বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার অনুকূল পরিবেশ জরুরি - দৈনিকশিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার অনুকূল পরিবেশ জরুরি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাপকাঠি হচ্ছে শিক্ষা ও গবেষণা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার যথাযথ পরিবেশ সৃষ্টি না করতে পারায় আমরা পিছিয়ে পড়ছি বারবার। লন্ডনভিত্তিক শিক্ষাবিষয়ক সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের প্রকাশিত সর্বশেষ র্যাংকিংয়ে বিশ্বের সেরা ১ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় জায়গা পায়নি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যার মূল কারণ শিক্ষা ও গবেষণার ওপর জোর না দেওয়া ও অনুকূল পরিবেশ না থাকা। শিক্ষকদের মধ্যে যখন গবেষণা আর শিক্ষা মুখ্য বিষয় না হয়ে বাণিজ্যিকীকরণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয় তখন শিক্ষক হয় দুর্বৃত্ত, শিক্ষা হয় ভূলুণ্ঠিত আর শিক্ষার্থী হয় নির্যাতিত। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, আমরা যদি এই কালো অধ্যায়ের পেছনের কারণগুলো দেখি তাহলে দেখা যায়—বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বাজেট, শিক্ষা ও গবেষণার প্রতিকূল পরিবেশ, গবেষণার জবাবদিহিতা না থাকা, দুর্নীতি, ছাত্র ও শিক্ষকদের কালো রাজনীতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির আঁতুড়ঘর হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার চেয়ে রাজনীতি মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র ও শিক্ষকরা যতটা না গবেষণার দিকে ছুটছে তার চেয়েও বেশি ছুটছে রাজনীতির দিকে। এর পেছনে অবশ্যই কারণও ওপেন সিক্রেট। যেখানে পদমর্যাদা নির্ধারণ করা হয় রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর নির্ভর করে সেখানে এমনটি হওয়া অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রতিনিয়ত রাজনীতি নিয়ে বিস্তর গবেষণা এবং দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগে থাকায় শিক্ষা নিয়ে গবেষণার আর সময় ও পরিস্থিতি থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে কালো রাজনীতির প্রভাব দূর করা না গেলে আরো পিছিয়ে পড়তে হতে পারে।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বাজেটও এই ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে, গবেষণা ও বিশেষ গবেষণা মিলিয়ে এই খাতে বিশ্ববিদ্যালয় এবার বরাদ্দ করেছে ১৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র ২.১ শতাংশ। বাজেটের আকার বিগত বছরের চেয়ে ৯.৩৫ শতাংশ বাড়লেও গবেষণায় বরাদ্দ কমছে ২.৮৪ শতাংশ। অথচ উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে গবেষণার ওপর বেশি জোর দেওয়া উচিত ছিল। তারপরও যদি গবেষণার যথাযথ পদক্ষেপ ও সুষ্ঠু পরিবেশ থাকত তাহলে এই ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া বাধা হয়ে দাঁড়াত না। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গবেষণার বাজেট ও পরিবেশ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত।

গবেষণার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে না আসাও গবেষণায় পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। আমাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা কেবল তাদের পদোন্নতির জন্য যতটুকু গবেষণা করা দরকার ততটুকু গবেষণায় করে থাকেন। ফলে একজন শিক্ষক অধ্যাপক হওয়ার পর গবেষণা ক্ষেত্রে তার যে দায়বদ্ধতা রয়েছে সেটি একটি ঐচ্ছিক বিষয়ে পরিণত হয়। এই ক্ষেত্রে স্বচ্ছ জবাবদিহিতার প্রয়োজন। শিক্ষকদের দেশের স্বার্থেই শিক্ষা ও গবেষণার সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত রাখা প্রয়োজন। শিক্ষকদের শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে পারফরমেন্সের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিশ্লেষণ করা উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় একটি দেশকে ধারণ করে। তাই দেশের সুনাম ও অগ্রগতির লক্ষ্যে শিক্ষা ও গবেষণার ওপর জোর দেওয়া উচিত এবং অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

আমজাদ হোসেন হৃদয় : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040130615234375