গাইবান্ধার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে মাল্টিমিডিয়া শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হলেও নিম্নমানের ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম, নিয়মিত ক্লাস না হওয়া নানা সমস্যা সঙ্কটে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ফলে উন্নত ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় শতকরা ২১ ভাগ বিদ্যালয়ে সঠিকভাবে মান সম্পন্ন মাল্টিমিডিয়া ক্লাস হচ্ছে এবং যা থেকে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী শিক্ষায় ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা পাচ্ছে। জেলা শিক্ষা অফিসার এনায়েত হোসেন জানান, গাইবান্ধার ৭টি উপজেলায় ৪৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া সরঞ্জাম সরকারী উদ্যোগে দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিজস্ব উদ্যোগে ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া সরঞ্জাম ক্রয় করে ডিজিটাল এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সরকারী উদ্যোগে ৮৮টি এবং নিজ উদ্যোগে ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জে ৯০টি এবং ১০টি, গাইবান্ধা সদরে ৬৪টি এবং ৮টি, সাদুল্যাপুরে ৭৫টি এবং ৭টি, সাঘাটায় ৪৭টি এবং ৭টি। এছাড়া সরকারী উদ্যোগে পলাশবাড়িতে ৪৯টি এবং ফুলছড়িতে ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষে বিশেষ পদ্ধতিতে শিক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থার প্রস্তুতকৃত ল্যাপটপ দোয়েল, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্ক্রিন, মরটেম প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ৫ জন শিক্ষককে মাল্টিমিডিয়া পদ্ধতিতে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে বিশেষ শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাদানের জন্য প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও বিশেষ প্রকল্পের আওতায় শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
এই প্রকল্পের আওতায় ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর স্ক্রিন, ইন্টারনেট সংযোগ, মডেম এবং কক্ষটি সাজানোর জন্য আসবাবপত্র ও দরজা-জানালার পর্দা ক্রয়সহ আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্য প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার টাকাও দেয়া হয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব রয়েছে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১১টি, গাইবান্ধায় ৬টি, পলাশবাড়িতে ৬টি, সুন্দরগঞ্জে ৭টি, ফুলছড়িতে ৬টি, সাঘাটায় ৬টি এবং সাদুল্যাপুরে ১টি। সরেজমিনে জেলার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের শিক্ষাব্যবস্থা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে এ সম্পর্কে নানা সমস্যা পরিলক্ষিত হয়।
প্রথমত ডিজিটাল এই শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন করতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সংযোগ একান্ত জরুরী হলেও জানা যায়, জেলার মাত্র ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। বাকিগুলোতে নেই। তদুপরি ল্যাপটপ, প্রজেক্টর উন্নতমানের না হওয়ায় ঘন ঘন নষ্ট হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ মাস পরও ল্যাপটপের উইন্ডোজ নষ্ট হয়ে যায়, ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়াও অকেজো হয়। যা মেরামত করতে হয় প্রতিষ্ঠানের নিজ ব্যয়ে।