মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে জাতির উন্নয়ন অসম্ভব - দৈনিকশিক্ষা

মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে জাতির উন্নয়ন অসম্ভব

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড- কথাটি শুনে অনেকের ভ্রু কুঞ্চিত হবে। এত প্রাচীন এক বচন নিয়ে এখনও অর্থাৎ, এই তথ্যপ্রযুক্তি, ইন্টারনেট, অনলাইন সেমিনারের যুগে এসেও সেই পুরনোকে নিয়ে পড়ে থাকার মানে কি- ভেবে বিস্মিত, স্তম্ভিত হচ্ছেন অনেকেই। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত উপসম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়। 

উপসম্পাদকীয়তে আরও জানা যায় আসলে, যদি আমরা জাতির, রাষ্ট্রের উন্নয়নের কথা ভাবি, কিংবা প্রকৃতির সুরক্ষা বা নারীর প্রতি সহিংসতা হ্রাস করে পরিবার ও সমাজকে নারী, পুরুষ ও শিশুর জন্য যখন শান্তির আবাসে পরিণত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারব, অথবা যদি বর্তমানের এই করোনাভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার যে চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন বার বার মানুষের মধ্যে যে সচেতনতা সৃষ্টির কথা বলা হচ্ছে- মুখে মাস্ক পরা, বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথা বলা হচ্ছে, দূরত্ব রক্ষা করে বাইরে, কাজে, অফিসে, বাজারে চলাচল করতে বলা হচ্ছে- এসবই কেন করতে হবে, তা ত্বরিত বুঝতে সক্ষম শিক্ষিত ব্যক্তি। অর্থাৎ, এক কথায় বলতে গেলে-শিক্ষিত ব্যক্তিই যে কোন বিষয় শুনে যেমন, তেমনি কোন পাঠ্য বই, প্রচার পুস্তিকা, পোস্টার, অন্যান্য গল্প-কবিতা-প্রবন্ধের বই পাঠ করে যে কোন বিষয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। ফলে তার মনে একটি সচেতনতার সৃষ্টি হয়, যেটি তার কাজ-কর্ম, আচার-আচরণ, বিশ্বাস, অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির ভিত্তি তৈরি করে।

সুতরাং, সেই শিক্ষাই আমাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বাস গড়ে তুলতে বিপুলভাবে কাজ করে। অর্থাৎ, শিক্ষা, শিক্ষা, শিক্ষা- এটাই এ যুগের জ্ঞাননির্ভর তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সমাজের মূল ভিত্তি এবং সে কারণে এ যুগটি হচ্ছে জ্ঞানের যুগ। এখানে নিরক্ষরেরা ক্রমাগত পিছিয়ে পড়বে এবং অবশেষে অপ্রয়োজনীয় হয়ে কর্মক্ষেত্র থেকে ঝরে পড়ার সম্ভাবনায় থাকবে! আমাদের দৈহিক শ্রমভিত্তিক কাজগুলো বিদেশে গিয়ে প্রবাসী হয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ বা গৃহকর্মের কাজ অথবা দেশের কৃষক-কৃষি-শ্রমিক, গার্মেন্টের সেলাই শ্রমিক বা রাস্তাঘাট, সেতু, বাড়িঘর নির্মাণ ইত্যাদি কাজে নিরক্ষর বা অশিক্ষিত বিশাল শ্রমিক শ্রেণীর বর্তমানের কাজগুলো ক্রমেই অটোমেশন বা নতুন প্রযুক্তি শিখে করার প্রয়োজন হবে, যা শিক্ষিত ব্যক্তিই শিখতে পারবে, নিরক্ষর ব্যক্তি পারবে না। ওদের জন্য যত দুঃখই পাই, ওদেরকে, ওদের সন্তানদের ন্যূনতম পড়তে ও সহজ হিসাব করতে শেখানো আমাদের প্রধান নৈতিক দায়িত্ব। চোখের সামনে আমরা দেখতে পাচ্ছি- ইংরেজী ভাষায় পড়তে, লিখতে না পারলে, কম্পিউটার ব্যবহার করা অসম্ভব। এখন তো মোবাইল ফোন ব্যবহারেও ইংরেজী অক্ষর, সংখ্যা না শিখলে ব্যবহার সম্ভব নয়। বাংলা অক্ষরে মোবাইলে কিছু লেখা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে! এক সময় আমরা রোমান হরফে বাংলা লেখা মোটেও সমর্থন করিনি।

যাই হোক, শিক্ষার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের প্রিয় শিক্ষক বা শিক্ষাদাতা। বার বার, দীর্ঘকাল আগে থেকে আমাদের মধ্যে প্রচলিত একটা অভ্যাস হচ্ছে- শিক্ষার যা কিছুই মন্দ, তার জন্য দোষী ‘নন্দ ঘোষ’ হচ্ছেন আমাদের শিক্ষক। আমি নিজে এত ভাল ভাল শিক্ষিকা-শিক্ষকের সান্নিধ্যে শিক্ষা লাভ করেছি যে, একটি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শিক্ষক গোষ্ঠীর (প্রাথমিক স্তরের ও পরে উচ্চ শিক্ষাপ্রাপ্ত) প্রবল বিরোধিতার মধ্যেও শিক্ষকদের দোষ দিতে পারি না। তাঁরা এসেছেন আমাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক স্তর উত্তীর্ণ হয়ে। কেউ কেউ, সীমিত সংখ্যক স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নিয়েও এসেছেন। এখন কথা ওঠে- মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা কেন শিক্ষিত হতে পারছে না? অর্থাৎ, বর্তমানকালে শিক্ষার্থীরা কোন কোন বিষয়ে দুর্বল থেকে যাচ্ছে, যার ফলে তাদের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার ফল গুণগত মানসম্পন্ন হচ্ছে না!

এখানে একটা সহজ কথা সহজে বলব। শিক্ষকরা যে যে বিষয়ে দুর্বল বা কাক্সিক্ষত যোগ্যতা-দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি, তাঁর বা তাঁদের শিক্ষার্থীরাও সেই সেই বিষয়ে দুর্বল থাকে বা উন্নতমানের যোগ্যতা অর্জনে সক্ষম হয় না।

তাহলে, প্রশ্নÑ অধিকাংশ শিক্ষকের যোগ্যতা কম থাকে কোন কোন বিষয়ে? উত্তরে সবাই বলবে- ইংরেজী ও গণিতে। এই দুটি বিষয়ে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থী দুর্বল থাকে- এ তথ্য বেশকিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে। যে শেখাচ্ছেন তাঁর দুর্বলতা অবশ্যই যারা শিখছে তাদের শিক্ষায় প্রতিফলিত হবে।

এখন তাহলে, সেই বহুল আলোচিত শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিষয়ে আসতে হয়। আমরা, বিশেষত যারা দেশের শিক্ষা নিয়ে দীর্ঘকাল কাজ করেছি, তারা সেই সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিকল্পিত স্কুল কেন্দ্রিক সাপ্তাহিক ক্লাস্টার ট্রেনিং এবং ওই কেন্দ্রে নিয়মিত প্রশিক্ষক হিসেবে নতুন নিয়োজিত সহকারী থানা বা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিশেষ ভূমিকার কথা স্মরণ করি। এটি প্রায় ভুলে যাওয়া অথচ অত্যন্ত কার্যকর একটি পদক্ষেপ ছিল যেটি প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণকে একদিকে যেমন শ্রেণীকক্ষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিল, তেমনি শিক্ষক প্রশিক্ষণের মতো পোশাকি বিষয়কে শিক্ষাব্যবস্থার অঙ্গীভূত নিয়মিত একটি ব্যবস্থায় পরিণত করেছিল। আমরা যখন সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার ইমপ্যাক্ট স্টাডি করছিলাম, তখন ৯০-৯২ সালে প্রাথমিক স্কুলের ভৌত সুবিধা, টয়লেট, তিনটি শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ, স্কুলের মাঠ, ক্লাস্টার ট্রেনিং যা প্রধানত ইংরেজী ও গণিতের কঠিন পাঠের ওপর প্রদান করা হতো, সেসব পরিদর্শন করেছি। এই প্রশিক্ষণ এটিও, হেডমাস্টার সাধারণত পরিচালনা করতেন। এসবের যৌথ একটি ভাল ফল আমরা নির্বাচিত, ভাল স্কুলগুলোতে দেখেছি। বলাবাহুল্য, এ সময়েই পুরো দেশে কয়েক শত খুব ভাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় খ্যাতি অর্জন করেছিল। এগুলোতে যেমন ফলের, ফুলের বাগান শিক্ষার্থীদের সহায়তায় করা হয়েছিল, তেমনি স্কুল বিল্ডিং, খেলার মাঠ, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতো।

গুণগত মানের কথায় সবকিছুর ওপরে অবস্থান করছে- শিক্ষকের গুণগতমান সম্পন্ন শিক্ষা। এ শিক্ষা শিক্ষক, আগেই বলেছি গ্রহণ করেন প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ থেকে।

এই স্তরের শিক্ষার শিক্ষাক্রম-বিষয়বস্তু এবং এগুলোর পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন পদ্ধতি একত্রে শিক্ষকের শিক্ষার মান, একই সঙ্গে শিক্ষার্থীর শিক্ষার মানও নির্ধারণ করে।

একটি বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া দরকার। আমাদের দেশে ইংরেজী বিষয়টিকে কখনও দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে, কখনও বিদেশী ভাষা হিসেবে, একেবারে শেষদিকে ‘কথোপকথন’ শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়েছে। নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে এই বিষয়টি অগ্রসর হচ্ছে যা ভালর চাইতে মন্দর দিকেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে গেছে বলে অনেকের ধারণা।

প্রথমত : আমি একজন শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বলেছি- ইংরেজ কনসালটেন্ট যার মাতৃভাষা ইংরেজী তাঁর চাইতে আমাদের দেশের জন্য উপযুক্ত হবে এ অ-ইংরেজী ভাষী দেশের শিক্ষিত ব্যক্তিগণ। কারণ তারাই ইংরেজীকে বিদেশী ভাষা হিসেবে শেখে। তাদের মধ্যে জার্মান, ডাচ্্, ড্যানিশ, সুইডিশরা খুব ভালভাবে ইংরেজী শেখে। এরাই আমাদের ইংরেজীকে বিদেশী ভাষা হিসেবে শেখার সবচেয়ে ভাল, কার্যকর, সংক্ষিপ্ত উপায় দেখাতে সক্ষম হবেন।

দ্বিতীয়ত: শব্দ, বাক্য পদ্ধতি পার হয়ে ইংরেজীকে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে গণ্য করে পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষাক্রম রচিত হওয়ায় এতে ‘প্রশ্নোত্তর’ ও ‘কমপ্রিহেনসন’ শেখানো হয়েছে। আমরা জানি- ভাষা হচ্ছে ব্যবহারিক শিক্ষা। এটিকে আমরা দৈনিক ব্যবহার করলেই ওই ‘প্রশ্নোত্তর’ ভিত্তিক শিক্ষাটা কেবল মাত্র সচল থাকবে। ব্যবহার বন্ধ থাকলে ভাষা মারা যায়। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ- আমরা কৈশোরে যে উর্দু, আরবী না বুঝে পড়তে শিখেছিলাম, সেসব ভাষা দীর্ঘদিন অ-ব্যবহারের ফলে আমরা প্রায় ভুলে গিয়েছি।

আবার টেলিভিশনে অনেক মা-খালাদের প্রিয় হিন্দী সিরিয়াল শিশুরাও তাঁদের সঙ্গে দেখে হিন্দী বলাটা অনেকটা শিখে নিয়েছে। টিভির কার্টুন চরিত্রের ডিজনি সিরিজ দেখে দেখে তেমনি মধ্যবিত্ত, ধনী ঘরের শিশুরা টম এ্যান্ড জেরিতে ব্যবহৃত ইংরেজী ভাষার কথোপকথন, কাহিনী শুনে বুঝতে পারে, বলতেও শেখে। কিন্তু, প্রাথমিক শিক্ষার ভাষা পড়া ও লিখতে পারা, মনের ভাব নিজের ভাষায় প্রকাশ করতে পারাটা হলো পরবর্তী সব শিক্ষার ভিত। সুতরাং পড়া, পড়ে বোঝা এবং নিজের মতো শুদ্ধ বাংলা ও ইংরেজীতে লিখতে পারার ওপর গুণগত মান অনেকটা নির্ভর করে। এর পাশে গণিতের দক্ষতা ও যোগ্যতাগুলো ভালভাবে রপ্ত করা, প্রশ্নের গাণিতিক সমস্যা, জ্যামিতি, বীজগণিত যা গণিতের ভিত, সেসবও মানসম্মতভাবে শেখা খুব প্রয়োজন।

এখন দেখা যাচ্ছে- মাধ্যমিক স্কুলে বাংলা ও ইংরেজী ভাষায় আগে যে প্যারাগ্রাফ অনুবাদ করতে দেয়া হতো, সেটি ছিল বাংলা ও ইংরেজী শেখার বড় একটি সহায়ক শিক্ষামূলক কাজ। অর্থাৎ, বাংলা প্যারাগ্রাফকে ইংরেজীতে ও ইংরেজী প্যারাগ্রাফকে বাংলায় অনুবাদ করতে করতে শিক্ষার্থী ওই ভাষা দুটোর ব্যাকরণ, সময় ঘটিত কাজের অতীত, সাম্প্রতিক অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য প্রযোজ্য শব্দগুলো আয়ত্ত করে ফেলে। এভাবে একসঙ্গে শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজী দুটো ভাষাই মোটামুটি শুদ্ধভাবে লিখতে শেখে যে দক্ষতা ব্যবহার করে সে চিঠি ও রচনা লেখা শুদ্ধ ভাষায় লিখতে শেখে। ‘কমপ্রিহেনসন’ যারা ইংরেজী ভাল শিখেছে তারাই ভালভাবে সঠিক উত্তরটি দিতে পারে। তাছাড়া, ‘কমপ্রিহেনসন’ তো ভাষাটি লিখতে সাহায্য করে না। কারণ এখানে দেয়া ক, খ, গ, ঘ এই চারটি উত্তর থেকে শিক্ষার্থী যে কোন একটিতে শুধুমাত্র টিকচিহ্ন দেবে, কিছু লিখবে না। ভাষা শেখার, ভালভাবে শেখার আরও একটি ভাল উপায় হচ্ছে- গল্পের বই পড়া ও খবরের কাগজের অন্তত প্রথম পাতাটি নিয়মিত পড়া। খবরের কাগজ থেকে কোন একটি খবর ক্লাসে পড়ে শিক্ষক শোনালে এবং এরপর প্রশ্ন করে উত্তর নিলে শিক্ষার্থীরা শুনে বোঝা, উপলব্ধি করা ও বিষয়টি আত্মস্থ করে উত্তর দিতে শিখবে। এছাড়াও শ্রুতি লিখন, শুনলে প্রাচীন মনে হবে, কিন্তু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষা শিক্ষার মাধ্যম। তেমনি, শ্রেণীতে রিডিং পড়া ও ভাষা শিখতে খুবই সহায়ক।

মোদ্দা কথা হলো- আমাদের দরিদ্র ও নিরক্ষর বা অল্প শিক্ষিতের লাখ লাখ শিশুকে এ যুগের উপযোগী বাংলা-ইংরেজী ভাষা ও গণিত ভালভাবে শেখানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যা কথোপকথন বা ডায়ালগ-ভিত্তিক পাঠ্যবই দিয়ে শেখানো সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু সম্ভব করতে হবে। ইন্টারনেটে, অনলাইনে অনেক ভাল মানের শিক্ষাপ্রাপ্ত তরুণ ইংরেজী, গণিতসহ নানা বিজ্ঞানের বিষয় শেখাচ্ছে। জানতে পারছি এতে অনেকে উপকৃত হচ্ছে।

পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েটদের সরকার এক বছরের জন্য একটি কাজ দিতে পারে সম্মানী দিয়ে। তাদের মধ্যে ইচ্ছুক তরুণ-তরুণীরা অনেকটা ইন্টার্নের মতো এক বছর কোন একটি পিটিআই, ট্রেনিং কলেজে ইংরেজী, বাংলা, গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিজ্ঞানের ওপর প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবে। এর সুফল হতে পারে বিস্ময়কর। ফলে সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের গুণগত মান যে উন্নত হবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। এর পাশে, আগের শিক্ষক প্রশিক্ষণের ক্লাস্টার ট্রেনিং, পাঁচ-ছয়টি স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে প্রতি বৃহস্পতিবার বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা একটি কার্যকর ব্যবস্থা হবে। ই. ঊফ, গ. ঊফ প্রশিক্ষণকে উন্নত করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন করা সম্ভব।

সম্প্রতি ড. মনজুর যে প্রস্তাব করেছেন তা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।

১. কলেজগুলোতে ডিগ্রী কোর্সে শিক্ষাবিজ্ঞান নামে একটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যাতে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়ে শিক্ষকতার দিকে অগ্রসর হবে বা শিক্ষকতার জন্য প্রস্তুত হবে। তাদের জন্য থাকতে পারে বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা।

২. আকর্ষণীয় বেতন ভাতা, মর্যাদা ও পেশাগত উত্তরণের পথসহ ‘শিক্ষা উন্নয়ন কর্মী বাহিনী’ চালু করা যেতে পারে। শিক্ষা বিজ্ঞান নিয়ে পাস করা শিক্ষার্থীরা এ বাহিনীর সদস্য হবে, যারা শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করবে।

৩. শিক্ষকদের কর্মজীবন বদ্ধ করে রাখা ঠিক হবে না। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রথম শিক্ষক সহকারী হিসেবে পেশায় প্রবেশ করেন। এরপর তাদের কর্মজীবনে অনেক ধাপ ধাকতে পারে যেমন- শিক্ষক, বিশেষ শিক্ষক, বিভাগ প্রধান, সহ প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, পিটিআই এর শিক্ষক, ট্রেনিং কলেজের শিক্ষক, অধ্যক্ষ ইত্যাদি। প্রতিটি ধাপ হতে পারে পেশাগত মূল্যায়ন, স্বীকৃতি ও ভিন্ন ভিন্ন পারিতোষিক এর ভিত্তিতে।

প্রকৃতপক্ষে দরিদ্র ও অল্প শিক্ষিতের সন্তানদের গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে জাতি ও দেশের উন্নয়ন প্রায় অসম্ভব থেকে যাবে। এজন্য সরকারের একটি ক্র্যাশ প্রোগ্রাম গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।

লেখক :  শিক্ষাবিদ

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030410289764404