শুধু মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়ে ৮০০ টাকা ফি নিচ্ছেন মহিলা চিকিৎসক। এই কঠিন সময়ে ডাক্তারের সেবার এমন নমুনায় হতাশ ভুক্তভোগীরা। করোনার কারণে মানুষ প্রাণভয়ে তটস্থ, অন্যদিকে আর্থিক সঙ্কটে পড়ায় বেশিরভাগ মানুষই এখন দিশেহারা। এই ভয়াল পরিস্থিতিতেও রীতিমতো রোগীর কাছ থেকে অস্বাভাবিক ফি নিচ্ছেন সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপিকা এবং প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নাদিরা বেগম। সরাসরি রোগী না দেখে শুধু মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়ে ৮০০ টাকা ফি আদায় করছেন তিনি। সরাসরি চেকআপ না করে এমনভাবে ফোনের মাধ্যমে রোগীকে পরামর্শ দিয়ে বড় অঙ্কের ফি নেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত ও মানবিক এ প্রশ্ন সচেতন মহলের।
জানা গেছে, সিলেটের মেজরটিলা এলাকার বাসিন্দা খালেদ শাহ তার স্ত্রীকে গত কয়েকমাস থেকে নির্ধারিত ফি দিয়ে ডাক্তার নাদিরা বেগমের কাছে নিয়মিত চেকআপ করান এবং তার কাছ থেকে স্বাস্থ্যপরামর্শ নেন। ২০ এপ্রিল তার স্ত্রীর স্বাস্থ্যপরামর্শের প্রয়োজন পড়লে তিনি ডাক্তার নাদিরা বেগমের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করেন। এ সময় ডাক্তার নাদিরা তাকে বলেন, ‘আমার সহকারীর মোবাইল ফোনে কল দিয়ে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যান এবং পরে আমার মোবাইল ফোনে কল দেন, তখন আমি আপনার স্ত্রীকে পরামর্শ দিব।’
পরে খালেদ শাহ ডাক্তার নাদিরার সহকারীর মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি একটি বিকাশ নাম্বার দিয়ে বলেন- ‘ওই নাম্বারে ৮২০ টাকা বিকাশ করার পরেই কেবল কল করে ম্যাডামের পরামর্শ নিতে পারবেন।’
এ বিষয়ে খালেদ শাহ বলেন, নাদিরা ম্যাডামকে আমি ওয়েসিস হাসপাতালে যতবার দেখিয়েছি তিনি ফি বাবদ ৭০০ টাকা রাখতেন। অথচ বর্তমান করোনার কঠিন সময়ে তিনি ফি-তো বাড়িয়েছেনই, শুধুমাত্র ফোনে পরামর্শ দেয়ার কারণে নিতে চাচ্ছেন ৮০০ টাকা। নাদিরা ম্যাডামের এমন অমানবিক আচরণ আমাকে মর্মাহত করেছে এবং আমি আর পরবর্তী সময়ে টাকা বিকাশ করিনি, তার পরামর্শও নেইনি।’
এ বিষয়ে জানতে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নাদিরা বেগমের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি ৮২০ টাকার বিনিময়ে মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্যপরামর্শ দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি যথেষ্ট সময় নিয়ে রোগীর সঙ্গে কথা বলি এবং প্রয়োজনে তাকে ভিডিও কলে পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেই। করোনা পরিস্থিতিতে রোগী সমাগম করা যাবে না তাই আমি এমনটি করছি এবং এটি আমার কাছে সঠিকই মনে হচ্ছে।