নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের বিষয়ে এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় কঠোর থাকায় নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া অন্যান্য কারণেও দুর্বল শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়েছে। সব মিলিয়ে নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অংশ নেওয়ার সুযোগ বঞ্চিত হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থী। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের এসএসসিতে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া এবং ইংরেজি ও গণিতে শিক্ষার্থীরা সাফল্য পাওয়ায় এ বছর পরীক্ষার ফল ভালো হয়েছে। সোমবার (৭ মে) দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক ।
এবারের ফল গত বছরের ঠিক উল্টো। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের তুলনায় গতবার পাসের হার কম ছিল কিন্তু জিপিএ-৫ বেশি ছিল। আর এবার পাসের হার বেশি, জিপিএ-৫ এর সংখ্যা কম। গতবারে পাস কমার নেপথ্যে ছিল ইংরেজি ও গণিত। অন্যদিকে, এবারও পাসের হার বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে অনুত্তীর্ণদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া। এ ছাড়া, ইংরেজি ও গণিতের প্রভাব তো আছেই। এবার ১০ শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। গতবারের পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার বেড়েছে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এবার রাজশাহী, দিনাজপুর, যশোর ও কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার গতবারের চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। আর মাদরাসা বোর্ডে গতবারের চেয়ে পাসের হার বেড়েছে ১২ শতাংশেরও বেশি। এ বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ছায়েফ উল্যা বলেন, গণিতে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা এবার ভালো করেছে। এ কারণে সার্বিক পাসের হার বেড়েছে।
কুমিল্লা বোর্ডে ইংরেজিতে এবার গতবারের চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি পাস করেছে। গণিতে পাস করেছে সাড়ে ৩ শতাংশ বেশি। ফলের বিষয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ না করানোর জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেওয়ার পর অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। এসব কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ভালো ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
যশোর বোর্ডে এবার পাস করেছে ৯০ দশমিক ৮৮ শতাংশ। গতবারের চেয়ে পাসের হার ১৪ শতাংশ বেশি। ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, অন্যান্য বিষয়ে সামান্য বেশি পাস করলেও গতবারের চেয়ে এ বোর্ডে গণিতে প্রায় ১১ শতাংশ বেশি পাস করেছে। আর ইংরেজিতে পাস করেছে ৫ শতাংশেরও বেশি।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে নির্বাচনী পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ায় এবার ভালো ছেলেমেয়েরা চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়। এজন্য পাসের হার বেড়েছে। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর তোফাজ্জুর রহমান জানান, বিদ্যালয়গুলোতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা, পরিদর্শন ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করায় ফল ভালো হচ্ছে।