ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরির কারবার : ১ লাখ টাকা নিতেন ইসির দুই কর্মী - দৈনিকশিক্ষা

ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরির কারবার : ১ লাখ টাকা নিতেন ইসির দুই কর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ঋণ নিয়ে আর ফেরত দেননি, কিংবা ক্রেডিট কার্ডের টাকা পরিশোধ করেননি,এমন লোকজন ছিল চক্রটির গ্রাহক। তাদের নতুন করে ঋণ পাইয়ে দিতে নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিত তারা।

শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) লালবাগ বিভাগ এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের দুজন নির্বাচন কমিশন অফিসের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর।

যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন মো. সুমন পারভেজ, মো. মজিদ, সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর, মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও মো. আবদুল্লাহ আল মামুন।

লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার রাজীব আল মাসুদ বলেন, সুমন পারভেজ ও মজিদ ব্যাংকঋণ পাইয়ে দেবেন, এই শর্তে একেকজনের কাছ থেকে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা নিতেন। ঋণ হাতে পাওয়ার পর তাদের দিতে হতো মোট টাকার ১০ শতাংশ পর্যন্ত।
তদন্তে যুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, যারা দ্বিতীয় আরেকটি পরিচয়পত্র করিয়েছেন তাদের মধ্যে চিকিৎসক,প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা রয়েছেন। এখন পর্যন্ত ২০-২৫টি পরিচয়পত্র জব্দ করেছে পুলিশ।

এসব পরিচয়পত্র ব্যবহার করে তারা সিটি ব্যাংক, ইউসিবি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন। মো. মিল্টন নামের এক ব্যক্তি নর্থ সাউথ সড়কের সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, সুমন পারভেজ সাত-আট বছর আগে ‘ভেরিফিকেশন ফার্মে’ কাজ করতেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কাজ ছিল কেউ ঋণ পাওয়ার যোগ্য কি না, তা যাচাই–বাছাই করা। পরে চাকরি ছেড়ে এই কাজে যুক্ত হন।
এই চক্রের অপর সদস্য মজিদের ঋণের দরকার পড়ায় তিনি সুমন পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর দুজন মিলে এই কারবারে নামেন।

কারও ঋণ প্রয়োজন হলে তারা নির্বাচন কমিশনের খিলগাঁও অফিসের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর ও গুলশান অফিসের মো. আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এই দুজন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন।

একটি জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার পরও আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র কী করে তৈরি করা যায়, এমন প্রশ্নের জবাবে আসামিদের উদ্ধৃত করে পুলিশ জানায়, অপারেটররা এ জন্য একটি কৌশল অবলম্বন করেন।

যারা দ্বিতীয় পরিচয়পত্র করিয়েছেন, তারা জন্মসনদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে নাগরিকত্বের সনদ ও বিদ্যুৎ বিল ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের হাতে পৌঁছে দিতেন। তারা অফলাইনে সব তথ্য, আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয়পত্র অনুমোদনের জন্য পাঠিয়ে দিতেন। অনুমোদন হতে সময় লাগত সর্বোচ্চ ১৫–২০ মিনিট। তারপরই নতুন আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র চক্রটির ঋণ নিতে ইচ্ছুক এমন লোকজনের হাতে তুলে দিতেন।
যে ব্যক্তির নামে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হলো, তার নামে আগে কোনো পরিচয়পত্র আছে কি না, তা যাচাই–বাছাই হতে মাস দুয়েক সময় লেগে যায়। ব্যাংকও টের পায় ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়। তারা নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে খোঁজখবর করে আর তাকে (নতুন করে যিনি ঋণ নিয়েছেন) খুঁজে পায় না।

নির্বাচন কমিশন অফিসের ডেটা এন্ট্রি অপারেটর সিদ্ধার্থ ২০০৭ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজ করে আসছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন গত বছর থেকে এই চক্রে জড়িয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, দ্বৈত জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে তিনি একবার ব্র্যাক ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও সিটি ব্যাংক থেকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা তুলেছিলেন। এরপর স্ত্রী রোজিনা রহমানের নামেও আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজ করাচ্ছিলেন। তিনি হাতেনাতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে মামলা করেছে।

কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060670375823975