বরগুনার বেতাগীতে তিনটি প্রাইমারি স্কুলে প্রতিটিতে দুইজন করে ছয়জন প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এ নিয়ে মামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নিয়ে যোগদানের শুরু থেকে এখনো তাদের মধ্যে বিরোধ চলছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে নতুন হাজিরা খাতা খুলে এবং মাসিক কার্যবিবরণী ফরমে প্রধান শিক্ষকরা আলাদা স্বাক্ষর করে উপজেলা শিক্ষা অফিসে এর রিটার্ন জমা দিচ্ছেন।
জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় এ উপজেলার ৪৬ জন সহকারী শিক্ষককে গত ২৮ জুন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্বে গত ৪ জুলাই বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস শূন্যপদে তাদের পছন্দের স্কুলে পোস্টিং দেয়। এর মধ্যে বেতাগী বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সহকারী শিক্ষক মোসাঃ দিল ফিরুজাকে নবগঠিত কদমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কমিউনিটি), একই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক জ্যোতিকা রানিকে নবগঠিত কিসমত ভোলানাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কমিউনিটি) এবং বাসন্ডা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মোসাঃ শাহানাজ বেগমকে উত্তর ঝোপখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (কমিউনিটি) পদায়ন করা হয়। কিন্তু সেখানে আগে থেকে নবগঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগকৃত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পালন করে আসায় ওই সকল প্রতিষ্ঠানে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দুইমাস ১০ দিন ধরে দুইজন করে প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষক পদে এ পদায়নের ফলে ঐ সকল প্রতিষ্ঠানে দ্বন্দ্ব ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু সালেহ জানান, ‘চলতি দায়িত্বে দেওয়া প্রধান শিক্ষক তাদেরকে প্রত্যাহার করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য গত ১০ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট দুই প্রধান শিক্ষক লিখিত আবেদন করেছেন।
বেতাগী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো হাত নেই। আমি শুধু শূন্যপদে পদের তালিকা জেলায় প্রেরণ করেছি। জেলা অফিস আইন-কানুন মেনেই ঐ শিক্ষকদের পদায়ন করেছে এবং শূন্যপদে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। আমি অধিদপ্তরের কিংবা আদালতের কোনো নির্দেশনা পাইনি।’ আর বেতন বন্ধের হুমকি দেওয়ার বিষয় অস্বীকার করে বলেন, ‘মাসিক সমন্বয় সভায় বরং ঐ শিক্ষকদের সরকারি নিয়ম মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমএম মিজানুর রহমান বলেন,‘নীতিমালা অনুসারেই তাদের পদায়ন দেওয়া হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানে দুইজন প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালন করছেন বিষয়টি অবগত নয়। এ ধরনের হয়ে থাকলে বিধান অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’