ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়। এ সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন ও বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ইউএনএইচসিআর-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন টেকসই করতে কাজ করবে জাতিসংঘ। এদিকে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সহযোগিতায় জাতিসংঘ আরও বেশি আন্তরিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ত্রাণ ও দুর্যেোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ এনামুর রহমান।
এই চুক্তির মাধ্যমে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় দেবে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটি সেখানে কীভাবে কাজ করবে, এ নিয়েই মূলত বাংলাদেশের সাথে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর।
গত বছরের ৪ঠা ডিসেম্বর থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে সরিয়ে নেয়া শুরু হলেও প্রাথমিকভাবে এ ব্যাপারে আপত্তি ছিল ইউএনএইচসিআর-এর। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ভাসানচর কতটা ঝুঁকিমুক্ত, রোহিঙ্গাদের অবাধে ভাসানচর থেকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত করা, তাদের স্বেচ্ছায় ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে কি না, এ বিষয়গুলো নিয়ে জাতিসংঘের প্রশ্ন ছিল।
এরপর সরকার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের ভাসানচর পরিদর্শনে নেয় এপ্রিল মাসে। জাতিসংঘের প্রতিনিধিরাও ছিলেন সেই দলে। অবশেষে বরফ গলতে থাকে। ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা দিতে রাজি হয় জাতিসংঘ।
উল্লেখ্য, চার বছর আগে মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা এখন কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছে। কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে এরইমধ্যে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নিতে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয় করে ১৩ হাজার একর আয়তনের এই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করেছে সরকার। এ পর্যন্ত ছয় দফায় ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।