ভিকারুননিসার শিক্ষকদের অবৈধ সম্পদের খোঁজে দুদক - দৈনিকশিক্ষা

ভিকারুননিসার শিক্ষকদের অবৈধ সম্পদের খোঁজে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদানে নিয়োজিত আছেন প্রায় ৭০০ শিক্ষক। এ শিক্ষকদের অনেকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে অবৈধ সম্পদ অর্জনের। এসব শিক্ষকের অবৈধ সম্পদের খোঁজে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্য, ঘুষ, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগ আগের চেয়ে বেড়েছে। ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্য নিয়ে একাধিক অভিযোগ এরই মধ্যে অনুসন্ধানও করেছে দুদক। অনুসন্ধানে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। বর্তমানে ভিকারুননিসার একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুদক।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের যেসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান চলছে, তাদের মধ্যে আছেন কলেজ শাখার সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা খানম ও প্রভাষক রাশিদা আক্তার মিল্কী। আরো যেসব শিক্ষক দুদকের অনুসন্ধানের আওতায় আছেন তারা হলেন— দিবা শাখার সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ পারভীন, ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক সুরাইয়া নাসরিন, প্রভাতী শাখার ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষক কামরুন্নাহার চৌধুরী, লক্ষ্মীরানী, ফেরদৌসী ও নুশরাত জাহান। এর বাইরেও আরো শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান হতে পারে বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।

অভিযোগ প্রমাণ হলে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সাংবাদিকদের জানান দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করবেন এটাই নিয়ম। সরকারি অনুমোদন ছাড়া এর বাইরে যদি তারা কিছু (কোচিং) করেন, সেটা আমরা দুর্নীতির মধ্যেই ফেলব। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে। কোচিং বাণিজ্য নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা রয়েছে। কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০২ খ্রিস্টাব্দ থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানপ্রধান বদল হতে থাকে। অনিয়ম-দুর্নীতিও বাড়তে থাকে। শিক্ষক ও প্রশাসনিক লোকবল নিয়োগে অভিযোগ উঠতে থাকে অনিয়মের। এছাড়া যোগ্যদের পাশ কাটিয়ে পদোন্নতির অভিযোগও রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতারও। সম্প্রতি এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে একজন শিক্ষককে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

২০১২ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে নীতিমালা তৈরি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অভিযোগ আছে, এ নীতিমালা উপেক্ষা করে এখনো চলছে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য। নীতিমালায় নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং অথবা প্রাইভেট পড়াতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ১০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে নিজ বাসায় পড়ানোর সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে লিখিতভাবে ছাত্র-ছাত্রীর নাম ও রোল নম্বরসহ তালিকা জানাতে হবে। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা ওই ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একজনকে পড়ালেও তাকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। কোচিং সেন্টারের নামে বাসা ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধের কথা বলা হয়েছে। এমনকি কোনো শিক্ষক বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা কোচিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত হতে পারবেন না। শাস্তির বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি বা এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে সাময়িক বা চূড়ান্ত বরখাস্ত, এমপিওভুক্ত শিক্ষক হলে এমপিও স্থগিত, বাতিল, বেতন-ভাতাদি স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন একধাপ অবনমিতকরণ ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

দুদকের অনুসন্ধানে রাজধানীর নামিদামি আট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্যে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাধিক শিক্ষকও রয়েছেন।

আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি - dainik shiksha আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে - dainik shiksha সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড - dainik shiksha মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি - dainik shiksha ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.018574953079224