জঙ্গীবাদে উৎসাহিত করার উপাদান ও বিতর্কিত তথ্য থাকা মাদ্রাসার পাঠ্যবইসমূহ পরিমার্জনের জন্য চারদিনব্যাপি ওয়ার্কশপে অনুপস্থিত কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ও সচিব। ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) কর্তৃপক্ষ ইবতেদায়ী থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত মাদ্রাসার ইসলামিক ও আরবি বিষয়সমূহের পাঠ্যবইয়ে সুনির্দিষ্টভাবে জঙ্গীবাদ উৎসাহিত করার উপাদান চিহ্নিত করেছে। এছাড়াও আকিদাগত ত্রুটি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এমন উপাদানও চিহ্নিত করেছে। পাঠ্যবই থেকে ওইসব অংশ বাদ দেয়ার সুপারিশ করেছে ইফা। সেই আলোকে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের তত্ত্বাবধানে ৬ই মার্চ কুমিল্লার বার্ডে শুরু হয়েছে ওয়ার্কশপ। চলবে ৯ মার্চ বিকেল পর্যন্ত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা শাখা ও ইফা কর্মকর্তা, মাদ্রাসা বোর্ড এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বিশেষজ্ঞসহ মোট ৪৫ জন অংশ নিয়েছেন ওয়ার্কশপে। কিন্তু এতবড় কর্মযজ্ঞে অনুপস্থিত মাদ্রাসার প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী ও সচিব মো: আলমগীর।
প্রতিমন্ত্রী কেন অনুপস্থিত তা জানতে কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে দৈনিকশিক্ষার সাংবাদিকরা। সচিব আলমগীর ব্যস্ত তার দপ্তর ও বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের কাজে।
এর আগে বিতর্কিত তথ্য থাকায় চলতি বছর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চারটি বই বাতিল করা হয়েছে। এই বইগুলো হলো–২০১৮ খ্রিস্টাব্দের জন্য ছাপানো সপ্তম শ্রেণির ‘আল্ আকায়েদ ওয়াল ফিক্হ’, অষ্টম শ্রেণির ‘আল্ আকায়েদ ওয়াল ফিক্হ’ নবম ও দশম শ্রেণির ‘কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ’ ও ‘হাদিস শরিফ’। বাতিলের পর বইগুলো সংশোধন করে পাঠানো হচ্ছে সারা দেশের মাদ্রাসাগুলোয়। এই চারটি বই বাতিল, সংশোধন ও পুনর্মুদ্রণের ফলে সরকারের মোট ১৪ কোটি ২০ টাকা গচ্চা গেছে।
এই চার শ্রেণির চার পাঠ্যবইয়ে ইসলামের অবমাননাসহ ব্যাঙ্গাত্মক তথ্য রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল। এরপর তিনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম ছায়েফ উল্যাহকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানান। বইগুলোর অন্তত ১৫টি জায়গায় ইসলাম অবমাননাকর এবং ব্যাঙ্গাত্মক তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়।
এরপর গত বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মেইল করে বইগুলো ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দেয় এনসিটিবি। ফেরত পাওয়ার পর বইগুলো পুনর্মুদ্রণ করে পাঠানো হয় মাদ্রাসাগুলোতে।