মাদরাসায় অতিরিক্ত এতিম ছাত্র দেখিয়ে অর্থ লোপাটের চেষ্টা - দৈনিকশিক্ষা

মাদরাসায় অতিরিক্ত এতিম ছাত্র দেখিয়ে অর্থ লোপাটের চেষ্টা

চাঁদপুর প্রতিনিধি |

মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুরের একটি মাদ্রাসা কর্র্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বাস্তবের চেয়ে মাদ্রাসায় এতিম ছাত্রের অতিরিক্ত সংখ্যা দেখিয়ে এই চেষ্টা চালানো হয়। তবে স্থানীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের তদন্তে ধরা পড়ে জালিয়াতির বিষয়টি। আর এর পরেই আটকে দেওয়া হয় বরাদ্দ। জালিয়াতির ওই ঘটনা ঘটেছে মতলব উত্তর উপজেলার দশানী আল-আমীন আক্রামীয়া মাদ্রাসায়।

জানা গেছে, দশানী আল-আমীন আক্রামীয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালে। মাদ্রাসাটিতে হেফজ ও এতিমখানা এই দুই ভাগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা হয়। মাদ্রাসাটির পরিচালনা কর্র্তৃপক্ষ ২১-২২ অর্থবছরে সরকারি বরাদ্দ পেতে আশ্রয় নেয় প্রতারণার। মাদ্রাসার এতিমখানায় প্রায় ৪০ জন আবাসিক শিক্ষার্থী থাকলেও কাগজে-কলমে দেখানো হয় দ্বিগুণেরও বেশি। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৯০ জনের জন্য প্রায় ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। কিন্তু বরাদ্দের তদন্তে গিয়ে অনিয়মের বিষয়টি নজরে আসে সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের। হেফজখানার ছাত্রদেরও মাদ্রাসা কর্র্তৃপক্ষ এতিমখানার ছাত্র বলে দাবি করলেও সরেজমিনে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। এমন পরিস্থিতিতে আটকে যায় সরকারি ওই বরাদ্দের অর্থ ছাড়।

এ প্রসঙ্গে মতলব উত্তর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিছুর রহমান তপু বলেন, ‘দশানী আল-আমীন আক্রামীয়া মাদ্রাসার এতিমখানায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬০ জন এতিম নিবাসীর বরাদ্দ আসে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ওই এতিমখানায় ৯০ জন ছাত্রের জন্য প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে ১২ মাসের টাকার আসে। কিন্তু সম্প্রতি আমরা ছাত্রের সংখ্যা নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করতে গিয়ে কিছু গরমিল দেখতে পাই। তাই তাদের বরাদ্দের চেক প্রদান করা হয়নি। আমি এ বিষয়ে মাদ্রাসার কমিটির সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি এবং এতিমখানায়ও আমি ভিজিট করেছি। ওনাদের সমস্যাগুলো দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যদি ওনারা এই অসংগতি নিয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেন, তাহলে এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমি এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।’

জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে দশানী আল-আমীন আক্রামীয়া মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. হাবীবুল্লাহর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে মাদ্রাসায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও এ বিষয়ে সাংবদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি মাদ্রাসাটির পরিচালনা কর্র্তৃপক্ষের কেউই।

তবে মাদ্রাসাটির একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেখানকার এতিমখানায় মাদ্রাসা কর্র্তৃপক্ষের উল্লিখিত ৯০ জন ছাত্র নেই। প্রকৃতপক্ষে ছাত্রের সংখ্যা ৪০ জনের মতো।

মাদ্রাসা কর্র্তৃপক্ষের জালিয়াতিতে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিক কমিটি, চাঁদপুর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এতিম শিক্ষার্থীদের যাতে শিক্ষার মূলধারায় নিয়ে আসা যায় সেজন্য সরকার তাদের জন্য মাসে ২ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের মোট শিক্ষার্থীর অর্ধেক এই ভাতা পাওয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ করে বিভিন্ন মাদ্রাসা বা হেফজখানাগুলো এতিমখানার নাম দিয়ে বাস্তবের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষার্থীর নাম লিখিয়ে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন করে। মূল শিক্ষার্থী যারা টাকা পাওয়ার কথা তারা অধিকাংশই বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়টি একেবারেই অনৈতিক, অন্যায় এবং শিক্ষায় সরকারের যে মহতি উদ্যোগ, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে আসার যে লক্ষ্য তারা সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চাঁদপুর জেলায় যতগুলো এতিমখানা সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ভাতা পেয়ে থাকে যেগুলো যদি সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ একটু ভালোভাবে তদারকি করে তাহলে সত্যিকারের এতিম যে শিশুরা আছে তারা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে।’

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0079360008239746