মাসের পর মাস স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন তোলেন প্রধান শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

মাসের পর মাস স্কুলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন তোলেন প্রধান শিক্ষক

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি |

মণিরামপুরের জোঁকা কোমলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবির উজ্জামান অধিকাংশ সময়ই মেডিক্যাল ছুটিতে থাকেন! মাসের পর মাস কর্মস্থলে না গিয়েই শুধুই বেতন-ভাতা উত্তোলন করে ভোগ করেন। গতকাল মঙ্গলবার কর্মস্থলে গেলে ক্ষুদ্ধ জনতার মুখোমুখি হন তিনি। এক পর্যায়ে করোজরে ক্ষমা প্রার্থনা করলে ক্ষুদ্ধ জনতা তাকে এবারের মতো মাফ করে দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক নবির উজ্জামান বিদ্যালয়ে আসেন না মাসের পর মাস। মন চাইলে কখনো ঘুরতে যান সেখানে। এ অবস্থায় শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী এ বিদ্যালয় থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করছেন। 

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক নবির উজ্জামান বিদ্যালয়ে পৌঁছালে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদ, সুধীমহল ছাড়াও এলাকার অভিভাবকরা মারমুখী অবস্থান নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রধান শিক্ষক নবির উজ্জামান পরিচালনা পরিষদের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চান। পরে ক্ষুদ্ধ জনতাকে শান্ত করেন পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আব্দুল গফুরসহ এলাকার সুধীজনরা। 

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য জামশেদ আলী, ব্যাংকার আবুল কাশেম, ব্লক সুপার ভাইজার মফিজুর রহমান, বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য লুৎফর রহমান, শিমুল আক্তারসহ অর্ধশত এলাকাবাসী বিদ্যালয় যান প্রধান শিক্ষক নবির উজ্জামানকে কৈফিত নিতে। 
 
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়মিত থাকায় অন্য শিক্ষকরাও পাঠদানে গাফিলতি করে থাকেন। ফলে সেখানে শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় এলাকার সচেতন অভিভাবকরা তাদের শিশুদের পাশ্ববর্তী বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি করিয়েছেন। 


 
বিষয়টি নিশ্চিত করে সভাপতি আব্দুল গফুর দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং স্বেচ্ছাচারিতার ফলে ধ্বংসের পথে বিদ্যালয়টি। প্রায় পনে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ছিল এ বিদ্যালয়ে। বর্তমানে লেখাপড়া না হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী চলে গেছে অন্য বিদ্যালয়ে। বর্তমানে ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রধান শিক্ষকের প্রতি ক্ষুদ্ধ হন এলাকার জনগণ। 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘নবির উজ্জামান একদিনে এ পর্যায়ে আসেননি। তাকে রাজনৈতিক নেতারা ব্যবহার করে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।’ 

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক নবির উজ্জামানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

প্রধান শিক্ষক নবির উজ্জামানের বাড়ি মণিরামপুরের খানপুর গ্রামে। 

প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা অফিসার নাজমুল হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তার এসব অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তিনি মাসের পর মাস মেডিক্যাল ছুটি নিয়ে চলেন। যে কারণে অনেক কিছু করণীয় থাকলেও আইনগতভাবে কিছুই করার সম্ভব হয়ে উঠে না।
 
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সোহেলী ফেরদৌস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মঙ্গলবারের বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক নবির উজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যে বিষয়টি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।

স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ - dainik shiksha ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত - dainik shiksha টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.004533052444458