ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একজন, দায়িত্বপালন আরেকজনের - দৈনিকশিক্ষা

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একজন, দায়িত্বপালন আরেকজনের

রাজশাহী প্রতিনিধি |

রাজশাহীর চারঘাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কাগজে কলমে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে একজনের নাম থাকলেও দায়িত্ব পালন করছেন অন্যজন। এ নিয়ে শিক্ষক-অভিভাবকসহ সর্ব মহলে ব্যাপক জল্পনা কল্পনা চলছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে রীতিমত চলছে রশি টানাটানি। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর চারঘাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুনিম অবসর গ্রহণ করেন। তার অবসর গ্রহণের পর জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার বিধান থাকলেও রহস্যজনকভাবে বিদ্যালয়টির জুনিয়র সহকারী শিক্ষক শহীদুল হককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এরপর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়টিতে একটি সভা আহ্বান করেন। ওই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহীদুল হক প্রধান শিক্ষক হিসেবে আবেদন করায় বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটি রেজুলেশনের মাধ্যমে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক মমতাজ বেগমকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করে। এরপর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল আলম চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক এশিয়া বাণী এবং রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক রাজবার্তা নামের দুটি পত্রিকায় প্রধান শিক্ষকের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই হঠাৎ করেই থেমে যায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া।

এরপর রেজুলেশনের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে মমতাজ বেগম দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও সম্পূর্ণ নিয়মনীতি উপেক্ষা করে শহিদুল হকই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এতে শিক্ষক-অভিভাবকসহ বিভিন্ন মহলে একই প্রতিষ্ঠানে দুইজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কীভাবে দায়িত্ব পালন করছেন- তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুনিম বলেন, “সরকারি বিধান মোতাবেক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে জুনিয়র শিক্ষক শহিদুলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। “

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “রেজুলেশন মোতাবেক মমতাজ বেগমই এখনও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ” কিন্তু শহিদুল ইসলামের দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটা শহিদুলই ভালো বলতে পারবেন। আমি যতটুকু জানি শহিদুল রেজুলেশনের মাধ্যমে পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। “

অভিযুক্ত শিক্ষক শহিদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য না দিয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে সামনা সামনি দেখা করতে চান জানিয়ে ফোনটি কেটে দেন।

কাগজে কলমে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম বলেন, “চলতি বছরের ৯ মার্চ রেজুলেশনের মাধ্যমে আমাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যাওয়ার পর শহিদুল আমাকে বলেন, ‘আমিই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করি। ‘ এরপর থেকে শহিদুলই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এটা নিয়ম না হলেও সে দায়িত্ব পালন করছেন। আমি তো আর জোর করে দায়িত্ব পালন করতে পারি না। কাগজে কলমে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও শহিদুল আমাকে দায়িত্ব বুঝেই দেননি। “

একই প্রতিষ্ঠানে দুইজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, “রেজুলেশনের মাধ্যমে যাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে তিনিই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু অন্যজন দায়িত্ব পালন করলে সেটি সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। “

এ বিষয়ে জানতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই সেটি নিয়ম বহির্ভূত। তবে এ বিষয়ে আমাদের নিকট কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। “

সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.010198831558228