রাজধানীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অবৈধ অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেনকে একাধিক তদন্তের মাধ্যমে অবৈধ ঘোষণা করা হলেও তাকে সরাতে ব্যর্থ হয়েছে শিক্ষা প্রশাসন। প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়রদের মধ্যে একজনকে ভারপ্রাপ্ত করতে বলা হলেও তা পারছে না অধিদপ্তর। অবৈধভাবে নিযুক্ত ও কর্মরত ফরহাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানটির এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এমপিওর টাকা তুলতে পারছেন না কয়েকবছর ধরে। চরম ভোগান্তি ও ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তারা। গত কয়েকবছরে একাধিকবার অধিদপ্তরে এ বিষয় লিখিতভাবে জানানো হলেও কর্তারা বলছেন নতুন করে আবেদন দেয়ার জন্য। আর এদিকে প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত টিউশন ফির টাকা তুলে তা ব্যাংকে জমা না রেখে অবৈধ পদে টিকে থাকতে অঢেল খরচ করার অভিযোগ ফরহাদের বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ ঘটনায় ফরহাদ হোসেনের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশও স্থগিত করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এরপরও তিনি নিয়মিত অফিস করছেন, শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এমনকি বিভিন্ন অফিস আদেশ ও নথিতে স্বাক্ষর করছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, কে সিনিয়র, কাকে দায়িত্ব দেবেন তা নির্ধারণ করতে পারছে না অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা। আবার আদালতের আদেশ অধিদপ্তরে পৌঁছলেও বলা হচ্ছে পাওয়া যায়নি।
সূত্র জানায়, তদন্তের আলোকে বিধি অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। মাউশি যখন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে তখনই হাইকোর্টে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বোর্ডের সেই চিঠির কার্যকারিতা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। গত ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
আরও পড়ুন : মনিপুর হাইস্কুলের অধ্যক্ষ পদে থাকতে পারবেন না ফরহাদ
আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান খান জানান, এই আদেশের ফলে মনিপুর স্কুলের অধ্যক্ষ পদে ফরহাদ হোসেনের আর দায়িত্ব পালনের আইনগত কোনো সুযোগ নেই। অথচ ফরহাদ হোসেন আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
ঢাকা বোর্ডের তদন্তে বলা হয়, ২০২০ সালের ২ জুলাই তারিখে অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেনের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হয়। নিয়ম অনুযায়ী তার অবসরে যাওয়ার কথা। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) এর জনবল কাঠামো অনুযায়ী, তাকে কোনোভাবেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। অথচ বিধি অমান্য করে ফরহাদ হোসেনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
জানা যায়, মনিপুর স্কুলে অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গ্রাজুয়েট। আর শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ পদে রয়েছেন কয়েকজন জাহাঙ্গীরনগর অ্যালামনাই। এছাড়া মাউশি অধিদপ্তরের আইন শাখায় ১৬ বছর ধরে অবৈধভাবে বসে আছেন আবুল কামে নামের একজন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। আবার ইএমআইএস সেলের কয়েকজনের সঙ্গে রয়েছে মনিপুর স্কুলের কয়েজনের সখ্য।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।