এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা না পেছানোর দাবি জানিয়েছেন ভর্তিচ্ছুক হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক। দাবিতে তারা স্মারকলিপি দিয়েছেন। আগামী ৪ অক্টোবর মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরে দুর্গাপূজার কারণে সেই পরীক্ষা পিছিয়ে এখন ১১ অক্টোবর নেয়ার কথা আলোচনায় রয়েছে।
তবে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেছেন, প্রথমে বুয়েটে ৫ অক্টোবর এবং মেডিকেলে ৪ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার তারিখ ঘোষণা করা হয়। পরপর দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভর্তি পরীক্ষা পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এরপর বুয়েট কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করে ১৪ অক্টোবর নির্ধারণ করে। কিন্তু দুর্গাপূজার জন্য এখন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা ৪ অক্টোবর থেকে পিছিয়ে ১১ অক্টোবর নেয়ার কথা জানা গেছে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা না পেছানোর দাবি জানিয়ে অভিভাবকরা বলেন, আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী। অন্যান্য সবার মতো আমরাও দুর্গাপূজা করি। পরীক্ষা পেছানোর জন্য দুর্গাপূজার কারণ দেখানো হয়েছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পূজা শুরু হবে মূলত ৫ অক্টোবর থেকে এবং চলবে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে আমাদের সন্তানেরা ৪ অক্টোবর পরীক্ষা দিতে পারলেই বরং মনের আনন্দে পূজা করতে পারতো এবং সেই সাথে আমরা অভিভাবকরাও নিশ্চিন্ত হতে পারতাম। বিজয়া দশমীর দু’দিন পরই যেখানে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঝুলছে, সে পরিস্থিতিতে তাদেরকে পূজার আনন্দই বা কতটুকু স্পর্শ করবে আর ধর্মীয় রীতিনীতিই বা কতটুকু পালন করতে পারবে? কেননা, এই সময় বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান পালন করতে হয়; আর হৈ-হুল্লোর, গান-বাজনা অনবরত চলতে থাকে। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি আসা-যাওয়া করতে থাকে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় চান্স পাওয়া এমনিতেই অনেক কঠিন ব্যাপার। এক্ষেত্রে পূর্ব প্রস্তুতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে যাবে।
কল্যাণ সাহা নামের একজন অভিভাবক বলেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা ১১ অক্টোবর নেয়া হলে আবারো বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার পাশাপাশি দুটো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দিতে হবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা আবারও সংকটে পড়বে। ১২ অক্টোবর চুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় ১১ অক্টোবর মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা থাকলে সেই পরীক্ষা দিয়েই চুয়েট এর ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছুটতে হবে শিক্ষার্থীদের। আবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এসে ১৪ অক্টোবর বুয়েট এর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের উপর চরম মানসিক এবং শারিরিক চাপ পড়বে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষায় অংশ নেয়া সম্ভব হবে না।
তাছাড়া ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তিত হলে শিক্ষার্থীদের উপর মানসিক চাপ পড়ে জানিয়ে অভিভাবকরা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা পূর্ব নির্ধারিত ৪ অক্টোবর বহাল রাখার বিশেষ অনুরোধ করেছেন সরকারকে। স্বাস্থ্য অধিদপরের একজন পরিচালকের কাছে তারা স্মারকলিপি দিয়েছেন। তিনি বিষয়টি বড় কর্তাদের জানাবেন বলে জানান উদ্বিগ্ন এই অভিভাবক।