মতিঝিল মডেল কলেজ: পরিচালনা পর্ষদের বাড়াবাড়ির নেপথ্যে

মতিঝিল মডেল কলেজ: পরিচালনা পর্ষদের বাড়াবাড়ির নেপথ্যে

রাজধানীর মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের কোনও কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনের বিধি ভঙ্গসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি কর্তৃক অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে নিয়মিত বেতন-ভাতা না দেয়ার অভিযোগ

রাজধানীর মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের কোনও কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইনের বিধি ভঙ্গসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি কর্তৃক অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত করা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাকে নিয়মিত বেতন-ভাতা না দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমান সৎ ও বিধিবিধান অনুযায়ী চলা অধ্যক্ষকে সরিয়ে নিজেদের মতো করে ভারপ্রাপ্ত বেসরকারি অধ্যক্ষ নিয়োগের পায়ঁতারা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাকরি হারানোসহ সর্বদা পরিচালনা পর্ষদের কোনও কোনও সদস্যের অত্যাচারের আতঙ্কের মধ্যে থাকা প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শিক্ষক-কর্মচারী দৈনিক আমাদের বার্তাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, বর্তমান পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্য গত ১৫ ও ১৭ সেপ্টেম্বর পাবলিক পরীক্ষা আইনের বিধান (১৪৪ ধারা) অমান্য করে পরীক্ষার হল ও আশোপাশে অবস্থান করেন। একজন নারীসহ দুজন সদস্য অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করেন। কমিটির বাকী সদস্যরা এর প্রতিবাদ করেননি। 

আরও পড়ুন: সভাপতির টর্চার সেলে শিক্ষক নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা!

তারা আরও জানান, প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষকে বেতন দেওয়া হচ্ছে না কয়েক মাস ধরে। কমিটির কেউ কেউ চাচ্ছেন, তিনি চলে যাক। তাহলে বর্তমান কমিটি নিজেদের মতো করে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিতে পারবেন। বছরে কোটি কোটি টাকার কেনাকাটাসহ, টিউশন ফি, নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজ থেকে চাঁদা তুলতে পারবেন। 

আরও পড়ুন: মতিঝিল মডেলের সভাপতির অপসারণ দাবি, স্কুল রক্ষায় শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

একজন সিনিয়র শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, গত সপ্তাহে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে হম্বিতম্বি চালিয়ে যাচ্ছেন কমিটির একাধিক সদস্য। তাদের একজন চট্টগ্রামের জামায়াতপন্থি এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বলে জানা গেছে। 

তিনি আরও বলেন, দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিক্ষকরা আশার আলো দেখা শুরু করছেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত চলছে। শিক্ষকরা আশা করছেন, বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে কোনো যুগ্ম-সচিবকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হবে। আর পরীক্ষার কেন্দ্র বাতিল করা হবে।

মতিঝিলের মূল ক্যাম্পাস ও বাসাবোর শাখা মিলে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর এ প্রতিষ্ঠানটিতে তিনশর বেশি শিক্ষক এবং ৯৪ জন কর্মচারী রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘ সময়ের (দশ বছর) সভাপতি আওলাদ হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর রাস্তায় নেমেছিলেন শিক্ষকরা। এর কিছুদিনে মধ্যে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল পরিচালনা কমিটি। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানটি ভালো চলছিলো। সে বছরের ২৯ ডিসেম্বর অ্যাডহক কমিটির সভাপতি করা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক খানকে। পরে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে প্রেষণে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা খ ম রশিদুল হাসানকে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে তার প্রেষণ প্রত্যাহার করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

২০২১ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মুন্সী শরীফ উজ্জামানকে। কিন্তু কয়েকমাস আগে নিয়মিত কমিটিতে আবার ভুইফোঁড় রাজনীতিক, বিভিন্ন দপ্তরের কেরানী ও শিক্ষা প্রশাসনের বিবিবিধান না বোঝা লোকদের দৌরাত্ম বেড়েছে।     

রাজধানীর আলোচিত-সমালোচিত মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এবার আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। 

সার্বিক বিষয়ে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ ড. মুন্সী শরীফ-উজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মতিঝিল মডেল কলেজ: পরিচালনা পর্ষদের বাড়াবাড়ির নেপথ্যে

মতিঝিল মডেল কলেজ: পরিচালনা পর্ষদের বাড়াবাড়ির নেপথ্যে

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।