ভুল চিকিৎসা : বিচারের মুখে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান - দৈনিকশিক্ষা

ভুল চিকিৎসা : বিচারের মুখে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম সামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) দেয়া এক অভিযোগে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া এক রোগীর পরিবার দাবি করেছে, চিকিৎসার যথাযথ পদ্ধতি না মেনে রোগীর জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন ডা. এম সামসুল আরেফিন।

বিএমডিসিতে গত ২৫ আগস্ট ডা. এম সামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নেয়া এক রোগীর পরিবার। অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় তদন্ত ও শুনানি পরিচালনা করছে বিএমডিসি। একই ধরনের আরেকটি অভিযোগ করা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেও। এছাড়া রোগীর পরিবার অভিযুক্ত চিকিৎসকের নামে রাজধানীর আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগেও একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বণিক বার্তা পত্রিকায়  প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়,  বিভিন্ন সময়েই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের শীর্ষ নির্বাহী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠতে দেখা যাচ্ছে। এমন এক অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় গত মাসেই রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী জাহীর আল-আমীনের নিবন্ধন এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে বিএমডিসি। একই সঙ্গে তিনি এ এক বছর চিকিৎসা দিতে বা চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে বিএমডিসি। উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণ হলে আলী জাহীর আল-আমীনের মতো শাস্তির মুখে পড়তে পারেন ডা. এম সামসুল আরেফিনও।

হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এম সামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে বিএমডিসিতে দায়ের করা অভিযোগে ভুক্তভোগী রোগীর পিতা জানিয়েছেন, ২৮ বছর বয়সী ওই নারী রোগী অধ্যাপক ডা. এম সামসুল আরেফিনের কাছে পেটে ব্যথার চিকিৎসা নিচ্ছেন ২০১৭ সাল থেকে। বর্তমানে ডা. সামসুল আরেফিন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও হেপাটোলজি বিভাগের চিকিৎসকের পাশাপাশি হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ভুক্তভোগী রোগীর পেটের পীড়া বেড়ে যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডা. সামসুল আরেফিন জানান, রোগীর পেটে অগ্ন্যাশয়ে একটি সিস্ট আছে, যা এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে অপসারণ করা যাবে। গত ৯ আগস্ট রোগীর সিস্ট অপসারণের লক্ষ্যে অপারেশন থিয়েটারে না নিয়ে এন্ডোস্কোপি ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। ২ ঘণ্টায়ও এন্ডোস্কোপির কাজ শেষ না হওয়ায় রোগীর অবস্থা জানতে চায় পরিবার। রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে সে সময় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিতে হবে বলে জানান ডা. সামসুল আরেফিন। যদিও বিষয়টি সার্জন ডা. ইমরুল হাসান খানের গোচরীভূত হলে তিনি জানান, সিস্ট অপসারণের সময় রোগীর একটি ধমনি কেটে গিয়েছে, যা এন্ডোস্কোপির সময় পুনরায় জোড়া লাগানো যায়নি। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে অস্ত্রোপচার করতে হবে। এতে রোগীর বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা ১ শতাংশ। পরিবারের সম্মতিতে ডা. ইমরুল হাসান খান রোগীর অস্ত্রোপচার করে ধমনী জোড়া লাগিয়ে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। পরে ওই ভুক্তভোগী রোগীর পরিবারকে ৪ লাখ টাকার বেশি অংকের বিল ধরিয়ে দিয়ে তা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হয়। বর্তমানে ওই রোগী বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পরবর্তী ছয় মাস পর্যন্ত কোনো জরুরি প্রয়োজন দেখা দিলেও ভুক্তভোগী রোগীর কোনো অস্ত্রোপচার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

শুধু ডা. এম সামসুল আরেফিন নয়, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালের আরো কয়েক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিএমডিসি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আরো বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযোগ এসেছে। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায়ই হাসপাতালটির আরো দুই চিকিৎসকের নামে নতুন আরেকটি গুরুতর অভিযোগ ওঠে। বিএমডিসি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ডা. মনিরুল ইসলাম ও ডা. ইসরাত জাহান লাকির অবহেলায় আট বছরের এক কন্যাশিশুর মৃত্যুর অভিযোগ করেন শিশুটির মা। আদাবর থানায় সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি হাইকোর্টেও একটি রিট করেছেন তিনি।

শিশুটির মায়ের ভাষ্য অনুযায়ী, ভুল চিকিৎসায় তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তার সন্তানকে জ্বরাক্রান্ত অবস্থায় ডা. মনিরুল ইসলামের পরামর্শে জরুরি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পর পরই শিশুটিকে ক্যানুলা পরিয়ে পিআইসিইউতে (পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা রোগ নির্ণয় না করেই শিশুটির ভুল চিকিৎসা শুরু করেন। ডা. মনিরুল ইসলামের চিকিৎসাধীন থাকলেও হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে শিশুটির সব ওষুধসংক্রান্ত নির্দেশনা দেন আরেক চিকিৎসক ডা. ইসরাত জাহান লাকি।

অভিযোগকারীর দাবি, ইসরাত জাহান লাকি রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে শিশুটিকে একের পর এক উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিয়েছেন। ভুল স্যালাইন ও ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সে সময় চিকিৎসকরা শিশুটির পরিবারকে কখনো ম্যালেরিয়া আবার কখনো টাইফয়েডের কথা বলছিলেন। যদিও তার রোগ নির্ণয়ে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়নি। পরে শিশুটির বুকে এক্স-রে করে ফলাফল স্বাভাবিক পাওয়া গিয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর রাতে মেয়েকে দেখতে চাইলে দায়িত্বরতরা তাকে সেখানে যেতে দেননি। ১০ সেপ্টেম্বর ভোরে জানানো হয়, তার মেয়েকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে। এ সময় লাইফ সাপোর্টের কাগজে তার জোরপূর্বক সই নেয়া হয়।

শিশুটির মা বলেন, ‘লাইফ সাপোর্টে নেয়ার আগেই আমার মেয়ে মারা যায়। তারা বিষয়টি আমাদের কাছে গোপন করে। এরপর আরো বেশ কয়েকটি বিভিন্ন কৌশলে লাইফ সাপোর্টে রাখার চেষ্টা করেছিল। পরে আমাদের চাপাচাপিতে মৃত্যুর কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়। মৃত্যু সনদে ডেঙ্গুর কথা লিখলেও কোনো ডেঙ্গুর পরীক্ষা করা হয়নি। অবহেলার কারণে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।’ 

একের পর এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালটির চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষ্যমতে, হাসপাতালের সার্বিক মান ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে সম্প্রতি বেশকিছু অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও উঠেছে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ। এমনকি খোদ হাসপাতালের চেয়ারম্যানও এ অভিযোগ থেকে মুক্ত নন।

হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এম সামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে উল্লেখ করে বিএমডিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর দুই পক্ষকেই ডাকা হয়েছে। একটি শুনানি হয়েছে। এরপর আরো পদক্ষেপ রয়েছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা চলছে। এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।’


বিষয়টি নিয়ে জানতে ডা. এম সামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগী রোগীর পিতার সঙ্গে কথা বলেছে । তার অভিযোগ, রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ার পর তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি ডা. সামসুল। তিনি রোগীকে আইসিইউতে নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার পর অন্য কোনো চিকিৎসককেও বিষয়টি তিনি জানাননি। ঝুঁকি রয়েছে জেনেও রোগীর গ্রুপের রক্ত আগে থেকে প্রস্তুত রাখা হয়নি। পরে ওই সার্জন বিষয়টি বুঝতে পেরে হস্তক্ষেপ করেন।

ভুক্তভোগী রোগীর পিতা বলেন, ‘এ অপচিকিৎসার কারণে আমার মেয়ের ছয় মাসের মধ্যে কোনো অপারেশন করা যাবে না। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো দুঃখ প্রকাশ করেনি। আমরা যখন অভিযোগ করতে বিএমডিসি ও থানায় যাই, তখন হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল এমরান চৌধুরী ফোন করে আমাদের ডেকে নেন। হাসপাতালে যে বিল পরিশোধ করেছি তা এক রকম ফেরত দেয়ার কথা বলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানাভাবে সমঝোতার চেষ্টা করে। তবে পৃথিবীর কোনো কিছুর বিনিময়েই আমরা সমঝোতা করতে রাজি নই। ডা. সামসুল আরেফিনও দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেছেন, জরুরি চিকিৎসার জন্য কোনো ব্যাকআপ টিম প্রস্তুত রাখার প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি। আমরা বিষয়টির বিচার চেয়েছি। হাইকোর্টে রিট করেছি। থানায় জিডি করেছি।’

হাসপাতালের দেয়া ওই রোগীর ছাড়পত্রে বলা হয়, রোগীর এন্ডোস্কোপি করা হয় গত ৯ আগস্ট। এ সময় দুর্ঘটনাবশত তার পেটের মধ্যে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আর রোগী হাইপ্রোভলিমিক শকে (অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে হূদযন্ত্র দেহে প্রয়োজনীয় রক্ত সঞ্চালন করতে না পারা) চলে যায়। এতে রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে রক্তপাতের স্থান জোড়া লাগাতে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। এরপর রোগীকে আইসিউইতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে এইচডিইউতে (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) নেয়া হয় ১১ আগস্ট। রোগীর অবস্থা ভালো হলে তাকে ১৩ আগস্ট সার্জারি ইউনিটে পাঠানো হয়। এরপর ১৪ আগস্ট রোগীকে ছাড়পত্র দিয়ে বাসায় পাঠানো হয়। তবে গত ৯ আগস্ট করা এন্ডোস্কোপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধমনী থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে তা এন্ডোস্কোপি চলাকালে থামানো যায়নি। এ সময় এন্ডোস্কোপি থামিয়ে কোড ব্লু (অপ্রত্যাশিত জরুরি অবস্থা) ঘোষণা করে রোগীকে আইসিইউতে পাঠানো হয়।

রোগীর পরিবার জানিয়েছে, এন্ডোস্কোপির পর রোগীকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়ার সময় পথে ডা. ইমরুল হাসান খান বিষয়টি বুঝতে পেরে রোগীকে ওটিতে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি ও স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশীদ-ই-মাহবুব বলেন, রোগীকে ওটিতে নাকি এন্ডোস্কোপি রুমে নিয়ে ইন্টারভেনশন করা হবে তা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ভালো বুঝবেন। নিয়ম হলো, কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে এবং বিষয়টি আয়ত্তের বাইরে চলে গেলে প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো বা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে দ্রুত পাঠানো হয়। তখন ওই চিকিৎসক এসে রোগীকে ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা করেন।

বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবহেলা, অসচেতনতা ও পেশাদারত্বের ঘাটতি বা গাফিলতির ঘটনা ঘটেনি। এ নিয়ে গত ২৫ আগস্ট হাসপাতালটির পক্ষ থেকে করা এক সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই রোগী ডা. এম সামসুল আরেফিনের কাছে পাঁচ বছর ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীর অগ্ন্যাশয়ে সিস্ট থাকায় রোগী ও তার অভিভাবকদের মতামত নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত চিকিৎসাশাস্ত্রের সব ধাপ অনুসরণ করে এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে তা অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কখনো কখনো ওই পদ্ধতিতে জটিলতার উদ্ভব হতে পারে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। রোগীর স্বামীর কাছ থেকেও নিয়ম অনুযায়ী রিস্ক বন্ড (ঝুঁকি গ্রহণের সম্মতি) নেয়া হয়েছে। এন্ডোস্কোপির সময় অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ শুরু হলে সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। এতে রক্ত বন্ধ না হওয়ায় ও রোগীর রক্তচাপ কমে যাওয়ায় কোড ব্লু ঘোষণা করা হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট সার্জন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে অধ্যাপক ডা. এম সামসুল আরেফিন কোনো মন্তব্য করতে চাননি। এ বিষয়ে তিনি হাসপাতালের প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন।

এর আগে গত ২৫ আগস্টের সংবাদ সম্মেলনে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা ভুল চিকিৎসার অভিযোগ সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. এম সামসুল আরেফিন বলেছিলেন, ‘যে অবস্থা থেকে রোগীকে সুস্থ করা হয়েছে তা নিশ্চয়ই প্রশংসনীয়। নিয়ম মেনে রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। রোগীর স্বজনরা অপারেশন থিয়েটারে না নিয়ে এন্ডোস্কোপি রুমে চিকিৎসা দেয়ার বিষয়ে আপত্তির কথা এখন বলছেন। তবে এ ধরনের চিকিৎসা গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্টরাই করেন। পরে দুর্ঘটনা ঘটলে আমরা রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করি। এরপর তাতে ব্যর্থ হলে সার্জনকে ডাকা হয়। সময় বাঁচাতে আইসিইউতে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। সার্জন ইমরুল বিষয়টি অবগত থাকায় তিনি ওটিতে নিয়ে যান।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল এমরান চৌধুরী বলেন, ‘রোগীর পক্ষ থেকে ভুল বা অপচিকিৎসার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। বলা হচ্ছে, সার্জন না নিয়েই সার্জারি করা হয়েছে। তবে এটা কোনো সার্জারি নয়। এটা গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিক্যাল চিকিৎসার একটি পদ্ধতি। এ সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় চিকিৎসক সামসুল আরেফিন সার্জনকে ডেকেছেন। এরপর সার্জন তার কাজ করেছেন। পরে আইসিইউতে নিয়ে রোগী সুস্থ হলে তাকে বাসায় পাঠানো হয়। অভিযোগের পর আমরা অন্তত ৩০-৩৫ জন গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়েছি। তারা ডা. সামসুল আরেফিনের পদ্ধতিকে সঠিক বলেছেন। হাইকোর্টে রোগীর পক্ষ থেকে রিট করা হলে তার জবাব আমরা দিয়েছি। বিএমডিসি তলব করার পর আমরা সেখানেও বলেছি। আশা করি শিগগিরই এসব অভিযোগ শেষ হয়ে যাবে। আমরা রোগীদের সঠিক চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।’

কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038480758666992