার যেসব বিশ্ববিদ্যালয় জুলাইয়ের শেষে বা আগস্টের শুরুতে পরীক্ষা নিতে চেয়েছিল তাদের ভর্তি পরীক্ষার তারিখও পেছাতে হবে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির আবেদন গ্রহণ করলেও এখনো পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেনি।

উত্তীর্ণদের বড় একটি সংখ্যক শিক্ষার্থী প্রতিবছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোয় ভর্তি হয়। জিপিএর ভিত্তিতে অনলাইনের মাধ্যমে এসব কলেজ ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। কিন্তু এবার তারা সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছে না। কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কার্যক্রম শুরু করে। সাধারণত যেসব শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায় না, তারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে ভর্তি হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা না হওয়ায় এবার এখনো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারছে না। 

অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও কয়েকটি ছাড়া বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা সুযোগ পায় না তারাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।

দীর্ঘদিন পড়ালেখার বাইরে থাকায় শিক্ষার্থীরাও নানা ধরনের সমস্যার পড়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে প্রায় সোয়া বছর শিক্ষার্থীরা বই-খাতার বাইরে। দীর্ঘ এই অবসরে অনেক শিক্ষার্থী চাকরি, কেউ ব্যবসা, কেউবা কৃষিকাজ করছে। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী আর পড়ালেখায় না-ও ফিরতে পারে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

গত বছরের পর চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষাও এখন পর্যন্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভবও নয়। এসব পরীক্ষার্থীকে যদি অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ করানো হয়, তাহলে এদেরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে। এতে বড় ধরনের সেশনজট সৃষ্টি হতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৩১ জুলাই চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটের তত্ত্বীয় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু করার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভর্তির আবেদন গ্রহণ শেষে গত ১০ জুন মূল ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। করোনার অবনতি হলে তা স্থগিত করা হয়। প্রাক-নির্বাচনী ও চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ১০ দিন আগে জানানো হবে বলে বলা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন গ্রহণ চলছে। এখনো তারা ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২০ আগস্ট থেকে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১৬ আগস্ট থেকে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে গুচ্ছভুক্ত ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন গ্রহণ গত ২৫ জুন শেষ হয়েছে। মোট তিন লাখ ৬১ হাজার আবেদন পড়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে আবেদন পড়েছে এক লাখ ৯২ হাজার। সর্বোচ্চ দেড় লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে পারবে তারা। প্রাথমিক বাছাই শেষে বাকি শিক্ষার্থীরা বাদ পড়বে। সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৪ সেপ্টেম্বর এবং তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার তারিখ আগামী ১২ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাবিষয়ক টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, ‘প্রাথমিক বাছাইয়ের জন্য শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক নম্বর জানা দরকার। কিন্তু চলমান লকডাউনে বোর্ডগুলো বন্ধ। ফলে আমরা কাজ করতে পারছি না। প্রাথমিক বাছাই শেষে শিক্ষার্থীদের ফের আবেদন করতে হবে। এর মধ্যে আমরা ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঠিক করব। তবে বর্তমানে করোনার যে অবস্থা তাতে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেও লাভ নেই। আমরা করোনা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য অপেক্ষা করছি।’

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033750534057617