মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অবৈধ ২৪ কোটি টাকা, দুদকের মামলা - দৈনিকশিক্ষা

মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অবৈধ ২৪ কোটি টাকা, দুদকের মামলা

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : ২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রাজধানীর ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অ্যাকাউন্টেন্টের মো. আকরাম মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার বিকেলে এ মামলাটি রুজু করা হয়। একই দিনে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক শরিকা ইসলাম এ মামলার এজহার দায়ের করেছিলেন।

জিপিএ ফাইভ কিনে এবং ঢাকা শিক্ষাবোর্ডকে ম্যানেজ করে পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফল দেখানোয় অভিযুক্ত ডেমরার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ।

দুদকের এজহারে বলা হয়েছে, আকরাম মিয়া ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে যোগ দেন। তিনি ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বেতন হিসেবে আয় করেছেন। কিন্তু বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের মাতুয়াইল শাখায় পাঁচটি এফডিআর হিসেবে তার নামে গচ্ছিত আছে ২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এ টাকা তার বৈধ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হলে তিনি দাবি করেন এ টাকা মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের। আকরাম মিয়ার নামে কলেজের কোনো টাকা জমা আছে কি-না জানতে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রথম বার গত ২২ মে ও দ্বিতীয়বার ৬ জুন নোটিশ পাঠানো হলো কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্য বা রেকর্ড প্রদান করতে পারেনি।

জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা অনুযায়ী এজহারটি রুজু করা হয়েছে। 

আকরাম মিয়ার বেসিক ব্যাংকের মাতুয়াইল শাখার অ্যাকাউন্টে ২৪ কোটি ২৯ লাখ টাকার সন্ধান পেয়ে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি সে অ্যাকাউন্টটি ফ্রিজ করার সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। কমিশনের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের অনুমতি চেয়ে সে বছরের ১৬ আগস্ট চিঠি দিয়েছিলেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা শারিকা ইসলাম। 

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের হিসাবরক্ষক আকরাম মিয়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওই টাকার কথা স্বীকার করলেও তার মালিক নিজে নন বলে জানান। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মাহবুবুর রহমানের নির্দেশে ওই টাকা তার হিসাবে রাখা হয়েছে বলেও এমন দাবি করেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, কলেজ ড্রেসের কাপড় বিক্রিসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন আয়ের টাকা আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মাহবুবুর রহমান স্যার ওই টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবেন, তাই আমার অ্যাকাউন্টে রেখেছেন।

প্রতিষ্ঠানে টাকা কেনো তার অ্যাকাউন্টে-এমন প্রশ্নের জবাবে আকরাম বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা একেকজন একেক মনা। তাদের নামে টাকাটা যদি রাখা হতো তাহলে হয়তো ওই টাকার অপব্যবহার বা তসরুপ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন হয়তো মাহবুবুর রহমান স্যারের পূরণ হতো না। সে কারণে স্যার আমার অ্যাকাউন্টে টাকাটা রেখেছেন। তিনি দাবি করেছিলেন, আসলে আমি তো ওভাবে বুঝিনি। ব্যাংক ম্যানেজার আমাকে সই দিতে বলেছেন, আমি সই দিয়েছি। অ্যাকাউন্টের নমিনি কে, সেটাও আমার জানা নেই। তাছাড়া টাকাটা সম্পূর্ণ বৈধ বলেই জানি।

তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা ওই টাকার কথা অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেছিলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।  

এদিকে আকরাম মিয়া ও প্রতিষ্ঠাতা কারো বক্তব্যই যৌক্তিক নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিযোগ, কলেজের প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের হাত ঘুরে ওই টাকা আকরাম মিয়ার হিসাবে স্থানান্তরিত হয়েছে।

জানা গেছে, মাহবুবুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে জামাতপন্থী শিক্ষা সাংবাদিকদের সঙ্গে সখ্য এবং নগদ টাকা দেয়ার অভিযোগ পুরনো। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিএনপির কেন্দ্রীয় গণশিক্ষা সম্পাদক বরখাস্ত অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভুইয়ার বাবার নামেও একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha দেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা: প্রধানমন্ত্রী দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : আরেফিন সিদ্দিক - dainik shiksha দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : আরেফিন সিদ্দিক এইচএসসির উত্তরপত্র জমা নিচ্ছে না বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসির উত্তরপত্র জমা নিচ্ছে না বোর্ড কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় এতো ফেল! - dainik shiksha কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় এতো ফেল! বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে: ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ - dainik shiksha বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে: ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ - dainik shiksha ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056002140045166