প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য প্রমাণ করতে পারলে দাবী মানার বিষয়টি বিবেচনা করবে সরকার। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনরত শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এ কথা বলেছেন। এসময় শিক্ষক নেতাদের পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান মন্ত্রী।
মন্ত্রী শিক্ষক নেতাদের অনশন ভাঙিয়ে শহীদ মিনার ত্যাগ করেন। মন্ত্রী চলে যাওয়ার পরও অনেক সাধারণ শিক্ষকেরা সেখানে অবস্থান করেন। পরে পুলিশ তাঁদের শহীদ মিনার এলাকা ত্যাগ করতে হ্যান্ড মাইকে অনুরোধ জানান।
এর আগে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরই সোমবার থেকে আমরণ অনশন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
শনিবার থেকে অনশনরত শিক্ষকদের কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন শিক্ষক নেতাদের ভুলে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
আগামাীকাল (২৬ ডিসেম্বর) শিক্ষক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মন্ত্রী, সেখানে আন্দোলনরত নেতাদের প্রমাণ করতে হবে বৈষম্য কোথাও কীভাবে। সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশনরত শিক্ষকদের কাছে পৌঁছানোর সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
মন্ত্রীর ঘোষণায় শিক্ষকরা খুশী হতে পারেননি বলে জানা যায়। তারা সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চান মন্ত্রীর কাছে। এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই আমি এখানে এসেছি ।’
শহীদ মিনার থেকে মন্ত্রী ফিরে যাওয়ার সময় শাহীনুর নামের একজন নেতাকে হাতজোড় করে মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে শোনা যায়, ‘আমাকে মাফ করে দেবেন, আমি কথা রাখতে পারিনি।’
গত ২৩ ডিসেম্বর (শনিবার) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের উদ্যাগে এ অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। মহাজোটের অধীনে সহকারী শিক্ষকদের ১০টি সংগঠনের হাজার হাজার শিক্ষকরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে যোগ দেন অনশন কর্মসূচিতে। ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় খালি হাতে ফেরেন শিক্ষকরা।
তাদের দাবি, আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে (মূল বেতন ১০ হাজার ২০০) বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকরা এ বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে ১১তম গ্রেডে ( মূল বেতন ১২ হাজার ৫০০) চান।